অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম - ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনি কি অনলাইনে ভোটার আবেদন করতে চাচ্ছেন? অনলাইনে ভোটার আবেদন করতে অবশ্যই আপনাকে অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম জানা থাকলে আপনি ঘরে বসেই খুব সহজেই ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক ভোটার আবেদন সহ আরো বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে জানতে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম - ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
- ভূমিকাঃ ভোটার আবেদন করতে কি কি লাগে
- অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম
- অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
- উপসংহারঃ অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম - ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
ভূমিকাঃ ভোটার আবেদন করতে কি কি লাগে
ভোটার আবেদন করতে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে আপনি
যদি ভোটার আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার বয়স হতে হবে নূন্যতম ১৮ বছর বা তার
বেশি থাকা প্রয়োজন। আপনি চাইলে ১৮ বছর আগেও ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করতে
পারবেন আইডি কার্ড পেয়ে যাবেন ঠিকই তবে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ভোটার
তালিকায় আপনার নাম আসবে না।
আরও পড়ুনঃ মোবাইলে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম
এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে আরো বেশ কিছু শর্ত রয়েছে আর্টিকেল
পড়তে থাকুন আশা করি সব উত্তর পেয়ে যাবেন। এই আরটিকাল এর মাধ্যমে আমরা ভোটার
আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে, অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম, অনলাইনে ভোটার
আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম, অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন, ভোটার আইডি কার্ড
ডাউনলোড সহ আরো ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
নতুন ভোটার আবেদন করার যে শর্তগুলি তার পূরণ থাকা লাগবে তা নিচে উল্লেখ করা
হলোঃ
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আপনার বয়স ১৮ বছর বা তার চেয়ে বেশি হতে হবে।
- পূর্বে যদি আপনি কখনো নিবন্ধন করে থাকেন সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে নিবন্ধন করতে পারবেন না।
এ সকল শর্তের পরেই আপনি নতুন ভোটার আবেদন করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া
যাক ভোটার আবেদন করতে কি কি লাগেঃ
- ভোটার আবেদন করতে জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের ফটোকপি
- প্রত্যয়ন পত্র
- নাগরিক সনদ
- পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- কর পরিষদের রশিদ
- ইউটিলিটি বিলের কপি
অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম
প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে জানলাম ভোটার আবেদন করতে কি লাগে। আপনি যদি ভোটার
আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে ঘরে বসে অনলাইনে খুব সহজেই ভোটার আবেদন করতে পারেন।
অনেকেরই অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে না ও জানা থাকতে পারে।
অনলাইনে ভোটার আবেদন করতে নিচে দেওয়া সকল ইন্সট্রাকশন গুলি ভালোভাবে
পর্যবেক্ষণ করুনঃ
- প্রথমে আপনি আপনার মোবাইল ফোন থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজারে প্রবেশ করুন। এরপর সার্চ বারে ক্লিক করে services nidw gov bd লিখে সার্চ করুন। এরপর NID এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখাবে ওইটিতে ক্লিক করুন।
- ওয়েব সাইটে ক্লিক করার পর আপনার কাছে নতুন একটা ইন্টারফেস দেখাবে ওইখান থেকে আবেদন করুন বাটনটিতে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন নামের একটি ইন্টারফেস আসবে ওইখানে আপনার নাম, জন্মতারিখ ইত্যাদি ঠিকভাবে দেওয়ার পর নিচে একটি ক্যাপচা থাকবে, ক্যাপচা কোডটি সঠিকভাবে লিখে বহাল বাটনটিতে ক্লিক করুন।
