টিউমার ভালো করার উপায় - কি খেলে টিউমার ভালো হয়
টিউমার রোগ সম্পর্কে আমরা কম-বেশি সকলেই জানি। টিউমার ভালো করার উপায় সম্পর্কেও
আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। টিউমার ভালো করার উপায় বা কি খেলে টিউমার ভালো হয়
এছাড়াও নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ
পড়ুন।
টিউমার মারাত্মক রোগ ধারণ করার আগেই সেটাকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রিয় পাঠক চলুন
টিউমার ভালো করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ টিউমার ভালো করার উপায় - কি খেলে টিউমার ভালো হয়
ভূমিকাঃ টিউমার কেন হয়
অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধির ফলে টিউমার সৃষ্টি হয়। শরীরের ওপর রাসায়নিক প্রভাবের
ফলে জেনেটিক মিউটেশনের জন্যও টিউমার দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে
গেলেও শরীরের বিভিন্ন অংশে টিউমার দেখা দিতে পারে। সব টিউমারই ক্ষতিকারক হয়না।
টিউমার সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে-
- বিনাইন টিউমার যা একটি অক্ষতিকারক টিউমার।
- ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যাকে ক্যান্সারও বলা যেতে পারে।
টিউমার ভালো করার উপায়
টিউমার ছোট থেকে আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। যখন এটি ব্যাপক আকার ধারণ করে তখন
চিকিৎসকের চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে কেননা টিউমার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে
গেলে হয় সেটাকে অপারেশন করতে হবে অথবা কেমোথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। তবে এই
চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার প্রাকৃতিক উপায়
সেক্ষেত্রে টিউমার ভালো করার উপায় অথবা টিউমার হওয়া থেকে বাঁচার উপায় জেনে
রাখা আমাদের সকলের ক্ষেত্রেই মঙ্গলজনক হবে।আমাদের নিত্যদিনের কিছু বদ অভ্যাস
ত্যাগ করা হতে পারে টিউমার ভালো করার কার্যকরী উপায়। নিচে টিউমার ভালো করার
উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
নিয়মিত পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করাঃ
নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত এবং পরিষ্কার খাদ্য খেলে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই
কমে যায়। কেননা টিউমারের মত নানা ধরনের রোগ হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে অধিক তেল
যুক্ত এবং অপরিষ্কার খাদ্য। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত সুষম খাদ্য
গ্রহণ করা। এটি টিউমার সহ অন্যান্য রোগ ভালো করার ঘরোয়া উপায়ও বলা যেতে পারে।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাঃ
যখন কোন মানুষের ওজন অতিরিক্ত হাড়ে বৃদ্ধি পাই তখন তার শরীরে কেউ মোর সহ আরো
বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। সে ক্ষেত্রে উচিত আমাদের ওজন সব সময়
নিয়ন্ত্রণে রাখা। ক্যালারি যুক্ত খাবার বেশি না খাওয়া। এছাড়াও শরীরকে সুস্থ
রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন। তাই আপনার শরীরকে টিউমার হাওয়া থেকে বাঁচাতে
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন।
তামাকজাত দ্রব্য খাওয়া থেকে বিরত থাকাঃ
তা আমাকে এবং তামাকজাদ দ্রব্য আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা আমরা সকলেই
জানি। শুধু টিউমার নয় অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও তামাকজাত দ্রব্য অনেক ক্ষতিকার।
তাই সম্পূর্ণভাবে তামাকজাত দ্রব্য খাওয়া থেকে বিরত থাকা টিউমার ও অন্যান্য রোগ
ভালো করার একটি ঘরোয়া উপায় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
বৈধ এবং নিরাপদ যৌন সম্পর্ক করাঃ
আমাদের দেহ ও মনের ওপর শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপক চাহিদা থাকতে পারে। তবে অবৈধ এবং
ও নিরাপদ যৌন সম্পর্ক আপনার টিউমারসহ অন্যান্য মারাত্মক রোগ সৃষ্টির কারণ হয়ে
দাঁড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিজেকে সুস্থ রাখতে বৈধ এবং নিরাপদ যৌন সম্পর্ক
নিশ্চিত করা উচিত।
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচাঃ
সূর্যের আলো আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করে। তবে অতিরিক্ত তাপমাত্রায়
