ব্যবসায় পরিবেশ কি - ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান
ব্যবসায় পরিবেশ কি এবং ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান সমূহ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলে ব্যবসায় পরিবেশ কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছি। আশা করি আরটিকালের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিবেশ কি এর সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন।
প্রিয় পাঠক ব্যবসায় পরিবেশ কি এবং ব্যবসায় পরিবেশ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে
আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা
না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ ব্যবসায় পরিবেশ কি - ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান
ভূমিকাঃ ব্যবসায় পরিবেশ কি - ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান
এ পৃথিবীর সবকিছুই কার্যত তার পরিপার্শ্বিকতা বা পরিবেশের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়।
পরিবেশের ভালোমন্দ ও শক্তি-দূর্বলতা মানুষের জীবন, আচার-আচরণ, চাষবাস,
ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বত্রই এতটা প্রভাব বিস্তার করে যে, এর প্রভাবকে অস্বীকার করে
মানুষের পক্ষে চলা অসম্ভব। যে কোনো অঞ্চল বা দেশের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য।
পরিবেশের এমন কিছু উপাদান থাকে যা অনুকূল আবার কিছু থাকে প্রতিকূল।
আরও পড়ুনঃ সমবায় সমিতির নীতিমালা
অনুকূল পরিবেশকে সর্বোতভাবে কাজে লাগানো এবং প্রতিকূল পরিবেশের প্রভাবকে ধীরে
ধীরে কমিয়ে আনার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে মানুষ পরিবেশকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকে।
তাই পরিবেশকে বুঝতে না পারলে একে সঠিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হয় না। তাই যে কোনো
শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের তার পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
ব্যবসায় পরিবেশ কি
একটা দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহ যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্য দিয়ে গঠিত ও
পরিচালিত হয় তাকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে। একটা দেশের ব্যবসায় পরিস্থিতি এর
পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান বা শক্তির দ্বারা
সাধারণভাবে প্রভাবিত হয়। এর বাইরে কিছু উপাদান বা শক্তি প্রত্যক্ষভাবে একটা
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে কিছু শক্তি থাকে; যা প্রতিষ্ঠানের
অভ্যন্তরীণ বিষয়।
আরও পড়ুনঃ ব্যবসায় অর্থায়ন কাকে বলে
অন্যদিকে বাহ্যিক কিছু বিষয়ও প্রত্যক্ষভাবে একটা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়
কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে। ব্যবসায়ী পরিবেশ বলতে মূলত দুটি অবস্থা বোঝায় একটি
হচ্ছে দেশের সামগ্রিক ব্যবসায় পরিস্থিতি, যা সাধারন পরিবেশের উপাদান দ্বারা
সৃষ্ট আর অপরটি হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী পরিস্থিতি,
যা প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তারকারী পরিবেশের উপাদান দ্বারা সৃষ্ট। নিচে ব্যবসায়ী
পরিবেশের প্রধান উপাদানসমূহের বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক পরিবেশ
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর, আয়তন, অবস্থান
ইত্যাদির সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে উঠে তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে। পৃথিবীর
বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিচিত্র ধরনের। এ সকল উপাদানের পার্থক্যহেতু
দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে। বাংলাদেশে পাট শিল্প, নরওয়েতে মৎস
শিল্প, কুয়েতে পেট্রোলিয়াম শিল্প গড়ে উঠার পিছনে এরূপ কারণ বিদ্যমান। নেপাল
ভুবেষ্টিত রাষ্ট্র হওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে সুবিধা করতে পারছে না। মধ্যপ্রাচ্যের