- ক্লিক করার পর আপনার মোবাইল নম্বর চাইবে ওইখানে আপনার মোবাইল নাম্বারটি বসিয়ে বার্তা পাঠান বাটনটিতে ক্লিক করে দিন। কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার মোবাইলে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে ওই কোডটি বসিয়ে বহাল বাটনটিতে ক্লিক করুন।
- এরপর আপনার কাছে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড এর একটি ইন্টারফেস আসবে এখানে আপনি আপনার ইন্টারনেট এবং পাসওয়ার্ড সেট করে দেওয়ার পর নিচে থাকা বহাল বাটনটিতে ক্লিক করে দিন। ক্লিক করার পর আপনার কাছে আরেক নতুন ইন্টারফেস আসবে এখানে বিস্তারিত প্রোফাইল নামের বাটনটিতে ক্লিক করুন।
- বিস্তারিত প্রোফাইলে ক্লিক করার পর আপনার কাছে একটি ফরম পূরণ করার ইন্টারফেস চলে আসবে এখানে আপনার যত তথ্য চাইবে তা আপনার জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী বসাবেন এবং আপনার পিতামাতার যে সব তথ্য চাইবে ওইগুলো আপনার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে ভালোভাবে দিয়ে দিবেন। সকল তথ্য ফুলফিল করার পর পরবর্তী বাটনটিতে ক্লিক করুন।
- পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার পর এখানে আরেকটি ইন্টারফেস আসবে এখানে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ইত্যাদি তত্ত পূরণ করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। বিশেষ দ্রষ্টব্য তত্ত্ব পূরণ করার সময় যে সবে স্টার চিহ্ন দেওয়া থাকবে ওই সকল তত্ত্ব পূরণ করা লাগবে আর যেগুলোতে স্টার চিহ্ন দেওয়া থাকবে না ওইগুলো অপশনাল পূরণ করলেও হবে আবার না করলেও হবে।
- পরবর্তী বাটনটিতে ক্লিক করার পর অবস্থানরত দেশের নাম, ভোটার ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, জেলা, বিভাগ, স্থায়ী ঠিকানা সমস্ত কিছু দিয়ে দেওয়ার পর পরবর্তী বাটনটিতে ক্লিক করে দিন। পরবর্তী বাটনে ক্লিক করার পর কাগজপত্র নামে একটি ইন্টারফেস পেয়ে যাবেন। এই আবেদনটি করার জন্য কোন কাগজপত্র প্রয়োজন হবে না তাই পরবর্তী বাটনটিতে ক্লিক করে দিন।
- পরবর্তী বাটনে ক্লিক দেওয়ার পর নিশ্চিন্ত করুন নামের আরেকটি ইন্টারফেস পেয়ে যাবে এখানে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার অনলাইনে ভোটার আবেদন করা সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর ডাউনলোড নামের একটি বাটন পাবেন ওইটিতে ক্লিক করে দিন। ডাউনলোড এ ক্লিক করার পর একটি ফর্ম ডাউনলোড হবে।
- ডাউনলোড করার ফর্মটি আপনি যে কোন কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে নেবেন। প্রিন্ট করে নেওয়ার পর ফরমটি পূরণ করে। ফর্মটির সাথে আরও যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের প্রয়োজন যেমন আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, আপনার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র ফটোকপি ইত্যাদির ডকুমেন্টসহ এই ফর্মটি আপনার নিকটস্থ যে নির্বাচন অফিস রয়েছে ওইখানে গিয়ে এই ফর্মটি সাবমিট করে দেবেন।
- ফরমটি সাবমিট করার পর নির্বাচন কর্মকর্তারা আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ডেট প্রদান করবে। ওই নির্দিষ্ট তারিখে আপনি যে আপনার আঙ্গুলের ছাপ সহ আরো যেগুলো দেওয়া প্রয়োজন সকল কিছু দিয়ে আসবেন। কিছুদিন পর নির্দিষ্ট একটি সময়ে আপনি আপনার আইডি কার্ডটি পেয়ে যাবেন।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
- ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য আপনি আপনার মোবাইল থেকে যে কোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে নেবেন। এরপর সার্চবারে ক্লিক করে land.gov.bd সার্চ করুন। সার্চ করার আপনার কাছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটু ওয়েবসাইট আসবে ওই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করার পর স্কল করে নিচের দিকে ভূমি উন্নয়ন কর নামের একটি অপশন পেয়ে যাবেন ওইটিতে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর ক্লিক করার পর আপনার কাছে ইন্টারফেস আসবে একটু নিচের দিকে স্ক্রল করলে অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর নামের একটি অপশন পেয়ে যাবেন বইটিতে ক্লিক করুন।