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের শরীরের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। এটি আমাদের ত্বক সহ
শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি করে থাকে। বিশেষ করে যাদের টিউমার রয়েছে তাদের জন্য
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ব্যাপক ক্ষতিকর।তাই আমাদের উচিত যতটা সম্ভব সূর্যের
অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা।
কি খেলে টিউমার ভালো হয়
কি ব্যাপার ভালো করার উপায় সম্পর্কে জানতে আমাদের কে অবশ্যই জানতে হবে কি খেলে
টিউমার ভালো হয়। যেকোনো রোগের ক্ষেত্রেই খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কি
খেলে টিউমার ভালো হয় বা টিউমার রোগীদের কি কি খাবার খাওয়া উচিত এর সম্পর্কে
নিচে উল্লেখ করা হলো-
গাজরঃ গাজর এমন একটি সবজি যা
বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এটি বহুল রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে
থাকে। টিউমার ভালো করার ক্ষেত্রে গাজরের গুরুত্ব অপরিসীম।
ব্রকলিঃ কিছুটা ফুলকপির মত দেখতে
সবুজ রঙের সবজিটি অনেক পুষ্টিগুনে ভরপুর। এর অনেক উপকার। ব্রকলি টিউমার ভালো
করতেও সাহায্য করে। আমাদের সকলেরই উচিত খাবার তালিকায় ব্রকলি কে রাখা।
হলুদঃ হলুদ আমরা সাধারণত মসলা
হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। হলুদের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
হলুদে উপস্থিত এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টিউমার সহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের সহায়তা
করে।
বেলঃ বেল খুবই উপকারী একটি ফল।
আপনারা কি জানেন বেল টিউমার গলাতে কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কোষ্ঠকাঠিন্য
রোগের ক্ষেত্রেও বেলকে প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহার করা হয়। তাই টিউমার ভালো করতে
বেশি বেশি করে বেল খাওয়া উচিত।
টিউমার হলে কি খাওয়া নিষেধ
ইতিমধ্যেই আমরা জানতে পারলাম টিউমার হলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত বা কি খেলে
টিউমার ভালো হয়। তবে আপনি কি জানেন টিউমার হলে কোন কোন খাবার খাওয়া নিষেধ।যদি এ
বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে টিউমার হলে কি খাওয়া নিষেধের সম্পর্কে নিচে
বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাওয়ার খাওয়া যাবে নাঃ
আমরা অনেকে আছি যারা অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার খেতে পছন্দ করি। তবে এটি একবার
ভেবে দেখি না যেতে যুক্ত খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তাই টিউমার
হলে অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া যাবেনাঃ
প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক। তাই টিউমার হলে অবশ্যই
প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
সাদা আটা খাওয়া যাবে নাঃ
আমরা অনেকেই সাদা আটার রুটি খেয়ে থাকি তবে সাদা আটা দেখতে সুন্দর হলেও এটি মোটেও
স্বাস্থ্যকর নয়। সে ক্ষেত্রে সাদাটা না খেয়ে। বাজারে অথবা বিভিন্ন মুদির দোকান
থেকে কিছুটা লাল বর্ণের আটা কিনে খেতে পারেন।
চিনি খাওয়া যাবেনাঃ
কৃত্রিম ও প্রক্রিয়াজাত করা চিনি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। চিনি অথবা অতিরিক্ত চিনি
জাতীয় খাবার খেলে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই টিউমার হলে কখনোই
প্রক্রিয়াজাত করা চিনি খাওয়া উচিত নয়। এটি টিউমার রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
আচার খাওয়া যাবেনাঃ
আমরা অনেকেই বাড়িতে আচার সংরক্ষণ করে খেয়ে থাকি। বিশেষ করে মেয়েরা বেশি আচার
খেতে ভালোবাসে। আচার খেতে সুস্বাদু হলেও এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এটি টিউমার
রোগীদের ক্ষেত্রেও ক্ষতিকারক। তাই টিউমার হলে আচার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।
টিউমার ভালো করার দোয়া
আমরা যারা মুসলিম তারা সকলেই বিশ্বাস করি মানব জীবনের যেকোনো ধরনের সমস্যা হোক
সেটা বিভিন্ন রোগ অথবা যেকোনো সমস্যা আল্লাহ চাইলেই সমস্ত সমস্যা দূর করে দিতে
পারেন। নিচে এমন একটি দোয়া আপনাদের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে যা টিউমার সহ সমস্ত
রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে পাঠ করা যেতে পারে।
