খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

আমরা অনেকেই কমবেশি খেজুর খেয়ে থাকি তবে খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়, দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত ইত্যাদি বিষয়ে অনেকেই অবগত নয়। তাদের জন্য এই আর্টিকেলে খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সহ আরো নয় ধরনের তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা
যারা খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এছাড়াও খেজুর সম্বন্ধে নানা অজানা তথ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন। তাহলে আর দেরি না করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

খেজুরের পুষ্টি উপাদানঃ ভূমিকা

খেজুর এটির বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা। খেজুর কে সুমিষ্ট ফল হিসেবে ধরা হয়ে থাক। খেজুর সাধের দিক দিয়ে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বেশ পরিচিত একটি ফল। খেজুরে রয়েছে গ্লাইসেমিক ও ফ্রুকটোজ। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার সহ আরো নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান।
খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। এবং এতে অবস্থিত ভিটামিন বি ৬ মস্তিষ্কের কার্যক্রমাতা বৃদ্ধিতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। আশা করি খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে ধারণা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন এর সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য জানতে পারবেন।

কোন খেজুর সবচেয়ে ভালো

বিশ্বে প্রায় বিভিন্ন আকৃতির ৬০০ রকমের খেজুর দেখা যায়। তবে এতগুলো খেজুরের মধ্যে কোন খেজুরটি সবচেয়ে ভালো তা বোঝা সবার পক্ষেই মুশকিল। তাই অনেকে বাজারে খেজুর কিনতে গিয়ে বুঝে পাইনা যে কোন খেজুরটি নেওয়া ভালো হব। এক্ষেত্রে এটা সবারই জেনে রাখা জরুরী যে কোন খেজুরটি সবচেয়ে ভালো। আসলে খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো খেজুরটি হচ্ছে আজওয়া নামক খেজুর।
আজওয়া খেজুর চেনার উপায় হল এ খেজুরটি দেখতে কালো এবং নরম হয়ে থাকে। অন্যান্য খেজুরের মধ্যে আজওয়া খেজুর খুবই পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং খেতেও অনেক সুস্বাদু। সৌদি আরবের মদিনাতে সাধারণত এই খেজুর চাষ হয়ে থাকে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আজওয়া খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। এই খেজুরে রয়েছে নানা উপকার এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যদি আপনি ভালো খেজুরের সন্ধান করে থাকেন তাহলে নিঃসন্দেহে আজওয়া খেজুর খেতে পারেন।

খেজুরের উপকারিতা

আমরা কমবেশ অনেকেই খেজুর খেয়ে থাকি। তবে খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই অবগত নয়। নিচে খেজুরের উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলোঃ

স্নায়ুতন্ত্রের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-
খেজুরে রয়েছে নানা ধরনের ভিটামিন, প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম সহ আরো বিভিন্ন উপকারী উপাদান। এটি আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রখর করে এবং এর সাথে স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে অন্যদের তুলনায় যারা খেজুর খায় তাদের দক্ষতা বেশি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-
খেজুর রোগ প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।খেজুরে অবস্থিত উপাদান বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা এছাড়াও যকৃতের সংক্রমণ রোধে বেশ কার্যকরী।

পরিপাকে সাহায্য করে-
তাদের হজম শক্তি দুর্বল তারা নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন এতে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও খেজুর অবস্থিত বিভিন্ন পুষ্টিগুণ খাদ্য পরিপাক সহ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

পেশি মজবুত রাখতে সহায়তা করে-
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পেশির নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। পেশির সমস্যা এড়াতে সবথেকে কার্যকরী উপাদান হচ্ছে প্রোটিন। খেজুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তাই বেশি ভালো রাখতে খেজুর বেশ উপকারী।

কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে-
ক্লান্তি দূর করতে এবং শরীরের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত খেজুর খাওয়াতে উপকারে আসতে পারে। কেননা খেজুরে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি যার শরীরে খুব দ্রুত শক্তি যোগান দিতে সক্ষম।

হৃদরোগের ঝুকিয়ে রাতে সাহায্য করে-
যাদের হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। খেজুরে থাকা পটাশিয়াম হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে অনেক কার্যকরী। তাই হৃদরোগের ঝুকি এড়াতে খেজুর খেতে পারেন।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে-
বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে থাকা ভিটামিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে-
আমরা সকলেই জানি হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরের রক্ত বৃদ্ধির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। হিমোগ্লোবিনের অভাবে দেখা দেয় শরীরে রক্তস্বল্পতা। এই রক্তস্বল্পতা খেজুর খেতে পারেন। খেজুর আপনার শরীরটা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক করে রক্তস্বল্পতার মতো সমস্যা এড়াতে সাহায্য করব।

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত

অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, দিনে কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত। আসলে কোন জিনিসই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। কোন জিনিস প্রতিদিন খাওয়ার আগে এটি জেনে নেওয়া প্রয়োজন যে সেই জিনিসটি দিনে কতটুকু পরিমাণে খাওয়া উচিত। আপনি দিনে চার থেকে পাঁচটি খেজুর খেতে পারেন। যা আপনার ক্যালোরি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়

খেজুর খাওয়ার কোন উপযুক্ত বা নির্ধারিত সময় নেই। আপনার যে সময় ইচ্ছা আপনি খেজুর খেতে পারেন। তবে রাতে শোবার আগে অথবা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খেজুর খাওয়ার সময়টিকে উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হয়।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করলাম খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়, দিনে কয়টি করে খেজুর খাওয়া যাবে আরো ইফতারি বিষয়ে। তবে আপনি কি জানেন খেজুর ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার উপকারিতা কি? যদি না জেনে থাকেন চলুন তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি রাতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে খান তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারে আসবে। বিশেষ করে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা রাতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন। এইভাবে খেজুর ভিজে রেখে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও খেজুর ভিজিয়ে রেখে খেলে আরো নানা ধরনের উপকার পাবেন যেমন শরীরের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, একটুতেই শরীর ক্লান্তি হবে না এবং চলমান ভাব বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

খেজুর খাওয়ার অপকারিতা

খেজুর খাওয়ার তেমন কোন অপকারিতা নেই এবং এর অপকারিতা সম্পর্কে তেমন কোন তথ্যও পাওয়া যায় না। তবে কোন জিনিস শরীরের জন্য যতই উপকারী হোক না কেন তাও অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে নানা ধরনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাছাড়া খেজুরের কোন অপকারিতা দেখা যায় না। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর না খেয়ে পরিমাণমতো খান এটি শরীরের অনেক উপকারে আসবে।

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করলাম খেজুরের পুষ্টি উপাদান, কোন খেজুরটি সবচেয়ে ভালো, খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় সহ আরো ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে। আশা করি উক্ত পোষ্টের খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
এমন নতুন নতুন পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আমরা এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নতুন নতুন পোস্ট আপলোড করে থাকি। নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পোস্ট গুলো ভালো লাগলে আপনাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url