খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনি কি খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। তবে আপনি
একদম সঠিক পোস্টে ক্লিক করেছেন। এ পোষ্টে আমরা খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। খালি পেটে করলা জুস খাওয়ার উপকারিতা
ও করলার জুসের অপকারিতা সম্পর্কে জানতে আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নিই খালি পেটে করলা জুস খাওয়ার উপকারিতা এবং এর অপকারিতা
এছাড়াও করোলার জুস সম্পর্কিত নানা বিষয়াদি সম্পর্কে।
সূচিপত্রঃ খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ভূমিকা
করলা তেতো সাধযুক্ত হয়ে থাকে। তবে করলা তেতো হলেও এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।
করলায় রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট,
নিয়াসিন, খাদ্য আশ, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,
আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও প্যান্টোথেনিক এসিড। করলাতে রয়েছে বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা। জন্ডিস, চর্মরোগ, লিভার ইত্যাদির রোগের ক্ষেত্রে করলা
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
করলা কিভাবে ব্যবহার করবেন
করলা অনেকে অনেক ভাবে ব্যবহার করে থাকে। কেউ এটিকে তরকারি হিসেবে খেয়ে থাকে আবার
কেউ কেউ করলার জুস শরীরের মেদ কমাতে খেয়ে থাকেন। করলা অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন
একটি সবজি। করলার উপকারিকা বলে শেষ করা যাবে না। করলার কিছু সাধারণ ব্যবহার
আপনাদের জন্য নিচে উপস্থাপন করা হলো-
- করলা রান্না করে খেতে পারেন।
- আমাদের অনেকেরই ত্বকে ব্রণ এর সমস্যা দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে করলার পাউডার ত্বকে লাগাতে পারেন। এটি ব্রণ রোধে বেশ কার্যকরী।
- অতিরিক্ত জ্বর হলে করলার মূল পেস্ট করে গায়ে লাগাতে পারেন।
- অনেকেরই ত্বক একটুতেই ঘেমে যাওয়ার সমস্যা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে করলার শুকনো মূলের পাউডার ত্বকে লাগাতে পারেন। এটি ত্বক উজ্জ্বল, নরম করবে এবং ঘাম কমাতে সাহায্য করবে।
- রক্ত পরিশুদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে করলার জুস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই রক্ত পরিশুদ্ধ রাখতে করলার জুস খেতে পারেন।
- করলার পাশাপাশি এর বীজ অনেক উপকারী। ভুনা করলার বীজের গুরা একজিমা প্রতিরোধ করতে ব্যবহার করতে পারেন।
করলার জুস বানানোর নিয়ম
অনেকেই করোলার পুষ্টিগুণ জেনে করলার জুস খেতে চান তবে করলা অনেক তিতা হওয়ার ফলে
অনেকে খেতে চেয়েও খান না। প্রিয় পাঠক আজকে তিতা মুক্ত করলার জুস বানানোর নিয়ম
আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো যা খুব সহজেই আপনারা বাসায় বানিয়ে খেতে পারবেন চলুন
তাহলে করলার জুস বানানোর নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
করলার জুস বানানোর জন্য একটি করোলা ভালোভাবে ধুয়ে নিন। তারপর একটি পিলার বা ছুরি
দিয়ে করলার ওপরের সবুজ অংশগুলি নিয়ে নিন। করলার ওপরের সবুজ অংশগুলো একটি বাটিতে
নিয়ে নিন। তারপর দুইটি কাঁচা মরিচ কুচি, একটি লেবুর রস এবং কিছু ধনেপাতা কুচি
করে কেটে নিন। এরপর করলার সবুজ অংশগুলি একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে নিন।
তারপর এতে লেবুর রস, মরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি এবং এর সাথে কিছু পরিমাণে মালটার
জুস দিয়ে নিন। মাল্টার জুস এবং লেবুর রস করলার তিতা ভাব অনেকটাই কমিয়ে দেবে।
তারপর এতে সামান্য পরিমাণ বিট লবণ এবং পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড
করে নিন। তৈরি হয়ে গেল তিতা মুক্ত করলার জুস। এভাবে খুব সহজেই আপনারা বাড়িতে
করলার জুস বানিয়ে খেতে পারেন।
করলার জুস কখন খেতে হয়
করলা অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি সবজি। এটির মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। যারা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে করলা বেশ
কার্যকরী। সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক রোগীকে চিকিৎসকেরাই করলা খাওয়ার পরামর্শ
দিয়ে থাকেন। কেবলমাত্র রোগীই নয় যে কেউই করলা বা করলার জুস খেতে পারেন। করলার
জুস সকালে খালি পেটে খাওয়া ভালো।
খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা অনেক। যারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে করলার
জুস খেয়ে থাকেন তারা এটি থেকে অনেক উপকার পেতে পারেন। করলার জুস রক্ত পরিষ্কার
রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা গুলো
নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- করলার জুস ব্লাড পিউরিফায়িং এর কাজ করে থাকে অর্থাৎ রক্ত পরিশুদ্ধ রাখতে সহায়তা করে।
- দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে
- করলার জুস চুল ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকরী
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলার জুস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- করলায় উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- পেটের গুড়ো কৃমি দূর করতে সহায়তা করে।
- পাইলসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
করলার জুসের অপকারিতা
করলা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী তা আমরা সকলেই জানি।করলায় উপস্থিত নানা
পুষ্টিগুণ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। করলা আমরা নানা ভাবে খেয়ে
থাকি। তরকারি হিসেবে এছাড়াও করলার জুস বানিয়ে খেতে পারি।
করলা বা করলার জুস খাওয়ার যেমন উপকার রয়েছে তেমন এর কিছু অপকারীতাও রয়েছে। করলা
স্বাভাবিক মাত্রাই খেলে এটি আপনার কোন ক্ষতি করবে না। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় করলা
বা করলার জুস খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। অতিরিক্ত করলা বা করলার
জুস খাওয়ার উপকারিতা গুলো হলো-
- করলা আমাদের রক্তে শর্করা এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কম তাদের অতিরিক্ত করলা খাওয়া উচিত নয়। আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করলা খেতে পারেন।
- যাদের এলার্জির সমস্যা ররেছে করলা খেলে তাদের এলার্জি হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করোলা খাওয়া উত্তম।
- করলার মূলে প্রজননরোধী এবং শুক্রাণু নাশক কিছু উপাদান রয়েছে।
অতিরিক্ত মাত্রায় কোন কিছু খাওয়াই উচিত নয়। সুস্থ থাকতে সুসম খাদ্য খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুস্থ থাকতে কোন কিচ্ছু অতিরিক্ত মাত্রায় না খেয়ে প্রয়োজন মত
স্বাভাবিক মাত্রায় খাওয়া ভালো।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করলাম খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার
উপকারিতা, করলার জুস বানানোর নিয়ম, করলার জুসের অপকারিতা ইত্যাদি বিষয়াদি। আশা
করি উক্ত পোষ্টের মাধ্যমে খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সহ করলা সম্পর্কে
আরো নানা তথ্য জানতে পেরেছেন। এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো
করুন।
আরও পড়ুনঃ মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার উপকারিতা
আমরা এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে আপনাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন
এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url