সমবায় সমিতির নীতিমালা - সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া

প্রিয় পাঠক সমবায় সমিতির নীতিমালা, সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া আপনি কি এ সকল বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানবো সমবায় সমিতির নীতিমালা এছাড়াও সমবায় সমিতি সম্পর্কিত ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে।আশা করি আমাদের আর্টিকেলটির মাধ্যমে সমবায় সমিতির নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন।
সমবায় সমিতির নীতিমালা
প্রিয় পাঠক আপনি যদি সমবায় সমিতির নীতিমালা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ সমবায় সমিতির নীতিমালা - সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া

  • ভূমিকা
  • সমবায় সমিতি কি
  • সমবায় সমিতির বৈশিষ্ট্য
  • সমবায় সমিতির নীতিমালা
  • সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া
  • সমবায় সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
  • শেষ কথাঃ সমবায় সমিতির নীতিমালা - সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া

ভূমিকা

শিল্প বিপ্লবের ফলে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়ে যাওয়ায় স্বল্পবিত্ত সম্পন্ন দরিদ্র শ্রেণির মানুষ চরম অসহায়ত্বের শিকার হয়। এথেকে বাঁচতে নানান প্রচেষ্টার এক পর্যায়ে মানুষ নিজেদের অর্থনৈতিক কল্যাণে সাম্য ও সহযোগিতার ভিত্তিতে নতুন যে সংগঠনের উদ্ভব ঘটায় তাই সমবায় সংগঠন নামে পরিচিতি। ‘ঐক্যই শক্তি' এই মূলমন্ত্রের ভিত্তিতে গঠিত সমবায় সংগঠন ব্যবসায় জগতে নতুন ধারণা সৃষ্টির পাশাপাশি সমাজের এ শ্রেণির মানুষের মাঝে নতুনভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করে। দ্রুত এই সংগঠন বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। যা অদ্যাবধিও সকল সমাজেই স্বগর্বে টিকে আছে।

সমবায় সমিতি কি

সমবায়ের শাব্দিক অর্থ হলো সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টা বা সকলের মিলিত উদ্যোগে কোনো কিছু গড়ে তোলার প্রয়াস। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা থেকেই মূলত সমবায় সংগঠনের উৎপত্তি। তাই নিজেদের অর্থনৈতিক কল্যাণ লাভের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমবায় আইনের আওতায় গড়ে তোলা সংগঠনকেই সমবায় সংগঠন বলে।

তুলনামূলকভাবে কমবিত্তসম্পন্ন সমশ্রেণি বা পেশার মানুষ নিজেদের স্বার্থে সংঘবন্ধ হয়ে সমঅধিকারের ভিত্তিতে সমবায় আইনের আওতায় এ ধরনের সংগঠন গড়ে তোলে। 'একতাই বল' বা 'ঐক্যই শক্তি' এরূপ ব্যবসায়ের মূল শ্লোগান বা নীতিবাক্য। সকলের তরে সকলে, দশে মিলে করি কাজ, স্বাবলম্বনই শ্রেষ্ঠ অবলম্বন, সাম্য ও সহযোগিতা, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতই সকলের মত ইত্যাদি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিষ্ঠান স্বকীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে সকল সমাজেই বিরাজমান। 


অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝিতে শিল্প বিপ্লব (১৭৫০-১৮৫০) শুরু হওয়ার পর শিল্পাঞ্চলগুলোতে শ্রমিকদের ভিড় বাড়তে থাকে। কৃষি ছেড়ে চলে আসা এ সব শ্রমিক এক পর্যায়ে মারাত্মক বৈষম্যের শিকারে পরিণত হয়। তাদের অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার সামর্থ্যও তারা হারিয়ে বসে। দোকান মালিকরা তাদের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বেশি মূল্যে বাকিতে পণ্য বেঁচে তাদেরকে সর্বশান্ত করে ফেলে।