দেশগুলো আবহাওয়া ও ভূপ্রকৃতির কারণে কৃষিতে পশ্চাৎপদ।
অর্থনৈতিক পরিবেশ
জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন ও জনসম্পদ ইত্যাদির
ওপর ভিত্তি করে কোনো দেশে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে। যে
দেশে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ ভালো, মূলধনের পরিমাণ আশাব্যঞ্জক, অর্থ ও ঋণ
ব্যবস্থা উন্নত-সেই দেশ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ততই অগ্রগতি লাভ করতে পারে। জাপান
মানব সম্পদের কারণে ব্যবসায়ে উন্নতি লাভ করেছে। সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ার
উন্নতির পিছনে অর্থনৈতিক পরিবেশের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও
আফ্রিকার দেশগুলো অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবের কারণে তা কাজে লাগাতে
পারছে না।
সামাজিক পরিবেশ
সমাজ বলতে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত মানব গোষ্ঠীকে বুঝায়। কোনো সমাজের বা জাতির
মানুষের সংখ্যা, তাদের ধর্ম বিশ্বাস, চিন্তাধারা, মূল্যবোধ, শিক্ষা-সংস্কৃতি,
রীতি-নীতি ও দেশীয় ঐতিহ্য মিলিয়ে যে পারিপার্শ্বিকতা গড়ে ওঠে তাকেই সামাজিক
পরিবেশ বলে। এরূপ পরিবেশও ব্যবসায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে। এরূপ পরিবেশের
দু'টি প্রধান উপাদান নিয়ে আলোচিত হলোঃ
- সাংস্কৃতিক পরিবেশঃ একটা সমাজের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিনে মানুষের মাঝে কিছু ধারণা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও আচরণের ভাবধারা গড়ে ওঠে-এর সম্মিলনে ঐ সমাজে যেই পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকেই সাংস্কৃতিক পরিবেশ বলে। কোনো সমাজের মানুষ মিথ্যা বলা ও অন্যকে ঠকানো গর্হিত কাজ বলে মনে করে আবার কোথাও উল্টো চিত্র বিদ্যমান। আমাদের সমাজে অসাম্প্রদায়িক মনোভাব, পারিবারিক বন্ধনের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার, গতানুগতিক মানসিকতা ইত্যাদি এক ধরনের সামাজিক পরিবেশ ব্যবসায় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
- ধর্মীয় পরিবেশঃ ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মীয় অনুশাসন ও আচার-আচরণ থেকে কোনো সমাজের অভ্যন্তরে যে পারিপার্শ্বিকতার সৃষ্টি হয় তাকে ধর্মীয় পরিবেশ বলে। সকল সমাজেই মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাদের আচরণে প্রভাব বিস্তার করে। হিন্দু সমাজে পূজা- পার্বন, মুসলমান সমাজে নামাজ, রোজা, ঈদ, এভাবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্রার্থনার ভিন্ন নিয়ম-রীতি প্রতিটা সমাজে একটা ভিন্ন পরিবেশের সৃষ্টি করে। বিশ্বাসের কারণেই বৌদ্ধ সমাজে পশু পালন নিরুৎসাহিত হয়। ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণেই তুরস্কে মদশিল্প ব্যাপকভাবে গড়ে উঠেনি।
রাজনৈতিক পরিবেশ
দেশের সার্বভৌমত্ব, সরকারের স্থিতিশীলতা, দৃষ্টিভঙ্গি, নেতৃত্ব ও তাদের
চিন্তা-ভাবনা, আইন-শৃঙ্খলা রাজনৈতিক দল, জন্ম নেয় তাকে রাজনৈতিক পরিবেশ বলে।
অনুন্নত ও অসহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিবেশকে মারাত্মকভাবে
বাধাগ্রস্ত করে। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পথে বড় বাধা রাজনৈতিক হানাহানি ও
এক্ষেত্রে বিরাজমান নেতিবাচক উপাদানের উপস্থিতি। অথচ মালয়েশিয়ার উন্নতিতে
রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইত্যাদি মিলিয়ে যে পারিপার্শ্বিকতার পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রেখেছে।
প্রযুক্তিগত পরিবেশ
বর্তমানকালে ব্যবসায়ের ওপর প্রযুক্তিগত পরিবেশের ব্যাপক প্রভাব লক্ষণীয়।
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, এতদসংক্রান্ত গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার,
প্রযুক্তি আমদানির সূযোগ ইত্যাদি মিলিয়ে সৃষ্ট পরিবেশকে প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলে।
বিজ্ঞান আমাদেরকে নতুন নতুন জ্ঞান শিক্ষা দেয়। কিন্তু এ জ্ঞানের ব্যবহার ঘটে
প্রযুক্তির মাধ্যমে। তাই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে কম খরচে নতুন নতুন পণ্য ও
