কম্পিউটার রচনা - কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি কম্পিউটার রচনা অথবা কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একজন সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমাদের এই আর্টিকেলে কম্পিউটার রচনাটি তুলে ধরা হয়েছে। আশা করি এই রচনাটি আপনাদেরকে কম্পিউটার সম্পর্কে, কম্পিউটারের আবিষ্কার,
কম্পিউটার রচনা
কম্পিউটারের ব্যবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে ইত্যাদি বিষয় জানতে সহায়তা করবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি কম্পিউটার রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে রচনাটি পড়ে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ কম্পিউটার রচনা - কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন রচনা

ভূমিকা

কম্পিউটার আধুনিক বিজ্ঞান বিশ্বের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এতে দ্রুত উন্নয়নের সীমাহীন উপযোগিতা রয়েছে। সমস্যা সমাধানের ব্যাপকতা এবং বহুগুণ কর্মক্ষমতা কম্পিউটারকে আজকের দিনে করেছে মানুষের নিত্যসঙ্গী। মানবজীবনের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে শুরু করে মহাশূন্যে গবেষণার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

অফিস, আদালত, কলকারখানা, ব্যবসায়-বাণিজ্য সবখানেই কম্পিউারের ব্যবহার মানবজীবনকে অত্যন্ত সুখকর করছে। তাই কম্পিউটার আজকের জগতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে।

কম্পিউটার

কম্পিউটার একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক্স গণক যন্ত্র। কিন্তু এর কাজ শুধু গণনা কাজেই সীমাবদ্ধ নয়। যন্ত্রটি ডাটা গ্রহণ করে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে অতি দ্রুতগতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। কম্পিউটার একটি তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার যাও বাটে।

এতে তথ্য গ্রহণ, তথ্য নির্দেশ এবং তথ্য সংরক্ষণ করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে অগণিত জটিল সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। তাই এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। এর কাজকর্ম বিচিত্রমুখী। হিসেবের যন্ত্র হিসেবে কম্পিউটার যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, সাজিয়ে জটিল অঙ্কের সমাধান করতে পারে। তার বিস্ময়কর ক্ষমতা আছে তথ্যাদির বিশ্লেষণে। তুলনা করা এবং সিদ্ধান্ত প্রদান করা কম্পিউটার করে থাকে।
তার সংযোগ আছে গণিত, যুক্তি ও সিদ্ধান্তমূলক কাজের সঙ্গে। এর কাঠামোতে আছে- সুইচ ভালৰ অথবা ট্রানজিস্টার সার্কিট ইত্যাদি। আরও আছে টাইপ রাইটার, লাইন প্রিন্টার, কার্ড রিডার, কার্ড পাঞ্চিং মেশিন, ম্যাগনেটিক টেপ ইত্যাদি। এসবের যথার্থ সংযোগ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে কম্পিউটার একটি বিচিত্র রূপের যন্ত্র।

কম্পিউটার আবিষ্কার

১৮১২ সালে চার্লস ব্যাবেজ প্রথম আধুনিক ক্যালকুলেটরের মূলনীতি পরিকল্পনা করেন। ১৯৪৪ সালে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় ও আইবিএম কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে ইলেকট্রিক মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি করেন। ১৯৫৭ সালের পর কম্পিউটার যন্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। ১৯৭১ সালের পর থেকে কম্পিউটার জগতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। এরপর থেকে বর্তমান জগতকে কম্পিউটার দখল করে নেয়।

বাংলাদেশে কম্পিউটার

বাংলাদেশে কম্পিউটার এসেছে আশির দশকে। বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে এর আগমন ঘটলেও বর্তমানে তা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়ে অনেক অফিস, আদালত, কলকারখানায় কম্পিউটার তার নিজ আসন করে নিয়েছে। মুদ্রণ শিল্পে কম্পিউটার এক অসাধারণ সফলতা এনে দিয়েছে। কম্পিউটারে বাংলা ব্যবহারের ফলে অফিস-আদালতে দ্রুত এর ব্যবহার বেড়ে গেছে।

বর্তমানে আর্থিক লেনদেনে এসেছে অপরিসীম স্বচ্ছতা। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, এছাড়া ব্যাংক, বিমা প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, সামরিক ও বেসামরিক সকল প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের ছোঁয়ায় ধন্য। এছাড়াও বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য তরুণ প্রজন্ম কম্পিউটারের বদৌলতে আউট-সোর্সিং-এর কাজ করে উপার্জন করছে।
বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্যসেবাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেশের তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ফলে গ্রামে বসেই পৃথিবীর সমস্ত তথ্য জানা যাচ্ছে। তবে এ সাথে এটা মেনে নিতে হবে যে, দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী এখনও কম্পিউটার সেবা থেকে বঞ্চিত। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

কম্পিউটারের উপকারিতা

কম্পিউটার যন্ত্রটি গণনাকারী যন্ত্র হিসেবে তৈরি হলেও আজকের দিনে তাকে কাজে লাগানো হচ্ছে না সেভাবে। কম্পিউটার এখন প্রযুক্তিবিদ্যা, মহাকাশবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা ইত্যাদির ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। কোনো ক্ষেত্রেই কম্পিউটার আজ পিছিয়ে নেই। এখন খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন সবখানেই কম্পিউটার কাজ করছে।
পরিকল্পনা তৈরি, প্রকল্প বিশ্লেষণ, ডাটা সংগ্রহ, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, বাজেট প্রণয়ন, আর্থনীতিক, সামাজিক, কারিগরি, পুস্তক ও পত্রপত্রিকা প্রকাশনা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ইন্টারনেট, শিল্প-বাণিজ্য সংক্রান্ত নানান কাজেই কম্পিউটার আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো মানুষকে সহজেই সবকিছুর সমাধান দিচ্ছে।

উপসংহার

বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার মানুষের বিচিত্র কর্মকাণ্ডে এক বৈপ্লবিক অগ্রগতি সাধন করেছে। আমাদের একসময় আশংকা হয়েছিল যে, কম্পিউটারের ব্যবহারের ফলে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। একথা অবশ্য ঠিক যে, কম্পিউটার কিছু কিছু কর্মক্ষেত্রকে সংকুচিত করেছে।

তবে কম্পিউটারকে ব্যবহার করে যে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেখানে মানুষের কর্মক্ষেত্রে প্রসারিত হচ্ছে। তাই বর্তমান বিশ্বে উন্নতি- অগ্রগতিতে কম্পিউটার অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকেও এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url