অনেক শিল্প মালিক শ্রমিকদের শ্রম বন্ধক রেখে অধিক মূল্যে পণ্য সরবরাহ করে নির্দয় আচরণ করে। শ্রমিকরা নিজেদের বেতন ও সুবিধা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন ও ধর্মঘট করলেও তা তাদের জীবনমান বৃদ্ধিতে ব্যর্থ হয়। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে ইংল্যান্ডের ল্যাংকশায়ারের ২৮ জন বস্ত্রকল শ্রমিক (তাঁতি) ১ স্টার্লিং পাউন্ড করে জমা দিয়ে তাঁরা 'রচডেল সোসাইটি অব ইক্যুইটিবল পাইওনিয়ারস' নামে একটা সমিতি প্রতিষ্ঠা করে। এক্ষেত্রে তারা সমবায়ের কতকগুলো আদর্শ নির্দিষ্ট করে তা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।

আরও পড়ুনঃ পণ্য ডিজাইন কি

অতঃপর ১৮৪৪ সালের ২১ ডিসেম্বর তারা ছোট্ট একটা দোকান প্রতিষ্ঠা করে প্রথমত এখানে কিছু ময়দা, জবের আটা, মাখন, চিনি ও মোমবাতি জোগাড় করে ন্যায্যমূল্যে সদস্যদের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করে। এতে একদিকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ন্যায্যমূল্যে পাওয়ায় তাদের যেমনি সুবিধা হয় তেমনি দোকান থেকে অর্জিত লাভ তাদের সামর্থ্য ও শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে সাফল্যের মধ্য দিয়ে অগ্রযাত্রা ঘটে নতুন ব্যবসায় সংগঠন সমবায় সমিতির।

