আখেরি চাহার সোম্বা কি - আখেরি চাহার সোম্বা করণীয়
আখেরি চাহার সোম্বা কি? অনেকেই এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। এ বিষয়টি যেহেতু
ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিটি মুসলিমকে এই আখেরি চাহার
সোম্বা কি বিষয়টি জেনে রাখা উচিত। আখেরি চাহার সোম্বা কি - আখেরি চাহার সোম্বা
করণীয় সম্পর্কে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন।
তপ্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আখেরি চাহার সোম্বা কি এছাড়াও এটি
সম্পর্কে আরো নানা ধরনের তথ্য তুলে ধরেছি। চলুন তাহলে আর দেরি না করে আখেরি চাহার
সোম্বা কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ আখেরি চাহার সোম্বা কি - আখেরি চাহার সোম্বা করণীয়
আখেরি চাহার সোম্বা কিঃ ভূমিকা
আখেরি চাহার সোম্বা এটি হচ্ছে ফারসি শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে শেষ বুধবার। আখেরি
মানে শেষ এবং চাহার সোম্বা মানে বুধবার। আখেরি চাহার সোম্বা বা শেষ বুধবার বলতে
বোঝানো হয় হিজরী বর্ষের সফর মাসের শেষ বুধবারকে। আখেরি চাহার সোম্বা কি? এবং এই
দিনের তাৎপর্য সম্পর্কে অনেকেই অবগত নাও থাকতে পারে।
আরও পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
মূলত আখেরি চাহার সোম্বা বা সফর মাসের শেষ বুধবারকে যে কারণে তাৎপর্যপূর্ণ দিন
মনে করে অনেকে সেটি হল যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মৃত্যুবরণ করার আগে বেশ কিছুদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন। আর তিনি সেই
অসুস্থতা থেকে সফর মাসের শেষের দিকে এসে একদিন কিছুটা আরোগ্য লাভ করেছিলেন।
সাধারণত সেই উপলক্ষে এখন পর্যন্ত মুসলিম উম্মার একটি বড় অংশ বছর হিজরি বর্ষের
সফর মাসের শেষ বুধবারে আখেরি চাহার সোম্বা পালন করে থাকে।
আখেরি চাহার সোম্বা কত তারিখ
প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে আখেরি চাহার সোম্বা কি এর সম্পর্কে আলোচনা করলাম।
কিন্তু আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে আখেরি চাহার সোম্বা কত তারিখে
পালন করতে হবে কারণ আমরা সাধারণত ইংরেজি মাস দেখে দিন গণনা করে থাকে কিন্তু
ইংরেজি মাস এবং আরবি মাস তো একই নয় এর কারণে অনেকেই বুঝতে পারেন না আখেরি চাহার
সোম্বা ইংরেজি মাস অনুযায়ী কোন তারিখে পালিত হবে।
যারা আখেরি চাহার সোম্বা এই দিনটিকে আনন্দের সাথে পালন করে থাকে তাদের এই বিষয়টি
জেনে নেওয়া উচিত। হিজরী বর্ষের সফর মাস এটিকে আমরা ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী
বলতে পারি সফর মাসের শেষ বুধবার হবে সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখ। তাহলে এই আলোচনার
প্রেক্ষাপটে আমরা জানতে পারলাম যে সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখে আখেরি চাহার সোম্বা
এই দিনটি পালন করা হবে।
আখেরি চাহার সোম্বা করণীয়
উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম সফর মাসের শেষ দিকে আমাদের প্রিয় নবী
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোগ্য লাভ করেছিলেন এই বিষয়টি
জানতে পারলাম। তবে এখানে বিশেষ কথাটি হচ্ছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর আরোগ্য লাভের দিনটিকে সাহাবায়ে কেরামরা বিশেষভাবে উদযাপন করেছে এ
বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য।
আরও পড়ুনঃ দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
এ বিষয়ে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বা কোন হাদিস গ্রন্থ
থেকে কোন প্রকার বিশুদ্ধ বর্ণনা পাওয়া যায় না। এর পাশাপাশি এই দিনটিকে কেন্দ্র
করে একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের বিশেষ কোনো আনন্দ উদযাপন করতে হবে বা আমাদের বিশেষ
কোন আমল করতে হবে এগুলো কোন গ্রহণযোগ্য ভিত্তি দ্বারা প্রমাণিত নয়। সাধারণত
বেশিরভাগ আলেমগণ বলে থাকেন ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই দিনটি পালন করা সম্পূর্ণ
বিদআত।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনে বেশ
অনেকবার বিপদ মুক্তির ঘটনা ঘটেছে। কাফেরদের কবল থেকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন তাকে
