কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নিন

  বর্তমান যুগে অনেকেই প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালোই জানেন। তবে অনেকে এমনও আছে যারা কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য বোঝেনা। আসলে ভাইরাস এমন একটি প্রোগ্রাম যা তৈরি করা হয়েছে ডিভাইসের ক্ষতি করার জন্য। আর অ্যান্টিভাইরাস হচ্ছে তার বিপরীত অর্থাৎ কোন ডিভাইসকে ভাইরাসের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য ও এর সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই ব্লক পোষ্টের মাধ্যমে ভাইরাস ও অ্যান্টিভাইরাস সম্বন্ধে আলোচনা করেছি চলুন এর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে জেনে নিন-

পোস্ট সূচিপত্রঃ কম্পিউটার ভাইরাস ও এন্টিভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নিন

ভাইরাস এবং এন্টিভাইরাস কি

ভাইরাসঃ কম্পিউটার ভাইরাস হলো এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের স্বাভাবিক ফাইল বা প্রোগ্রামকে নষ্ট করে। কম্পিউটার ভাইরাস ব্যবহারকারীর অনুমতি ব্যতীত নিজেরা নিজেদের কপি তৈরি করতে পারে অথবা কপিগুলো নিজেরাই পরিবর্তিত হতে পারে। একটি কম্পিউটারে বিভিন্ন ভাবে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে এটি নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে হতে পারে এছাড়াও দিদি ইউএসবি ড্রাইভ এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

এন্টিভাইরাসঃ অ্যান্টিভাইরাস হচ্ছে একটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম যা আমাদের ডিভাইসকে ভাইরাস থেকে রক্ষা করে থাকে। এছাড়াও এটি আমাদের কম্পিউটারকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিস্তারিত বলতে গেলে এন্টিভাইরাস হলো সেই সফটওয়্যার যা ভাইরাস বা ম্যালওয়রের সাথে সম্পৃক্ত সফটওয়্যার কে আমাদের কম্পিউটারে ঢুকতে দেয় না। এন্টিভাইরাস এর ফলে আমাদের কম্পিউটারটি ভাইরাসমুক্ত থাকে।

কম্পিউটার ভাইরাস কে আবিষ্কার করেন

ভাইরাস তৈরি ইতিহাস ১৯৮৩ সালের ১০ শে নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের সাউদান ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শ্রেণীর ছাত্র গ্রেড কফিন ও পেন্সিল জুনিয়র লোহিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিষয়ক এক সেমিনারে প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস দেখান। 

এই ভাইরাসটি কম্পিউটারে প্রবেশ করিয়ে মাত্র পাঁচ মিনিট এই গোটা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছিলেন এবং মাত্র আধা ঘন্টা সময় এই কোড ব্যবহার করে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে পাস কাটিয়ে গোটা সিস্টেমে নিয়ন্ত্রণেটে সক্ষম হন তিনি। এই নিজে থেকেই নিজের অনুলুপি সৃষ্টির প্রোগ্রামটিকে virus এর সঙ্গে তুলনা করা হয় এবং একে ভাইরাস নামে অভিহিত করা হয় সেই থেকেই এমন ক্ষতিকর প্রোগ্রামের নাম হয়ে গেল কম্পিউটার ভাইরাস।

১০ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম

ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে কম্পিউটারের ক্ষতি করার জন্য। ভাইরাস এমন একটি প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার যা কম্পিউটারে ঢুকে নিজেরা নিজেদের কপি তৈরি করতে পারে এবং পরবর্তীতে সে কপিগুলোর পরিবর্তন করতে পারে। ১০ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম দেওয়া হলো-

ক্রিপ্টোলোকারঃ একটি কম্পিউটার ভাইরাস যার ২০১৩ সালে ইমেইল অ্যাটাচমেন্ট এর মাধ্যমে আগমন ঘটে। এ ভাইরাস কম্পিউটারের ফাইল গুলো ব্লক করে দেয়। ক্রিপ্টোলোকার ভাইরাসের কাজ হল কম্পিউটারের ডাটা গুলোকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।

