শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

শসা সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। এটিতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকলেও পানির পরিমাণ অনেক বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম খোসা সহ একটি কাঁচা শসার ক্যালরির পরিমাণ হচ্ছে ২০ কিলো ক্যালরি। আমরা শসা প্রধানত সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকি। তবে অনেকেই জানিনা শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই ব্লক পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করেছি শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-

সূচিপত্রঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

শসা খাওয়ার সঠিক সময়

শসা খেতে অপছন্দ করেন এমন মানুষ নেই বললেই চলে। আমরা সকলেই শসা খেয়ে থাকি বেশিরভাগ এটি খায় সালাত হিসেবে এ ছাড়াও এমনি ও খেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই জানিনা শসা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে।
 
শসা খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকালে অথবা দুপুরে খাবার সময়। এই দুইটি সময় শসা খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে রাতে শসা খাওয়া উচিত নয়। রাতে শসা খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন-
  • হজমে সমস্যা হওয়া।
  • পেট ভার হয়ে থাকার ফলে ঘুমে সমস্যা হওয়া।
যাদের হজম শক্তি দুর্বল তাদেরকে রাতে শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। সে ক্ষেত্রে খাওয়ার উত্তম সময় হলো সকালে অথবা দুপুরের খাবার খাওয়ার সময়।

শসা খাওয়ার উপকারিতা

শসা অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। শসাই রয়েছে ভিটামিন বি, প্রোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফাইবার, রাইবোফ্লাবিন, গ্লুকোজ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আরো বিভিন্ন ধরনের খনিজ দ্রব্য। 

এছাড়াও রয়েছে পানি। শসার যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমন শসা খাওয়ার অনেক উপকারিতা ও রয়েছে। নিচে খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো-
  • শসা তে অবস্থিত ফাইভার আমাদের শরীরে ফাইবার এবং পানির পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
  • শসাতে থাকা পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
  • খালি পেটে শসা খেলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • আমরা সকলেই জানি শসা শরীরের জন্য কতটা ভালো একটি খাবার। খালি পেটে শসা খাওয়া এটি শরীরের ওজন কমাতে বেশ কার্যকরী।
  • শসা রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
  • শসা ফাইবার এবং পানিতে ভরপুর। শশা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম গ্যাস ইত্যাদি হজম সংক্রান্ত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • প্রতিদিন খালি পেটে শসা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • শসাতে অবস্থিত ভিটামিন এ। চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
  • শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে শসা খেলে সারাদিনে শরীরের পানির ঘাটতি হয় না।
  • শসা তে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে শসা অনেক কার্যকরী।
  • শসাতে পানি অনেকটাই বেশি পরিমাণে থাকে। এটি আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তাই অনেকেই ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে শসা ব্যবহার করে থাকেন।
  • শসা আমাদের কিডনি, লিভার ও প্যানক্রিয়াসের ইত্যাদি সমস্যা রোধে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে।

ওজন কমাতে শসার উপকারিতা

ওজন কমাতে শসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া। শসা এমন একটি খাবার যেটিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেকেই শসা কে প্রথম বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছে। তবে শসা খেয়েই যে ওজন কমিয়ে ফেলা যায় এটি একদম ভুল ধারণা। 

কারণ দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে শুধুমাত্র শসা খেয়ে থাকলে ওজন কমলেও এটি শরীরে বিভিন্ন রকম সমস্যা তৈরি করবে। কারণ শসাতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম থাকে দীর্ঘদিন শসা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ অনেক এবং কমে যাবে শরীরের শক্তি হ্রাস পাবে।
তাই ওজন কমাতে চাইলে একটি আদর্শ খাবার তালিকা তৈরি করুন এবং সে তালিকায় শসা যোগ করুন। শসা খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে খেতে পারেন। এতে শরীরের ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে যা ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকরী।

চোখে শসা দিলে কি হয়

শসাকে ফের যত্নে অন্যতম কার্যকর উপাদান হিসেবে মনে করা হয়। শসা চোখের শুষ্ক ভাব দূর করে, চোখ সতেজ রাখে। চলুন জেনে নি চোখে শসা দিলে কি হয়-
  • শসাকে বলা হয় প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। চোখের চারপাশের চামড়ার ওপর শসা দিয়ে রাখলে এই ত্বকের আদ্রতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এটি চোখের চারপাশের ত্বক কুঁচকে যাওয়া এবং বলিরেখা দূর করে।
  • শসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সহায়তা করে। শসা গোল করে পাতলা ভাবে কেটে চোখের উপর দিয়ে রাখলে এতে চোখের চারপাশের কালো দাগ আস্তে আস্তে হালকা করে।
  • চোখে শসা ব্যবহার করলে এটি চোখের নিচের চামড়া ঝুলে পড়া ঠেকাতে সহায়তা করে।
  • শসাতে অবস্থিত অ্যাসকরবিক এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড চোখের চারপাশের খোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।

শসা খাওয়ার অপকারিতা

আমরা উক্ত পোস্টের মাধ্যমে জেনেছি শসার পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তবে কোন জিনিস অতিরিক্ত খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ভালো জিনিসও আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। শসা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

অতিরিক্ত শসা খাওয়া পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে-
আমরা সকলেই জানি শসা কতটা উপকারী। এটি পেটের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। কিন্তু কেউ যদি অতিরিক্ত পরিমাণে শসা বা শসার সালাদ খেয়ে থাকে সেক্ষেত্রে তার পেটে ব্যথা, বদহজম, পেট ফাঁপার মত একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে যে কোন খাবার অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণমতো খাওয়া উচিত।

অতিরিক্ত শসা খাওয়া শরীরে টক্সিন জমার কারণ হতে পারে-
শসায় রয়েছে দুইটি টক্সিন যেগুলো হচ্ছে কিউকারবিটাসিনস এবং টেরাসাইক্লিক টাইটেরপেনয়ডন। যদিও পরিমাণ মতো শসা খেলে এই টক্সিন আমাদের শরীরে কোন খারাপ প্রভাব সৃষ্টি করে না তবে অতিরিক্ত পরিমাণ শসা খেলে এই টক্সিন গুলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

অতিরিক্ত শসা খাওয়ার ফলে বারবার প্রস্রাব হতে পারে-
শসায় কিউকারবিটিন নামক উপাদান রয়েছে এটি আমাদের শরীরে প্রস্রাবের মাত্রা বৃদ্ধি করে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে শসা খাওয়া বারবার প্রস্রাবের কারণ হতে পারে।

শেষ কথা- এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আমরা এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url