সমবায় সমিতির বৈশিষ্ট্য

সমবায় একটি আইন সৃষ্ট, অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ব্যবসায় সংগঠন। সাধারণ ব্যবসায় হতে এর পার্থক্য এমন যে, এম. এল. ডার্লিং বলেছেন, "এটি কোনো রীতি বা ভগ্ন অপেক্ষা কিছু বেশি, এটি হলো একটি শক্তি অথবা প্রাণ চাঞ্চল্যপূর্ণ হৃদয় ও মনের ভাবনা । এটি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য একটি ধর্ম ।" নিম্নে এরূপ ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলোঃ
  • গঠন প্রকৃতিঃ দেশে প্রচলিত সমবায় আইন অনুযায়ী কতিপয় ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সংঘবদ্ধ হয়ে এরূপ ব্যবসায় গঠন করে। এজন্য ফি প্রদানপূর্বক নির্দিষ্ট ফরমে সমবায় নিবন্ধকের নিকট আবেদন করতে হয় এবং অনুমোদন প্রাপ্তির পরই আইনসঙ্গতভাবে এর কাজ শুরু করা যায়। বাংলাদেশে সমবায় সমিতি আইন ২০০১ এবং সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ অনুযায়ী এ দেশের সমবায় সমিতিসমূহ গঠিত হয়।
  • উদ্দেশ্যঃ সমবায়ের মূল উদ্দেশ্য হলো এর সদস্যদের আর্থ-সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। অন্য ব্যবসায়ের ন্যায় শুধুমাত্র মুনাফা অর্জন এর উদ্দেশ্য নয়। এলাকার কৃষকরা সমবায়ের মাধ্যমে গভীর নলকূপ বসিয়ে একত্রে চাষাবাদ করছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই সেচের পানি সরবরাহের জন্য প্রত্যেক সমবায়ী সমবায় সমিতিকে অর্থ পরিশোধ করছে এবং এতে মুনাফা হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। তবে বড় কথা হলো সমবায়ের মাধ্যমে গভীর নলকূপ বসায় তাদের ফসলের উৎপাদন বেড়েছে এবং এতে সবাই আর্থিকভাবে লাভবান হতে পেরেছে।
  • সদস্য সংখ্যাঃ ২০০১ সালের সমবায় সমিতি আইনের ৮ ধারা অনুযায়ী প্রাথমিক সমবায় সমিতি গঠন করতে হলে কমপক্ষে ২০ (কুড়ি) জন ব্যক্তি সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ও জাতীয় সমবায় সমিতিতে ১০(দশ) জন প্রাতিষ্ঠানিক সদস্য থাকতে হয়। সদস্য সংখ্যার সর্বোচ্চ সীমা আইনে বলা হয়নি।
  • সদস্যদের প্রকৃতিঃ এটি তুলনামূলকভাবে সমাজের কম বিত্তসম্পন্ন মানুষদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গঠিত সংগঠন। সাধারণত দরিদ্র কৃষক, তাঁতী, জেলে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্বল্প শিক্ষিত যুবক, মহিলা ইত্যাদি শ্রেণির লোকেরাই অধিক হারে সমবায় গঠন ও সমবায়ের সদস্যপদ গ্রহণ করে। যে কারণে একে Citadel of the exploited বা 'শোষিতদের আত্মরক্ষার দুর্গ' হিসেবে গণ্য করা হয়। অবশ্য মার্কেট সমবায় সমিতি, বাড়ি মালিক সমবায় সমিতি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তসম্পন্ন ব্যক্তিগণও নিজেদের কল্যাণের জন্য সমবায় সমিতি গঠন করে থাকে।
  • মূলধন সংগ্রহঃ এরূপ প্রতিষ্ঠানের মূলধন স্বল্প অথচ সমমূল্যের কতকগুলো শেয়ারে বিভক্ত হয়। এরূপ শেয়ারের পরিমাণ ও প্রতি শেয়ারের মূল্য এর উপবিধিতে উল্লেখ থাকে। এই শেয়ার বিক্রয় ও সঞ্চয় আমানত সংগ্রহ করে এর মূলধন সংগ্রত করা হয়।
