দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনি কি দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় খুঁজছেন তাহলে একদম সঠিক
জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা সকলেই জানি যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের
ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখা কতটা জরুরী। তাদের ক্ষেত্রে দ্রুত
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকালের মাধ্যমে আমরা দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
উপায় সহ ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি চলুন তাহলে
আর দেরি না করে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ডায়াবেটিস কেন হয়ঃ ভূমিকা
ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ হচ্ছে যখন শরীরে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের
তুলনায় দীর্ঘ সময় ধরে বেশি থাকে তখন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোন ইনসুলিন উৎপাদন
করে না অথবা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকরী ভাবে ও করতে পারেনা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে
শরীরে ইনসুলিন আছে কিন্তু তা কোন কাজ করতে পারছে না অথবা শরীরের ইনসুলিন নষ্ট
হয়ে গেছে তখন শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় গ্লুকোজ থাকে এই অবস্থাকেই সাধারণত
ডায়াবেটিস বলা হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ
ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণ গুলি উল্লেখ করা হলোঃ
- ক্ষতস্থান অনেক ধীরগতিতে ভালো হওয়া।
- তীব্র তৃষ্ণা অনুভব করা।
- অতিরিক্ত মাত্রায় প্রস্রাবের প্রবণতা বেড়ে যাওয়া।
- মুত্রনালীতে সংক্রমণ দেখা দেওয়া।
- খুব তাড়াতাড়ি ওজন হ্রাস পাওয়া।
- বগল এবং ঘাড়ে কালচে দাগ দেখা দেওয়া।
- হাত এবং পায়ে ঝিনঝিন হওয়া।
- শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানির সমস্যা দেখা দেওয়া।
- দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন চোখে ঝাপসা দেখা।
- মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরার মত সমস্যা দেখা দেওয়া।
- অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি সৃষ্টি হওয়া।
- মেজাজ এর পরিবর্তন দেখা দেওয়া।
এগুলোই সাধারণত ডায়াবেটিসের লক্ষণসমূহ।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই প্রয়োজন।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলি নিচে দেওয়া হলোঃ
- প্রতিদিন শরীরকে সচল রাখতে হাটুন।
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
- প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কিছু পরিমাণ শাকসবজি ও ফলমূল রাখুন।
- খাবার অল্প পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- প্রতিবেলার খাওয়ার সময় মত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত গোটা শস্য খাবার প্রবণতা বাড়াতে পারেন।
- নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করুন।
- ভালো ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিন।
- ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
- একটানা বসে কোন ধরনের কাজ না করে কাজের ফাঁকে একটু দাঁড়ান বা হাটুন।
- জাঙ্ক ফুড খাওয়া টোটালি বন্ধ রাখুন।
- যেকোনো ধরনের কোমল পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ডায়াবেটিস হলে কোন ফল খাওয়া যাবে
ডায়াবেটিস হলে যে ফলগুলি খেতে পারবেন তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
বেদানাঃ বেদানাতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও অবস্থিত প্রয়োজনীয় উপাদান ডায়াবেটিস
মোকাবেলায় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
আঙ্গুরঃ আঙ্গুরে রয়েছে
ফাইটোকেমিক্যাল রেসভারেট্রল যা আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
সহায়তা করে।
আপেলঃ আপেল কতটা উপকারী ফল এই
সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত। ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই আপেল খাওয়া জরুরী।
এছাড়াও আপেলে অবস্থিত উপাদান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতেও বেশ কার্যকরী।
ব্লু বেরিঃ ব্লুবেরিতে থাকা
অ্যান্থসায়ানিন উপাদান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুনঃ শিশুর জ্বর ও বমি হলে করণীয়
স্ট্রবেরিঃ স্ট্রবেরি ফল দেখতে
যেমন সুন্দর এটি খেতেও তেমন সুস্বাদু। স্ট্রবেরি আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা
কমাতে করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে, এছাড়াও রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পেয়ারাঃ পেয়ারাতে থাকা ফাইবার
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে এছাড়াও এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমায়।
তরমুজঃ তরমুজ রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে
এছাড়াও একটি ডায়াবেটিস এবং কিডনির সমস্যা এড়াতে বেশ কার্যকরী।
চেরিঃ চেরিতে থাকা প্রয়োজনীয়
কিছু উপাদান যার রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। এর ফলে
ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকিও কমে যায়।
পেঁপেঃ পেঁপেতে রয়েছে বহুল রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা। পেটিতে থাকা ন্যাচারাল এন্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
কমলাঃ কমলালেবু তে রয়েছে
ফেনোলিক এবং ফ্লাভনলস অ্যাসিড যা আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
রাখতে বেশ কার্যকরী।
ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবেনা
ডায়াবেটিস হলে খাবার পরিমাণমতো খেতে হবে। কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে খাবার খাওয়া
যাবেনা।ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবেনা তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- ডায়াবেটিস হলে কাঁচা লবণ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
- অতিরিক্ত চা বা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- যেসব খাদ্যে শর্করার পরিমাণ বেশি ওই সকল খাবার খাওয়া যাবে না।
- দুগ্ধ জাত সম্পন্ন খাদ্য অথবা ফ্যাট যুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে।
- অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার বা তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
- ভাত, গাজর, কলা এবং আলু ইত্যাদিতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে সেক্ষেত্রে এই খাওয়ার গুলি অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণমতো খেতে হবে।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
খালি পেটে রক্তে সুগারের মাত্রা ৫.৫ এর আশেপাশে থাকা ভালো। যদি খালি পেটে রক্তে
সুগারের মাত্রা ৫.৫ থেকে বেড়ে ৬.৯ পয়েন্ট এর মধ্যে থাকে তাহলে এই অবস্থাকে বলা
হয় প্রি ডায়াবেটিস। তবে যদি খালি পেটে রক্তে সুগারের মাত্রা ৭ পয়েন্ট এর উপরে
চলে যায় সেটিকে ডায়াবেটিস বলা হয়ে থাকে। আশা করি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে
পেরেছেন।
দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করলাম ডায়াবেটিস কেন হয়,
ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ, দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়, ডায়াবেটিস
হলে কি কি খাওয়া যাবে এবং কি কি খাওয়া যাবেনা এছাড়াও আরো ইত্যাদি বিষয়
সম্বন্ধে। আশা করি উক্ত পোষ্টের মাধ্যমে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
আরও পড়ুনঃ
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আমরা এই ওয়েবসাইটে
প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে আপনাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে
শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url