ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ এ সম্পর্কে জেনে নিন
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ? আমাদের অনেকেরই মনে এই প্রশ্ন আসে। অধিকাংশ ইসলামিক বক্তাদের মতে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ নয়। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ এ সম্পর্কে আমাদের ইসলাম কি বলে ইসলামে মিলাদুন্নবী পালনের বিষয়ে কি বলা হয়েছে তা আমরা এই আরটিকালের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
প্রিয় পাঠক মিলাদুন্নবী সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের অজানা তথ্য জানতে আমাদের
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে ঈদে
মিলাদুন্নবী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
ভূমিকাঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
ঈদে মিলাদুন্নবী হচ্ছে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর জন্মদিন হিসেবে মুসলমানদের মাঝে পালিত উৎসব। মুসলিমদের মধ্যে অনেকে রয়েছে
যারা ১২ই রবিউল আউয়াল অর্থাৎ ঈদে মিলাদুন্নবী দিনটিকে উৎসবের সাথে পালন করে
থাকে। বাংলাদেশের মুসলিমরা ১২ই রবিউল আউয়াল এর দিনটিকে ঈদে মিলাদুন্নবী বলে
অভিহিত করেছেন। এছাড়া অনেক জায়গায় এটি অনেক নামে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা
এই দিনটিকে নবী দিবস বলে থাকে।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পালন করা হয়
মুসলিমদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মিলাদুন্নবী পালন করে থাকেন। তাদের এটি পালনের
কারণ হচ্ছে তারা মনে করে যে ইসলামিক চক্রের ক্যালেন্ডার এর তৃতীয় মাস রবিউল
আউয়াল মাসের ১২ তারিখে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই কারণেই ১২ই রবিউল আউয়াল এই দিনটিকে অনেক
মানুষ আনন্দ উৎসব এর দিবস হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ আখেরি চাহার সোম্বা করনীয়
বাংলাদেশের মুসলিমরা ১২ই রবিউল আউয়ালকে মিলাদুন্নবী বলে অভিহিত করেছেন। বহু
ইসলামিক স্কলারদের মতে এই দিনটি নিয়ে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। বেশিরভাগ ইসলামিক
স্কলাররা এই দিনটি উদযাপন করা হারাম বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর্টিকেলটি পড়তে
থাকুন এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২৩ কত তারিখ
অনেকেই জানতে চান ইংরেজি মাস অনুযায়ী ২০২৩ এ কত তারিখে ঈদে মিলাদুন্নবী। ইসলামিক
চক্রের ক্যালেন্ডার এর তৃতীয় মাস রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ অর্থাৎ ইংরেজি
মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর এ ঈদে মিলাদুন্নবী। অর্থাৎ ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৩
সালে ঈদে মিলাদুন্নবী ২৭ সেপ্টেম্বর।
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন ১২ই রবিউল
আউয়াল অনেকেই ঈদের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করে। অনেকে আবার এটিকে সকল ঈদের সেরা ঈদ
মনে করে থাকে। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা এই দিনে উৎসব উদযাপন করা এগুলো কতটুকু
ইসলাম শরীয়ত সম্মত অনেকে এ বিষয়ে জানতে চান।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম এবং মৃত্যু স্মৃতি বিজড়িত মাস
হচ্ছে ১২ই রবিউল আউয়াল। ১২ ই রবিউল আউয়ালেই যে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন এ বিষয়
পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট না হলেও অনেক অনেক ঐতিহাসিকদের মতে এটি। তবে অনেক
ঐতিহাসিকদের মধ্যেও মতপার্থক্য রয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
জন্ম এবং মৃত্যু তারিখ সম্পর্কে। তবে বেশিরভাগ মত হচ্ছে ১২ই রবিউল আউয়াল।