  • শেয়ার ক্রয়ের সীমাঃ সমবায়ের অভ্যন্তরে সমবায়ীদের মধ্যে যেন। অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি না হয় এবং কেউ একে কুক্ষিগত করতে না পারে সেজন্য এক্ষেত্রে অবাধে শেয়ার ক্রয়ের সুযোগ দেয়া হয় না। আইনে বর্ণিত ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ব্যতিরেকে এর কোনো একক সদস্য এর শেয়ার মূলধনের সর্বোচ্চ এক-পঞ্চমাংশ (২০%)-এর অধিক মূল্যের শেয়ার ক্রয় করতে পারে না।
  • মুনাফা বণ্টনঃ সমবায়ের অর্জিত মুনাফার সবটুকু সদস্যদের মধ্যে বণ্টিত হয়। না। বাধ্যতামূলকভাবে এর ন্যূনতম ১৫% সংরক্ষিত তহবিলে এবং ৩% সমবায় উন্নয়ন তহবিল (যার ২% সমবায় প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের জন্য ব্যয়যোগ্য) এর চাঁদা হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়। অবশ্য সমবায়ের উপবিধিতে উল্লেখ থাকলে অন্যান্য উদ্দেশ্যে অর্জিত মুনাফার সর্বাধিক ১০% সংরক্ষণ করা যায়। অবশ্য অর্থায়নকারী বা ঋণদানকারী সমবায় সমিতির বেলায় কু ঋণ সঞ্চিতি হিসাবে মুনাফার ১০% বাধ্যতামূলকভাবে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। বাকি অংশ সাধারণ সভার সিদ্ধান্তক্রমে শেয়ারগ্রহীতাদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।
  • ব্যবস্থাপনা কমিটিঃ সমবায়ীদের মধ্য থেকে সমবায় পরিচালনার জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গের সমষ্টিকে ব্যবস্থাপনা কমিটি বলে। ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অত্র আইন, বিধি ও উপবিধি মোতাবেক গঠিত কমপক্ষে ৬ ও সর্বোচ্চ ১২ জন সদস্য সম্বলিত (যা তিন দ্বারা বিভাজ্য) ব্যবস্থাপনা কমিটির ওপর ন্যস্ত থাকে। প্রথম ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ ১(এক) বছর এবং এরপর থেকে এ মেয়াদ ৩(তিন) বছর হয়। সমবায় আইন, ধারা ১৮ ও সমবায় বিধিমালা, ধারা ২৩]।
  • সম-ভোটাধিকারঃ সমবায়ের প্রত্যেক সদস্যের শেয়ার মূলধন বা জমার পরিমাণ যা-ই হোক না কোন একক ভোটের অধিকারী। তাই সদস্যদের সম-ভোটাধিকার এর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সমবায়ে সফলতার চাবিকাঠি হলো সমবায়ীদের ঐক্য। এই ঐক্য বজায় রাখতে সমবায়ে সাম্যতার নীতি অনুসরণ করা হয়। অর্থাৎ সদস্যদের সামাজিক, ধর্মীয় ও বংশ পরিচয়, অর্থ ও বিত্ত যে ধরনেরই হোক সমবায়ে সবাই। সমান। সম-ভোটাধিকারের মাধ্যমে এই সাম্যতাকে বাস্তবে লালন করা হয়।
  • সদস্যদের দায়ঃ সাধারণত সমবায় সমিতিতে এর প্রত্যেক সদস্যের দায় তার ক্রয়কৃত শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে । অর্থাৎ এর অতিরিক্ত দায় বহনে তাকে বাধ্য করা যায় না । এ কারণেই এর নামের সাথে সীমিত Ltd. শব্দের উল্লেখ করতে হয়। অবশ্য সীমাহীন দায়সম্পন্ন সমিতিও গঠন করা যায়।
  • সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও পৃষ্ঠপোষকতাঃ সমবায় আইনসৃষ্ট প্রতিষ্ঠান বিধায় এর ওপর স্বভাবতই সরকারি নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে। এ ছাড়াও সমবায়ের উন্নতির জন্য সরকার এর সভা অনুষ্ঠান, কমিটি গঠন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিচালনা, হিসাবপত্র রক্ষণ ইত্যাদি বিষয় তত্ত্বাবধান করে। এর বাইরেও সরকার নিজ দায়িত্বে সমবায়ীদের প্রশিক্ষণ দান ও বিভিন্ন আর্থিক-অনার্থিক সহযোগিতা প্রদান করে।