মুক্তি দান করেছেন। তিনি হিজরতের সময় যখন গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখান থেকে
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে মুক্তি দান করেছেন। বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি বিপদের
সম্মুখীন হয়েছেন সেখান থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাকে নাজাত দান করেছেন।
এখান থেকে আমরা জানতে পারি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনে অনেক
বিপদমুক্তির ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনাগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে গিয়ে বা সেই
ঘটনাগুলোকে বিশেষ দিবস হিসেবে ধার্য করে সেই দিনকে পরবর্তী বছরগুলোতে তিনি অথবা
তার সাহাবীগণ পরবর্তীতে উদযাপন করেছেন এমন কোন বর্ণনা কোরআন এবং হাদিসের মধ্যে
পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
এরপরেও অনেকেই আছে যারা এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপন করে এবং এই দিনটিতে
ইবাদত বন্দেগী তে পালন করেন। আপনি যদি শরীয়ত সম্মত ভাবে এই দিনটি পালন করতে চান
সেক্ষেত্রে অবশ্যই পালন করতে পারেন। কারণ এটি আপনার মত। তবে আপনি নিজে থেকে ভালো
করে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারেন যে আখেরি চাহার সোম্বা এই দিনটি ইসলামিক
দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক কি সঠিক নয়।
আখেরি চাহার সোম্বা কি সরকারি ছুটি
বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলো আনন্দের সাথে আখেরি চাহার সোম্বা দিনটি
উদযাপন করে থাকে। আমরা উক্ত পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি আমাদের প্রিয় নবী হযরত
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুবরণ করার আগে বেশ কিছুদিন থেকে
অসুস্থ ছিলেন। আর তিনি সেই অসুস্থতা থেকে সফর মাসের শেষের দিকে এসে একদিন কিছুটা
আরোগ্য লাভ করেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার প্রাকৃতিক উপায়
এ আরোগ্য লাভের দিনটি কে আমরা আখেরি চাহার সোম্বা হিসেবে পালন করে থাকি। যদিও এই
দিনটি পালন করা নিয়ে কোরআন অথবা হাদিসে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়নি তবুও অনেকে এই
দিনটি আনন্দের সাথে পালন করে থাকেন। অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকে আখেরি চাহার সোম্বা
কি সরকারি ছুটি?
অনেকেই এই দিনটিতে আল্লাহ তাআলার ইবাদত এবং শুকরিয়া আদায় করে থাকেন তাই এই
দিনটিতে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটির তালিকাই রয়েছে তবে ব্যাংক এবং
সরকারি অফিস ছুটির তালিকায় নেই। আশা করি আখেরি চাহার সোম্বা এর দিনটির ছুটির
বিষয়টি সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
আখেরি চাহার সোম্বা কি - আখেরি চাহার সোম্বা করণীয়ঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এই পোষ্টের মাধ্যমে এতক্ষণ আমরা জানলাম আখেরি চাহার সোম্বা কি, আখেরি
চাহার সোম্বা কত তারিখে হয়ে থাকে, আখেরি চাহার সোম্বা এই দিনটিতে করণীয় এছাড়াও
আখেরি চাহার সোম্বা এই দিনটির সরকারি ছুটি সম্বন্ধে। যেহেতু আখেরি চাহার সোম্বা
বিষয়টি ইসলামের সাথে সম্পর্কযুক্ত সে ক্ষেত্রে একজন মুসলিম হিসেবে এই বিষয়ে
আপনার জেনে রাখা উচিত।
আমরা এটি সম্পর্কে আপনাকে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করলাম এখন আপনি এই দিনটি উদযাপন বা
পালন করবেন কি করবেন না তা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে যেহেতু এটি ধার্মিক
বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত তাহলে অবশ্যই আপনি নিজেই বিবেচনা করে দেখবেন যে ইসলামিক
দৃষ্টিকোণ থেকে এটি পালন করা ঠিক কি না। আশা করি আমাদের এই আর্টিকালের মাধ্যমে
আখেরি চাহার সোম্বা কি এই বিষয়ে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়
এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।আমরা এই ওয়েবসাইটে
প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে আপনাদের পরিবার বা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং
আমাদের সাথে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url