সেবার উৎপাদন সম্ভব হয়। আর এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও করে। বৃটেন ও মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়নের পিছনে প্রযুক্তিগত পরিবেশের অবদান সবচেয়ে বেশি। বৃটেনে
গ্রীনহাউজ প্রভাব সৃষ্টি করে টমেটো চাষ এই পরিবেশের কারণে সম্ভব হয়েছে।
আইনগত পরিবেশ
জনগণের কল্যাণে সরকার নানান ধরনের আইন ও নীতিমালা পাস করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও
নানান সুযোগ-সুবিধা অর্জনের জন্য আইন ও নীতিমালা পাস করা হয়। আর এ আইন ও
নীতিমালার বেড়াজালের মধ্যে থেকেই সকল আইন ও ব্যবসায়ী ব্যবসায় কার্যক্রম
পরিচালনা করে। এ নীতির সম্মিলনে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে আইনগত পরিবেশ বলে।
আমাদের দেশে গার্মেন্টস শিল্পগুলোতে শিশুশ্রমিক নিয়োগ ও আবাসিক এলাকায় শিল্প
প্রতিষ্ঠায় বাধার মুখ্য কারণ হলো আইনগত পরিবেশ।
ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিদ্যমান অবস্থাবলি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সমন্বয়ে
উক্ত প্রতিষ্ঠানে যে পরিবেশের হয় তাকে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বলে। এরূপ
পরিবেশের উপাদানসমূহ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- মালিক বা শেয়ারহোল্ডারঃ মালিক বা শেয়ারহোল্ডারগণ ব্যবসায়ের মালিক বিধায় তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ব্যবসায় পরিবেশকে প্রভাবিত করে। কোনো দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাগণ যদি দক্ষ ও উত্তম মানসিকতার অধিকারী হয় তবে তা ব্যবসায় পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
- পরিচালনা পর্ষদঃ কোম্পানি সংগঠনে পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের প্রতিনিধি হিসেবে কোম্পানির মৌল নীতি নির্ধারণ, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মৌল দিক-নির্দেশনা প্রদান ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করে। তাই ব্যবসায়ের ওপর পরিচালনা পর্ষদেরও প্রত্যক্ষ প্রভাব সবসময়ই লক্ষণীয়।
- শ্রমিক-কর্মীঃ শ্রমিক-কর্মী এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত সংঘ যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে নিয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আগ্রহ-অনাগ্রহ ব্যবসায়ের কার্যক্রমকে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করে। অভ্যন্তরীণ পরিবেশ উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিষ্ঠান সেজন্য শ্রমিক-কর্মীদের মনোবল উন্নয়ন এবং শ্রম-ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালায়।
- প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সংস্কৃতিঃ দীর্ঘকালে কোনো প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কতকগুলো ধারণা, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও নিয়ম-নীতি গড়ে ওঠে। যার আওতায় প্রতিষ্ঠানের জনশক্তির মানসিক কাঠামো, আচরণের ভাবধারা ও পারস্পরিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। যা কার্যাকার্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবশ্যই এরূপ উপাদানকে বিবেচনায় আনতে হয়।
- প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সুযোগ-সুবিধাঃ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সুযোগ-সুবিধাও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা, যন্ত্রপাতির মান, ব্যবহৃত প্রযুক্তি ও পদ্ধতি, ভৌত সুযোগ-সুবিধা, ব্যবসায়িক সুনাম-সুখ্যাতি ইত্যাদি স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসায়ের কার্যক্রম পরিচালনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে।
ব্যবসায় পরিবেশের বাহ্যিক উপাদান কোনটি
একটা প্রতিষ্ঠানের বাইরের বিভিন্ন অবস্থা এবং পক্ষসমূহের কর্মকাণ্ড ও আচার-আচরণ
প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে যে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে তাকে প্রতিষ্ঠানের