সমবায় সমিতির নীতিমালা

নীতি বা আদর্শ হলো সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত কাজের নির্দেশনা যা মেনে চললে কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় বা কার্যক্ষেত্রে সাফল্য লাভ সহজ হয়। সমবায় একটি ভিন্ন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন। কারণ সমাজের স্বল্পবিত্তসম্পন্ন মানুষ নানান সীমাবদ্ধতা নিয়ে পারস্পরিক অর্থনৈতিক কল্যাণের লক্ষ্যে এরূপ ব্যবসায় গঠন ও পরিচালনা করে। এ ধরনের ব্যবসায় সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে গিয়ে এর পরিচালক ও সদস্যদের বেশ কিছু মূলনীতি বা আদর্শ মেনে চলতে হয়। এরূপ নীতি বা আদর্শের বিচ্যুতি ঘটলে সমবায় সাফল্য লাভ করতে পারে না। এরূপ নীতি বা আদর্শসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
  • একতাঃ সকলে মিলে একভাবে, একমনে ও একত্রে চলার দৃঢ় অভিব্যক্তি, প্রবণতা ও অবস্থাকে একতা বলে। ঐক্যবদ্ধভাবে এই চলার ফলে যে শক্তির সৃষ্টি হয় তাই 'একতাই বল' (Unity is strength) নামে অভিহিত। এই প্রধান মূলনীতির ওপর সমবায় প্রতিষ্ঠিত। প্রত্যেক সমবায়ীকে বুঝতে হয় যে ঐক্যই তাদের শক্তি। তাই এটি বিনষ্ট হয় এমন কোনো কাজ থেকে সদস্যদের বিরত থাকা আবশ্যক।
  • সাম্যঃ সমবায় সমিতি সাম্যের আদর্শে অনুপ্রাণিত। সাম্য বলতে সংঘবদ্ধ সকলের পারস্পরিক অধিকারে সমতা প্রতিষ্ঠাকে বুঝায়। সমবায়ের সদস্যরা সামাজিক, অর্থনৈতিক বা পারিবারিকভাবে যে যেমনই হোক না কেন সবাই এখানে সমান মর্যাদার অধিকারী। সমবায়ে যার যে পরিমাণ মূলধনই থাক না কেন সবাই এক ভোটের অধিকারী। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রেও এভাবেই সমবায়ের সদস্যদের মধ্যে সাম্য ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়।
  • সহযোগিতাঃ সহযোগিতা বলতে একে অন্যকে সহায়তা করে এগিয়ে নেয়ার বা এগিয়ে যাওয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টাকে বুঝায়। সমবায়ের আরেকটি মূলমন্ত্র হলো 'দশে মিলে করি কাজ'। অর্থাৎ এক্ষেত্রে প্রত্যেক সদস্যের সহযোগিতার মনোভাব ও পরস্পর সহানুভূতিশীল থাকা অপরিহার্য। সমবায়ে হিংসা-বিদ্বেষ যাতে কোনোভাবেই দেখা দিতে না পারে তার প্রতি সব সময়ই সতর্ক নজর রাখা উচিত। এভাবে সহযোগিতামূলক মনোভাব ও কাজ সদস্যদের মধ্যে একতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
  • সততাঃ সততা বলতে ন্যায়পরায়নতা প্রদর্শন এবং সাধুতা বা ধার্মিকতা বজায় রেখে চলাকে বুঝায়। সমবায় সংগঠনে এর প্রত্যেক সদস্যের বিশেষত পরিচালকদের মধ্যে সততার গুণ থাকা এর সংহতি ও সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরূপ প্রতিষ্ঠানে পরিচালকদের মধ্যে সততার অভাব দেখা দিলে সদস্যদের মনে সন্দেহ-অবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। ফলে সদস্যরা আগ্রহ হারায়। যেখানে কোনোভাবেই ব্যবসায় এগুতে পারে না।
  • আস্থা ও বিশ্বাসঃ দলবদ্ধ প্রচেষ্টায় দলীয় সদস্যগণ পরস্পরের প্রতি নিঃসন্দেহ ও নির্ভরশীল হওয়াকেই পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস বলে। সমবায়ে সফলতা লাভ করতে হলে এর সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা-বিশ্বাস থাকা অপরিহার্য। এরূপ বিশ্বাস যত দৃঢ় হয় সমবায়ের প্রতি সদস্যদের আগ্রহ, উদ্দীপনাও তত বাড়ে। তাই যাতে কোনোভাবেই কারও কাজ, কথা বা আচরণের দ্বারা এই আস্থা ও বিশ্বাস বিনষ্ট না হয় সেদিকে এর পরিচালকদের সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত।
  • গণতন্ত্রঃ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামত অনুযায়ী প্রতিনিধি নির্বাচন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যবস্থাকেই গণতন্ত্র বলে। সমবায় সমিতিকে সব সময়ই গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হয়। এর ব্যবস্থাপনা পর্ষদের (Managing committee) নির্বাচনে সকল সদস্য স্বেচ্ছায় তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও গণতান্ত্রিক নীতিমালা অনুসরণ করা হয়।
  • সঞ্চিতি সংরক্ষণঃ সমবায়ের বিধান অনুযায়ী অর্জিত মুনাফার একটা নির্দিষ্ট অংশ বাধ্যতামূলক সংরক্ষণকে সঞ্চিতি সংরক্ষণ এবং এরূপ নীতিকে সঞ্চিতি সংরক্ষণের নীতি বলে। ২০০১ সালের সমস্যা আইনের বিধান অনুযায়ী অর্জিত মুনাফার ১৫% সংরক্ষিত (Reserve) তহবিলে এবং ৩% উন্নয়ন (Development) তহবিলে সংরক্ষণ করতে হয় । সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ কিভাবে ব্যয়িত বা বিনিয়োগ হবে সে বিষয়ে সমবায় উপবিধির বিধান প্রযোজ্য । উন্নয়ন তহবিলের অর্থ সমবায়ীদের প্রশিক্ষণ, উদ্বুদ্ধকরণ ইত্যাদি কাজে ব্যয়যোগ্য।
  • নিরপেক্ষতাঃ কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব না করার নীতিকেই নিরপেক্ষতার নীতি বলে। সমবায়ের অগ্রগতির জন্য একে সব সময়ই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা আবশ্যক। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বা দলের প্রভাব ব্যক্তিবিশেষের মধ্যে অত্যন্ত সক্রিয় থাকলে অনেক সময় তা হীন মানসিকতার জন্ম দেয়। তাই সমবায়কে এর ঊর্ধ্বে উঠে সবার জন্য কল্যাণ ও ভালোবাসা-এ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে হয়।
পরিশেষে বলা যায়, সমবায়ে সফলতা অর্জন করতে হলে উক্ত মূলনীতি বা আদর্শসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করা উচিত। যে সমবায় উক্ত আদর্শসমূহ যত বেশি অনুসরণ করতে পারে কার্যক্ষেত্রে তার পক্ষেই তত সফলতা অর্জন সম্ভব হয়।

সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া

সমবায় সমিতি একটি আইনসৃষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। এটি একাধিক ব্যক্তির সম্মিলিত সহযোগিতায় ও প্রচেষ্টায় গঠিত এবং পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে সমবায় সমিতিসমূহ বর্তমানে সমবায় সমিতি আইন ২০০১ ও সমবায় বিধিমালা ২০০৪ অনুযায়ী গঠিত ও পরিচালিত হয়ে থাকে।

উদ্যোগ গ্রহণ

প্রাথমিক সমবায় সমিতি গঠনের লক্ষ্যে সমশ্রেণি, এলাকা, মর্যাদা বা পেশার চুক্তি সম্পাদনে সক্ষম কমপক্ষে বিশ জন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় একত্রিত হতে হয়। প্রথমে যারা এভাবে সমবেত হয় তাদের উদ্যোক্তা বলে। এ সকল ব্যক্তি নিজেদের মধ্য হতে কমপক্ষে ছয় ও সর্বোচ্চ বারো সদস্য বিশিষ্ট একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে। এরূপ কমিটির মুখ্য পদগুলো হলোঃ
  • একজন চেয়ারম্যান
  • একজন ভাইস চেয়ারম্যান
  • একজন সেক্রেটারি ও
  • অবশিষ্ট সাধারণ সদস্য
অবশ্য এক্ষেত্রে একজন কোষাধ্যক্ষও নিয়োগ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সাধারণ সদস্য সংখ্যা একজন কমে যায়। এ কমিটির প্রধান কাজ হলো সমিতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি খসড়া উপবিধি (By-Laws) তৈরি করা। এতে সমবায় সমিতির নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, মূলধনের পূর্ণ বিবরণ, উদ্যোক্তাদের নাম, ঠিকানা, পদবি এবং সমিতি পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়ম-নীতি লেখা থাকে।


সমিতিটি সসীম দায়সম্পন্ন হলে নামের শেষে সীমিত বা Lid. শব্দের উল্লেখ থাকতে হয়। অবশ্য উদ্যোক্তাগণ ইচ্ছা করলে এরূপ উপবিধি তৈরি না করে সমবায় বিভাগ হতে ছাপানো উপবিধি এবং তা মান্য করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতে পারে। এ পর্যায়ে প্রস্তাবিত সমবায়ের সীলমোহরও তৈরি করা হয়।

নিবন্ধনের আবেদন

এ পর্যায়ে সমিতির কর্তাব্যক্তিগণ সংশ্লিষ্ট এলাকার সমবায় অফিস হতে প্রয়োজনীয় আবেদনপত্রের ফরম সংগ্রহ করে তা পূরণপূর্বক প্রয়োজনীয় দলিলপত্রাদি, ফিসহ নিবন্ধকের নিকট জমা দেয় । আবেদনপত্রের সাথে যে সকল দলিলপত্রাদি জমা দিতে হয় বা বিষয়ের উল্লেখ করতে হয় তা নিম্নরূপঃ
  • সমিতির সদস্যদের নাম, ঠিকানা ও দস্তখত। অবশ্যই প্রাপ্তবয়স্ক কমপক্ষে বিশজন ব্যক্তির নাম ও স্বাক্ষর এক্ষেত্রে থাকতে হয়। স্বাক্ষরের সাথে তারিখের উল্লেখ থাকাও আবশ্যক।
  • সনি উপবিধির তিন কপি। এতেও উদ্যোক্তাদের স্বাক্ষর থাকা আবশ্যক।
  • সমবায় সমিতির সীলমোহরের নমুনা এবং আবেদনপত্রটির আইনগত যথার্থতা সম্পর্কে সম্পাদক ও উদ্যোক্তাদের প্রদত্ত ঘোষণাপত্র।

নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ

উপরোক্ত দলিলপত্রাদি ও ফি প্রাপ্ত হয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিবন্ধক সন্তুষ্ট হলে আবেদনপত্র প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে তা মঞ্জুর করত নিবন্ধনপত্র ইস্যু করেন। অবশ্য আবেদন প্রাপ্তির পর প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্রে ঘাটতি থাকলে নিবন্ধক অনধিক ৩০ দিনের মধ্যে সেগুলো চেয়ে বা প্রয়োজনীয় তদন্ত করে আবেদনপত্রের যথার্থতা নিরূপণ করতে পারেন।


আবেদনপত্র গৃহীত হলে নিবন্ধক নির্ধারিত ফরমে একটি নিবন্ধনপত্র ইস্যু করেন এবং যা নিবন্ধনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সনদ হিসেবে গৃহীত হয়। অতঃপর নিবন্ধক উপবিধির ৩ কপির সকল পৃষ্ঠায় তার স্বাক্ষর ও সীলযুক্ত করে ২ কপি আবেদনকারীদের ফেরত দেন এবং ১ কপি কার্যালয়ে সংরক্ষণ করেন । এর সাথে সমিতির সীলমোহরও নিবন্ধিত হয়েছে গণ্য হয়।

কার্যারম্ভ

নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পর সমিতির আইনগত অস্তিত্বের জন্মলাভ ঘটে। অতঃপর এর ব্যবস্থাপনা কমিটি ও উদ্যোক্তাগণ সমিতির নাম ও সীলমোহর ব্যবহার করে এর পক্ষে যেকোনো আইনানুগ কাজ করার অধিকারী হয়। এরপর সমিতি যথানিয়মে তার কাজ শুরু করে।