আরও পড়ুনঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম যদি ১২ই রবিউল
আউয়াল হয়েও থাকে তারপরও এই দিনটিকে করে কোন প্রকার আনন্দ উৎসব করে ঈদে
মিলাদুন্নবী উদযাপন করা এটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী থেকে
পাওয়া যায় না, তার কর্ম থেকে পাওয়া যায় না, তার সুন্নাহ থেকে পাওয়া যায় না।
এছাড়াও খোলাফারা রাশেদের আমল থেকে পাওয়া যায় না এবং সাহাবায়ে কেরামদের আমল
থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের কোন কিছুই পাওয়া যায় না। যে আমলটি রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিজে করেননি, সাহাবায়ে কেরামদের থেকে বর্ণিত নয়
এমনকি খোলাফা রাশেদরাও পালন করেননি তাহলে সেটি ইসলাম কর্তৃক নির্দেশিত কোন আমল
নয়।
যেহেতু এটি ইসলাম দ্বারা নির্দেশিত কোন আমল নয়। কোরআন হাদিসেও এ ধরনের কোন
নির্দেশিত আমলের কথা বলা হয়নি সেক্ষেত্রে দেখা যায় ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা
মোটেও ইসলাম সম্মত নয়।তাই বলা বাহুল্য যে এটা মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ নয়।
সূত্রঃ শায়খ আহমাদুল্লাহ
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত
প্রিয় পাঠক আমরা ইতোমধ্যে আলোচনা করলাম ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ কি না
জায়েজ এই সম্পর্কে। ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা যেহেতু জায়েজ নয় সে ক্ষেত্রে বলা
যায় মুসলিমদের জন্য যে কাজটি জায়েজ ওইটা করা সম্পূর্ণভাবে বিদআত।
আরও পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
ঈদে মিলাদুন্নবী দিনটিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর জন্মদিন উপলক্ষে
উদযাপন বা পালন করা হয়ে থাকে। জন্মদিন কে কেন্দ্র করে যে উদযাপন হয়ে থাকে এটি
মুসলিমদের কোন কালচার বা ঐতিহ্য নয়। খ্রিস্টানরা সাধারণত ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এর জন্মদিন কে উদযাপন করে থাকে। খ্রিস্টান ছাড়াও অন্য ধর্মের মানুষরা জন্ম
দিবসকে উদযাপন করে থাকে। জন্মদিন পালন করা এটি ইসলামের কোন কালচারের মধ্যে পড়ে
না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও করেননি এবং তার সাহাবীদের করতেও
বলেনি। একজন মুসলিম হিসেবে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম
এর জন্মদিনে যদি কিছু করতে চান সে ক্ষেত্রে প্রতি সোমবার রোজা রাখতে পারেন। কেননা
সোমবারের দিনটিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মগ্রহণ করেছেন এবং
তিনি প্রতি সপ্তাহের সোমবারে রোজা রাখতেন।
সূত্রঃ শায়খ আহমাদুল্লাহ
শেষ কথাঃ ঈদে মিলাদুন্নবী কি - ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষণ আলোচনা করলাম ঈদে মিলাদুন্নবী কি, ঈদে মিলাদুন্নবী কেন
পালন করা হয়, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ, ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি
বিদআত ইত্যাদি সম্বন্ধে। আশা করি উক্ত পোস্টের মাধ্যমে সঠিক উত্তরটি পেয়েছেন।
শেষ মন্তব্যে এটিই বলবো যে আপনারা যেটি পালন করেন না কেন কুরআন এবং সুন্নাহর
আলোকে পালন করুন।
আরও পড়ুনঃ ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির আমল
কুরআন এবং সুন্নাহয় যেটি পালনের কোন আদেশ নেই ওইটি পালন থেকে বিরত থাকুন।
আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে অবশ্যই কমেন্ট
করে জানাবেন। ভালো লেগে থাকলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনাদের সুস্থতা কামনা
করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি আবারো দেখা হবে নতুন কোন এক আর্টিকেলে। আমাদের সাথেই
থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url