বাহ্যিক পরিবেশ বলে। এরূপ পরিবেশের উপাদানসমূহ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা
করা হলোঃ
- প্রতিযোগীঃ বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায় জগতে প্রতিযোগীদের কর্মকাণ্ড ও কর্মকৌশল কোনো প্রতিষ্ঠান বা এর ব্যবস্থাপনার ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে। প্রতিযোগীরা সব সময়ই প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট উপায়-উপকরণ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাড়াকাড়িতে লিপ্ত হয়। এক্ষেত্রে বাজার, প্রযুক্তি, পদ্ধতি, জনশক্তি ইত্যাদি মুখ্য। নতুন প্রতিযোগী, বিকল্প পণ্য ইত্যাদি নিয়েও এক্ষেত্রে ভাবতে হয়।
- ক্রেতা বা ভোক্তাঃ অর্থের বিনিময়ে যারা পণ্য বা সেবা ক্রয় করে তারা ব্যবসায়ের বাহ্যিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচ্য। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে এই ক্রেতা বা ভোক্তাসাধারণের ইচ্ছা ও আগ্রহের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য নির্ভর করে। তাই তাদের চাহিদা পূরণে, আস্থা অর্জনে এবং কাছাকাছি পৌঁছাতে সবসময়ই প্রতিষ্ঠান সচেষ্ট থাকে।
- সরবরাহকারীঃ কাঁচামাল, পণ্য সরবরাহকারী, ব্যাংকার ইত্যাদি ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট বাহ্যিক পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এরূপ সরবরাহকারীদের সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়িক সাফল্য নির্ভর করে। তাই সরবরাহকারীদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আগ্রহ-অনাগ্রহকেও মূল্য দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।
- মধ্যস্থ ব্যবসায়ীঃ কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি বাজারজাতকরণের (Direct marketing) নীতি গ্রহণ না করলে, ক্রেতা বা ভোক্তা সাধারণের নিকট পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে মধ্যস্থ ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেক্ষেত্রে মধ্যস্থ ব্যবসায়ীদের সংখ্যা, তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আচার-আচরণ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব রাখে।
- কৌশলগত মিত্রঃ যেক্ষেত্রে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মিত্রতার বন্ধন গড়ে ওঠে বা জোটের সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে এরূপ মিত্রদের চিন্তা-ভাবনা ও কর্মকাণ্ড প্রতিষ্ঠান বা এর ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে । ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক প্রয়োজনেই বিভিন্ন দেশে-বিদেশে কৌশলগত মিত্র গড়ে তোলে।
- সরকারি সংস্থাঃ সরকার যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায় খাতকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারি সংস্থার ওপর দায়িত্ব অর্পণ করে তখন এরূপ সংস্থার ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রতিষ্ঠান বা এর ব্যবস্থাপনার ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে। এ ছাড়া ব্যবসায়ের বিভিন্ন খাত সম্পর্কে সরকারের আগ্রহ-অনাগ্রহ ও সরকারি নিয়ম-নীতি ব্যবসায়ে প্রভাব রাখে।
শেষ কথাঃ ব্যবসায় পরিবেশ কি - ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের উপাদান
প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষন আলোচনা করলাম ব্যবসায় পরিবেশ কি, ব্যবসার অভ্যন্তরীণ
পরিবেশের উপাদান এবং ব্যবসায় পরিবেশের বাহ্যিক উপাদান কোনটি এ সম্পর্কে। আশা করি
উক্ত আর্টিকেলটির মাধ্যমে ব্যবসায় পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই
কমেন্ট করে জানান। এমন বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করুন, আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনাদের
সুস্থতা কামনা করা আজকের মত আমি বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সাথেই থাকুন, আল্লাহ
হাফেজ।
সূত্রঃ উক্ত আর্টিকেলের আলোচিত বিষয়বস্তু ব্যবসায় সংগঠন ও
ব্যবস্থাপনা পুস্তক থেকে সংগৃহীত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url