- ক্লিক করার পর এখানে আপনার ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ ইত্যাদি যা চাইবে সবকিছু দিয়ে দেয়। আপনি যে জাতীয় পরিচয় পত্র টি চেক করতে চাইছেন ওই জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি দিয়ে দেবেন।
- সবকিছু দিয়ে দেওয়া হয়ে গেলে পরবর্তীতে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর আপনার ভোটার আইডি কার্ডের সমস্ত তথ্য দেখালে বুঝবেন আপনার আইডি কার্ডটি আসুন আর যদি না দেখায় তাহলে বুঝবেন যে আপনার আইডি কার্ডটি আসল নয়।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে সর্বোচ্চ দুই
মাসের মতো সময় লাগতে পারে। তবে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন প্রক্রিয়ার
সময় কতটুকু লাগবে তা নির্ভর করে আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে যাচ্ছেন তার ওপর।
আরও পড়ুনঃ ঘরে বসে ইনকাম করার উপায়
আপনি অনলাইনে উপযুক্ত ডকুমেন্ট সহ সঠিকভাবে যদি ভোটার আইডি সংশোধন করার জন্য
আবেদন করতে পারেন সে ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার ভোটার আইডি কার্ডটি
সংশোধন হয়ে যাবে। কোন কোন ক্ষেত্রে এর সময় বৃদ্ধি ও পেতে পারে।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনি যদি আপনার ভোটার আইডি অনলাইন কপিটি ডাউনলোড করতে চান সেক্ষেত্রে প্রথমে
আপনি আপনার স্মার্টফোনের গুগল প্লে স্টোরে প্রবেশ করে এনআইডি ওয়ালেট নামের
একটি অ্যাপ ইন্সটল করে নিন।
অ্যাপ ইন্সটল করা হয়ে গেলে আপনার স্মার্টফোন যে কোন একটি ব্রাউজারে প্রবেশ
করুন প্রবেশ করে সার্চ বারে nidbd লিখে সার্চ করুন এন আই ডি কার্ডের অফিসিয়াল
ওয়েবসাইটটি পেয়ে যাবেন এখানে প্রবেশ করুন। প্রবেশ করার পর এই ওয়েবসাইটে যদি
আপনার অলরেডি একাউন্ট করা থাকে সেক্ষেত্রে লগইন করে নিন আর যদি অ্যাকাউন্ট না
থাকে তাহলে রেজিস্টারে ক্লিক করে একাউন্টটি তৈরি করে নিন।
আরও পড়ুনঃ নগদ একাউন্ট পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে করণীয়
একাউন্ট রেজিস্টার করার পর ট্যাপ টু এন আই ডি ওয়ালেট নামের একটি অপশন পেয়ে
যাবেন ওইটিতে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর এনআইডি ওয়ালেট ওপেন করুন। অ্যাপটি
ওপেন করার পর Start Face Scan বাটনটিতে ক্লিক করে আপনার ফেসটি স্ক্যান করে নিন।
স্ক্যান করা হয়ে গেলে আপনার সামনে আপনার এন আই ডি কার্ড টি দেখাবে এখানে স্কল
করে নিচের দিকে ডাউনলোড অপশন পেয়ে যাবে। ডাউনলোডে ক্লিক করে আপনার ভোটার আইডি
কার্ডটি ডাউনলোড করে নিন। ডাউনলোড করা হয়ে গেলে আপনি যেকোন একটি কম্পিউটারের
দোকানে গিয়ে এটিকে প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।
উপসংহারঃ অনলাইনে ভোটার আবেদন করার নিয়ম - ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষণ জানলাম ভোটার আবেদন করতে কি কি লাগে, অনলাইনে ভোটার
আবেদন করার নিয়ম, অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম, ভোটার আইডি কার্ড
ডাউনলোড করার নিয়ম ইত্যাদি। আশা করি উক্ত পোস্টের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটার আবেদন
করার নিয়ম সহ ভোটার আইডি কার্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ভালোভাবে জানতে
পেরেছেন।
আরও পড়ুনঃ ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়
পোস্টটি ভালো লাগলে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে
পারেন। বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। আমরা নিয়মিত
আমাদের ওয়েবসাইটে এরকম বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট পাবলিশ করে থাকি। তথ্যপ্রযুক্তি,
ব্যাংকিং সেবা, সরকারি সেবা, রোগের চিকিৎসা, লাইফ স্টাইল সহ আরো বিভিন্ন ধরনের
কনটেন্ট পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url