দোয়াটি হচ্ছে: আল্লাহুম্মা রব্বান-নাসি মুজহিবাল বা`সি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা
শাফি ইল্লা আনতা শিফায়ান লা যুগাদিরু সুকমা।
দোয়াটির বাংলা অর্থ হচ্ছে: হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে
আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী; আপনি ছাড়া কোন আরোগ্যকারী নেই।
এই দোয়াটি প্রতিদিন আমল করবেন। আশা করি যে কোন রোগ ভালো করায় দোয়াটি আপনার
অনেক উপকারে আসবে।
ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক লক্ষণ
ব্রেন টিউমার হচ্ছে এমন এক ধরনের টিউমার যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা প্রদান না করা
হয় তাহলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। আপনার যদি ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক
লক্ষণ গুলি জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার টিউমার হয়েছে
কিনা এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে পারবেন। নিচে ব্রেন টিউমারের প্রাথমিক
কিছু লক্ষণ সমূহ তুলে ধরা হলোঃ
- প্রচুর মাথা ব্যথা হওয়া এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাথা ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
- বিশেষ করে ভোরের দিকে মাথা ব্যথা বেশি হওয়া।
- ওষুধ খাওয়ার শর্তেও মাথাব্যথা না কমা ।
- কোন কাজ করার সময় বেশি নড়াচড়া করলে মাথায় ব্যথা অনুভব করা।
- মাথা ঘোরা।
- বমি হওয়া।
- দৃষ্টিশক্তি কমে গিয়ে সবকিছু ঝাপসা দেখা।
- শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া।
- মেজাজ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া।
- পেশীগত দুর্বলতা দেখা দেওয়া।
- খিচুনি হওয়া।
- শরীরের যেকোনো একদিকের হাত বা পা অবশ হয়ে যাওয়া।
- খাবার গিলতে সমস্যা মুখের দুর্বলতা।
- শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি পেতে পারে।
- ঘুম না হওয়া।
- কোন কিছু মনে করতে অসুবিধা হওয়া।
অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলেও আমাদের মাথা ব্যথা দেখা দিতে পারে তবে অতিরিক্ত মাথা
ব্যথা করলেই যে ব্রেন টিউমার হবে বিষয়টা এমন নয়। মাথা ব্যথা হলে মাথা ব্যথার
ওষুধ খাবেন। তারপরও যদি মাথাব্যথা না কমে অবশ্যই চিকিৎসকের চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।
ব্রেন টিউমার অপারেশন খরচ বাংলাদেশ
টিউমার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তার অপারেশন করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে
না। বিশেষ করে ব্রেন টিউমার। যা অনেক ভয়াবহ একটি রোগ। ব্রেন টিউমার অপারেশনের
খরচ সম্বন্ধে অনেকেই জানতে চান।
বাংলাদেশের সাধারণত ১,০০,০০০ থেকে ২,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে আপনার
নির্দিষ্ট অবস্থা এবং চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে অপারেশনের খরচ এর
থেকে কম বেশিও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার উচিত একজন যোগ্যতা সম্পন্ন সার্জনের
পরামর্শ গ্রহণ করা।
গলায় টিউমার ভালো করার উপায়
কেউ মার শরীরের যে কোন স্থানে হতে পারে তবে গলায় টিউমার হলে সেটা একটু বেশিই
ঝুঁকিপূর্ণ কারণ খুবই সেনসিটিভ জায়গা। গলায় টিউমার ভালো করার উপায় সম্পর্কে
জানতে আমাদের এই পোষ্টের ওপরের উল্লেখিত বিষয়গুলি ভালোভাবে অনুধাবন করুন।
কেননা টিউমার ভালো করার উপায় সবগুলোই প্রায় একই। তবে গলার ক্ষেত্রে এর সাথে
কিছু বাড়তি বিষয়ে যোগ হতে পারে। আপনি যদি গলার আশেপাশে অস্বাভাবিক বা টিউমারের
মত কোন স্ফীতি দেখতে পান সেক্ষেত্রে অবশ্যই একটি ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে
হবে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করলাম টিউমার ভালো করার উপায়, কি
খেলে টিউমার ভালো হয় এছাড়াও টিউমার সম্পর্কে নানা বিষয়ে। আশা করি উক্ত পোষ্টের
মাধ্যমে টিউমারের লক্ষণ, টিউমার ভালো করার উপায় সহ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন। এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।
আমরা এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে আপনাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন
এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url