নিমডাঃ ২০০১ সালে নিমডা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রথমে এ ভাইরাস ইন্টারনেট সার্ভার কে লক্ষ্য করে ইন্টারনেটে ঢুকে পড়ে তারপর ই-মেইল এর মাধ্যমে প্রতিটি কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এ ভাইরাস চেয়ে কম্পিউটারে প্রবেশ করে ওই কম্পিউটারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় যিনি এই ভাইরাস তৈরি করেছেন।

আইলাভইউঃ এই ভাইরাসটি কে তৈরি করেছেন তা আজ পর্যন্ত অস্পষ্ট আছে। ইমেইলের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেওয়া হতো। ইমেইল এমন রোমান্টিক ভাবে করা হতো যাতে মানুষ এটি দেখে ওপেন করে এবং এটি ওপেন করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সকল তথ্য ধাপিয়ে নেওয়া সম্ভব।

মাইডমঃ আমরা একটু আগেই জেনেছি নিমডা ভাইরাস সম্পর্কে। মাইডম ভাইরাস ও পুরোপুরি নিমডা ভাইরাসের মতো কাজ করে। এ ভাইরাস কম্পিউটারে ঢুকে ব্যবহারকারী ব্যক্তি কম্পিউটারের ডাটা চুরি করার জন্য রাস্তা তৈরি করে দেয়।

কোড রিড এবং কোড রিড টুঃ কোর্ট রিড এবং কোট রিড টু এ দুইটি ভাইরাসের আগমন ঘটে ২০০১ সালে। এই ভাইরাস দুইটি কম্পিউটারের বাফার ওভারফ্লো সমস্যা সৃষ্টি করতো।

দ্যা ক্লেজ ভাইরাসঃ এই ভাইরাস অন্যান্য ভাইরাস এর মত ইমেইল এবং বেসিকের মাধ্যমে কম্পিউটারকে আক্রমণ করতো।

স্ট্রম ওয়ার্মঃ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই স্টর্ম ওয়ার্ম ভাইরাসটি ২০০৬ সালের দিকে খুঁজে বের করেন। এটি খুব ক্ষতিকর একটি ভাইরাস। স্ট্রম ওয়ার্ম ভাইরাসটি ট্রোজান হর্স প্রোগ্রাম। এই ভাইরাসটি কম্পিউটারে প্রবেশ করে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে সক্ষম হতো।

মেলিসাঃ ডেভিড এল থিম নামে এক ব্যক্তি ১৯৯৯ সালে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ভিত্তিক এই মেলিসা ভাইরাস তৈরি করেন। এ ভাইরাসটিও ইমেইলের মাধ্যমে ছড়ানো হতো।

এস কিউ স্ল্যামারঃ এই সার্ভার টি কম্পিউটারের ওয়েব ে ছড়িয়ে পড়তো ওম বিভিন্ন ধরনের সার্ভার ক্রাশ এর কারণ হতো।

সাসার এবং নেটস্কিঃ এ ভাইরাস কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করে সিস্টেমের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং এটি পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে।

কম্পিউটার ভাইরাসের লক্ষণ সমূহ কি কি

  • কম্পিউটার চালু হতে বেশি সময় লাগবে।
  • কোন ফাইল ওপেন করার ক্ষেত্রে সাধারণ সময়ের থেকে বেশি সময় লাগবে।
  • প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার ইন্সটল এর সময় স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি সময় লাগবে।
  • কম্পিউটার স্পেস কমে যাবে এবং মেমোরি ফুল হতে থাকবে।
  • কাজ করার সময় হঠাৎ কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • কম্পিউটারের বিভিন্ন ফাইল নষ্ট হয়ে যাবে।
  • কিছু ফাইল হিডেন হয়ে যেতে পারে।
  • চলমান কাজের ফাইল বা সফটওয়্যার গুলো বেশি জায়গা দখল করবে।
  • কম্পিউটার হ্যাং করা।
  • ফাইল নট ফাউন্ড, আউট অফ মেমরি এসব কিছু বার্তা দেখাবে।

কয়েকটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার এর নাম

  • বিটডিফেন্ডার (Bitdefender)
  • নটন (Norton)
  • টোটাল এভি (Total AV)
  • ম্যাকফি (McAfee)
  • কেসপারকি (Kaspersky)
  • পানডা (Panda)
  • পিসি প্রটেক্ট ( PCProtect)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url