সমবায় সমিতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

বিভিন্নমুখী চাপের মুখে অসহায় ক্ষুদ্র উৎপাদক, কারিগর, কুটির শিল্পী ইত্যাদি শ্রেণির মানুষ নিজেদের আর্থিক কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তিতে যে সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে তাই সমবায় সংগঠন । যে সকল উদ্দেশ্য নিয়ে এরূপ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
  • আর্থিক কল্যাণ সাধনঃ সমবায় সংগঠন নিছক মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে গঠিত হয় না বরং এর উদ্দেশ্য হলো সমবায়ীদের আর্থিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। এজন্য উৎপাদক সমবায় সমিতি যেমনি গঠন করা হয় তেমনি বিভিন্নমুখী সুবিধা অর্জনের জন্য ক্রয়, বিক্রয়, ঋণদান প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের সমবায়ও গঠন করা হয়ে থাকে।
  • ঐক্য ও সংহতি সৃষ্টিঃ সমবায়ের অন্যতম মূলমন্ত্র হলো Unity is strength বা একতাই বল। তাই শোষিত ও বঞ্চিত মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে পারস্পরিক সহযোগিতায় নতুনভাবে পথ চলতে উদ্বুদ্ধ করাও সমবায়ের অন্যতম উদ্দেশ্য।
  • সংঘবদ্ধ করাঃ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা জাগ্রত করে তাদেরকে সংগঠিত করার জন্যও সমবায় সমিতি গঠন করা হয়। প্রকৃত অর্থে, সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া কোনো মহৎ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।
  • কর্মস্পৃহা জাগ্রতকরণঃ জীবনযুদ্ধে পরাজিত, হতোদ্যম লোকদের মনে নতুন করে কর্মস্পৃহা জাগ্রত করাও সমবায়ের উদ্দেশ্য। সমবায় মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে ও নতুন অনুপ্রেরণা নিয়ে কাজ করতে উৎসাহ যোগায়।
  • আত্মনির্ভরশীলতা সৃষ্টিঃ সমবায়ীদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলাও সমবায়ের লক্ষ্য। এজন্য সমবায় এর সদস্যদের ছোট ছোট কাজে উদ্বুদ্ধ করে আত্মকর্মসংস্থানের পথ দেখায়।
  • সঞ্চয়ের আগ্রহ সৃষ্টিঃ সমবায় এর সদস্যদের মাঝে সঞ্চয়েও আগ্রহ সৃষ্টি করে। কারণ সমবায়ীদের ছোট ছোট সঞ্চয় হতেই সমবায়ের মূলধন সংগৃহীত হয়। এ ছাড়াও এরূপ সঞ্চয় সমবায়ীদের উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
  • পুঁজিগত সমস্যার সমাধানঃ নিম্নবিত্তসম্পন্ন মানুষ মূলধনের সমস্যায় তাদের সামর্থ্যকে কাজে লাগাতে পারে না। এছাড়া এরূপ সমস্যা তাদেরকে মহাজন ও ধনিক শ্রেণির শোষণের যাঁতাকলে বন্দী করে। তাই সদস্যদের প্রয়োজনীয় পুঁজির সংস্থান করাও এর উদ্দেশ্য।
  • দক্ষতার উন্নয়নঃ সমবায়ের সাথে সম্পৃক্ত ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে শিক্ষাদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করাও সমবায়ের লক্ষ্য। এজন্য সকল সমবায় এর সদস্যদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে। অশিক্ষিত সমবায়ীদের শিক্ষা দেয়ার জন্যও সমবায় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
  • মধ্যস্বত্বভোগীদের উপদ্রব রোধঃ মধ্যস্বত্বভোগীরা নানাভাবে ছোট ছোট উৎপাদনকারীদের তাদের উৎপাদিত সামগ্রীর ন্যায্যমূল্য হতে বঞ্চিত করে। এদের হাত হতে রক্ষা করার জন্যও ক্রয় সমবায় সমিতি বা বিক্রয় সমবায় সমিতি গঠন করা হতে পারে।
  • সামর্থ্যের সমন্বয়ঃ স্বল্পবিত্তসম্পন্ন মানুষের সীমিত সামর্থ্যকে একত্রিত করে বড় ধরনের ব্যবসায় গড়ে তোলাও সমবায়ের লক্ষ্য। এর ফলে বৃহদায়তন ব্যবসায় সুবিধা অর্জন করা যায় এবং সমিতির সামগ্রিক আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • অত্যাচার প্রতিরোধঃ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উৎপাদকগণ উৎপাদন কার্য চালাতে গিয়ে বিভিন্ন পক্ষ হতে নানা ধরনের অত্যাচারের সম্মুখীন হয়। এরূপ অত্যাচার প্রতিরোধ করে। ব্যবসায়কে সহজ ও সুন্দরভাবে এগিয়ে নেয়ার জন্যও সমবায় সমিতি গঠন করা হয়ে থাকে।
উপসংহারে বলা যায়, সমবায় সংগঠন গড়ে তোলার পিছনে সমবায়ীদের বিভিন্ন উদ্দেশ্য কাজ করে। সমবায় উপরোক্ত উদ্দেশ্য অর্জনের সহায়ক বিধায় সারা বিশ্বজুড়েই কমবিত্তসম্পন্ন উৎপাদক, কৃষক, জেলে, তাঁতীসহ বিভিন্ন উপজীবিকার মানুষের নিকট এরূপ সংগঠন বেশ জনপ্রিয়।

শেষ কথাঃ সমবায় সমিতির নীতিমালা - সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া

প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষন আলোচনা করলাম সমবায় সমিতি কি, সমবায় সমিতির বৈশিষ্ট্য, সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে। আশা করি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে সমবায় সমিতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান। এমন বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল করতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন, আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত আমি বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সাথেই থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url