ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আপনি কি ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনাটি খুঁজছেন তাহলে একজন সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা আর্টিকেল এর মাধ্যমে ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনাটি তুলে ধরেছি। আশা করি আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনাটি মুখস্ত করে উপকৃত হবেন।
প্রিয় পাঠক ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনাটি পড়তে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া
যাক।
সূচিপত্রঃ ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
- ভূমিকাঃ ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
- বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা
- বাংলাদেশের ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ
- টেস্ট-ক্রিকেটে বাংলাদেশ
- বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ
- উপসংহারঃ ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
ভূমিকাঃ ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
বর্তমান বিশ্বে ক্রিকেট একটি জনপ্রিয় খেলা। ক্রিকেটকে নিয়ে সারা বিশ্বে
কৌতূহলের শেষ নেই। এই কৌতূহল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে কেন্দ্র
করে। বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে উপমহাদেশে শুরু হয় মাতামাতি। এখন বিশ্বকাপ
ক্রিকেটে। বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশে খেলাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন
করেছে।
বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা
৭০-এর দশকের শেষদিকে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে বাংলাদেশ প্রথম সাংগঠনিক স্বীকৃতি লাভ করে ১৯৭৭ সালের ২৬শে জুলাই। এই
সময় বাংলাদেশ আইসিসি-র সহযোগী সদস্যপদ লাভ করে। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ প্রথম আইসিসি
ট্রফিতে অংশ নেয়। তাতে বাংলাদেশ ফিজি ও মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিল।
এভাবেই ধীরে ধীরে এগোতে থাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
বাংলাদেশের ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ
আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য না হয়েও আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বক্রিকেট অঙ্গনে
বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৮৬ সালে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের মাধ্যমে
শুরু হয় এ যাত্রা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেট যে অভিজ্ঞতা অর্জন
করেছিল তার প্রথম সফল প্রকাশ ঘটেছিল ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে। এ
ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের সংগঠক ও খেলোয়াড়দের ধৈর্য ও পরিশ্রমের অভাবনীয় ফসল।
আইসিসি ট্রফি জয় বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেট মর্যাদা লাভের পথ প্রশস্ত করে। ১৯৯৭
সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে নতুন ঘটনা ঘটে ক্রিকেটের ওয়ানডে পরিবারে
অন্তর্ভুক্তি অর্থাৎ ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভের মাধ্যমে।
টেস্ট-ক্রিকেটে বাংলাদেশ
বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সকে প্রধানত দুটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়।
যথা: ১. টেস্ট স্ট্যাটাস পূর্ববর্তী; ২. টেস্ট স্ট্যাটাস পরবর্তী। বাংলাদেশ
ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ২০০১
সালের মধ্যে কেনিয়া, স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে একবার করে হারিয়েছে। আর টেস্ট
মর্যাদা লাভের পর অর্থাৎ ২০০১ সালের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ওয়ানডেতে
বাংলাদেশের অর্জন মোটামুটি ভালোই।
আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবস রচনা
যদিও মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যান একেবারেই নাজুর অবস্থায়
পড়ে যায়। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে সমালোচকদের তোপের মুখে পড়তে হয়।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড
ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একাধিকবার হোয়াইট ওয়াশ করে। ২০১২ সালের এশিয়া কাপে
বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দেখার মতো। মাত্র ২ রানের জন্য ফাইনাল ম্যাচে বিজয়
অর্জিত হয়নি। ২০১৪ সালের নভেম্বরে হোম সিরিজে ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ
প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করতে সক্ষম হয়।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ
আইসিসি ক্রিকেট জয়ের দুবছর পর ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রথমবারের মতো
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে এবং স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়,
৭ম বিশ্বকাপের ফেভারিট দল পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়ে নতুন চমক ও বিস্ময়ের সৃষ্টি
করে বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালে সূচিত হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের নতুন
অধ্যায়। কিন্তু ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে।
আরও পড়ুনঃ মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার রচনা
দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথে তারা ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অভাবনীয় চমক
সৃষ্টি করে। ফলে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রিকেটের বৈশিষ্ট্য ও নৈপুণ্য
বিশ্লেষণের হিড়িক পড়ে যায়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটেও বাংলাদেশ মোটামুটি
ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে সক্ষম হয়। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের একাদশ আসর হলেও
বাংলাদেশের জন্য পঞ্চম। বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১০৫
রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দেয়।
দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগিতে ১
পয়েন্ট লাভ করে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে হারলেও চতুর্থ ম্যাচে
স্কটল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারায়। পঞ্চম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে
বাংলাদেশ কোয়াটার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা নিশ্চিত করে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ চমৎকার খেলে।
২০১৬ সালে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে এক দিনের
আন্তর্জাতিক সিরিজ জয় করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। অতঃপর পাকিস্তানের সঙ্গে ৩-০ তে
সিরিজ জয় করে অভাবনীয় এক সামর্থ্যের পরিচয় দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ২০১৭
সালে স্মরণীয় সাফল্য অর্জন করে বাংলাদেশ। নিউজিল্যােেক হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন
ট্রফির সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকোষ রচনা
২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশ শততম টেস্ট জয় করে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের
মাটিতে ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয় করে নন্দিত সাফল্য তুলে ধরে। শুধু কি
তাই, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টেস্ট সিরিজ ড্র করে এক অভাবনীয়
সামর্থ্যের পরিচয় দেয় বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের বিশ্বকাপেও
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সামর্থ্যের উত্তাপ ছড়াতে সক্ষম হয়, যা বিশ্বের দৃষ্টি
আকর্ষণ করে।
উপসংহারঃ ক্রিকেটে বাংলাদেশ রচনা
বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের দূত হিসেবে
পরিগণিত হচ্ছে। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশ সামান্য হলেও যে মর্যাদাটুকু লাভ করেছে
তা বাড়িয়ে দিয়েছে দায়িত্ব। এ দায়িত্ব সম্পাদনে, সর্বমুখী ও সর্বাত্মক
প্রচেষ্টার মধ্যেই নিহিত আছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। শুধু ক্রিকেট নয়, সব ধরনের
খেলাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে ভূমিকা
রাখে। আর তাই এ ব্যাপারেও আমরা সচেষ্ট হব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url