ডেটাবেজ কি - dbms বলতে কি বুঝায়

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি জানেন ডাটাবেজ কি? এবং dbms বলতে কি বুঝায়? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকালের মাধ্যমে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। কেননা আমরা এই আর্টিকেলে ডেটাবেজ এবং dbms সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
ডেটাবেজ কি
প্রিয় পাঠক আপনি যদি ডেটাবেজ কি এবং dbms বলতে কি বুঝায় এ সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর বেশি কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ ডেটাবেজ কি - dbms বলতে কি বুঝায়

ভূমিকা

ডেটাবেজকে বলা হয় তথ্যভান্ডার। ডেটাবেজ হলো কম্পিউটারভিত্তিক একটি পদ্ধতি, যার সাহায্যে সংগৃহীত উপাত্ত সংরক্ষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী পুনরুদ্ধার করা যায়। অন্য কথায়, ডেটাবেজ হচ্ছে সংগৃহীত উপাত্তের ভাণ্ডার, যা থেকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিভিন্ন উপায়ে এবং আকারে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

ডেটাবেজ কি

ডেটাবেজ হলো অসংখ্য উপাত্তের একটি সুসজ্জিত তালিকা, যেখান থেকে নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয় কোনো উপাত্তকে দ্রুত এবং খুব সহজেই শনাক্ত করার উপায় বা পন্থা আছে। এ তথ্যভাণ্ডারে বিভিন্ন প্রকার এবং বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা হয়। একজন ব্যবহারকারী তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো তথ্য এ তথ্যভান্ডার থেকে আহরণ বা সংগ্রহ করতে পারেন।

একটি ডেটাবেজ মূলত (কলাম) এবং সোরির সমন্বয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি কলামের একটি করে হেডিং বা শিরোনাম থাকে। এই হেডিং বা শিরোনাম থেকেই বোঝা যায় সেই কলামে কী ধরনের ডেটা বা তথ্য আছে। হেডিং বা শিরোনামগুলো ফিল্ট নামে পরিচিত। আর পাশাপাশি কয়েকটি কলামের সমন্বয়ে গঠিত হয় একটি সারি। প্রতিটি সারিকে বলা হয় রেকর্ড।
এখানে SL No, Name, Age, Date of Birth, Village, Union নামের প্রতিটি কলম হলো এক একটি ফিল্ড এবং এসব ফিল্ডের অধীনে রয়েছে যথাক্রমে Abul Kasem, 27,2/2/1960, Tepra, Kanaihat ইত্যাদি ডেটা। একই সারির এরকম কয়েকটি ফিল্ড মিলে হয় একটি রেকর্ড। উপরের উদাহরণের ডেটাবেজটিতে ৬টি ফিল্ড এবং ৬টি রেকর্ড রয়েছে।

বাটের দশক থেকে কম্পিউটারে ডেটাবেজ ফাইলে ডেটা সংরক্ষণ শুরু হয়। তখন একটি ডেটাটেবিলের সমন্বয়ে একটি ডেটাবেজ গঠিত হতো। কিন্তু বর্তমানে ডেটাবেজ ধারণা অনেক ব্যাপকতা লাভ করেছে। এখন কোনো ডেটাবেজের আওতায় এক বা একাধিক ডেটাটেবিল, কুয়েরি, ফর্ম, রিপোর্ট, ইত্যাদি ফাইল থাকতে পারে। অর্থাৎ ডেটাবেজ হচ্ছে ডেটা তথ্যসমৃদ্ধ এক বা একাধিক ফাইলের সমষ্টি।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ডেটাবেজ প্রোগ্রাম হলো মাইক্রোসফট এক্সেস, ফক্সপ্রো, ডিবেজ, ফক্সরেইজ, ওরাকল, ফোর্থ ডাইমেনশন, প্যারাডক্স প্রভৃতি।

ডেটাবেজ প্রোগ্রামের বৈশিষ্ট্য হলো

প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যে ডেটাবেজ কি এই সম্পর্কে জেনেছি। চলুন তাহলে এবার ডেটাবেজ প্রোগ্রামের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। নিচে ডেটাবেজ প্রোগ্রামের বৈশিষ্ট্য সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
  • ডেটাবেজে বিভিন্ন ধরনের টেবিল তৈরি করে এর মাধ্যমে অগোছানো ডেটাকে সুসংগঠিত করে রাখা যায় এবং পরবর্তী সময়ে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়।
  • ডেটাবেজে সংরক্ষিত অনেক তথ্যের মাঝে থেকে চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো তথ্যকে দ্রুত খুঁজে বের করা যায়।
  • বৃহৎ ডেটাবেজের অসংখ্য রেকর্ড থেকে শুধু প্রয়োজনীয় রেকর্ডসমূহ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করে প্রিন্ট করা যায়। রিপোর্টে পছন্দমতো গ্রাফ, চার্ট এবং ছবি সংযোজন করা যায়।
  • ডেটাবেজ প্রোগ্রামে ডেটা এন্ট্রি করার সময় যাতে ভুল না হয় সেজন্য ফিল্ডে শর্ত দিয়ে ডেটা এন্ট্রির সীমা নির্ধারণ করা যায়। একে ইনপুট ভেলিডেশন বলা হয়।
  • ডেটাবেজ থেকে রেকর্ডসমূহকে আলাদা করে ডেটা টেবিল তৈরি করা যায়।
  • দুই বা ততোধিক টেবিলের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য রিলেশন তৈরি করা যায়।
  • ডেটাবেজ থেকে তথ্য খোঁজ করার জন্য ইন্ডেক্স ব্যবহার করা হয়। কোনো ফিল্ডের উপর ইন্ডেক্স করা হলে উক্ত ফিল্ডের ভেল্যু এবং রেকর্ড রেফারেন্স একটি অর্ডার অনুসারে সজ্জিত হয়। ইন্ডেক্স ফাইল মূল ডেটা ফাইলের কোনো রূপ পরিবর্তন না করে রেকর্ডসমূহ বিভিন্নভাবে সাজাতে পারে। সূচি দেখে কোন বই থেকে যেমন কোনো বিষয় সহজে খুঁজে বের করা যায় (তেমনি ডেটাবেজ থেকেও সহজে তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব)।
  • ফাইলসমূহের মধ্যে লিংক তৈরি করা যায়। ফলে একই তথ্য যেটি লিংক করা অন্যান্য ফাইলে আছে সেটি আপডেট করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব ফাইলেই আপডেট হবে।
  • প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ডেটাবেজে উপাত্তগুলোর রেকর্ড স্ট্রাকচার পরিবর্তন করা যায়। একই কাজ বারবার করতে হয় এমন সব কাজের সমষ্টিকে Macro তৈরির মাধ্যমে একটি Single Action-এ রূপান্তর করে পরবর্তীতে যতবার ইচ্ছা ব্যবহার করা যায়। এতে একদিকে যেমন সময়ের সাশ্রয় হয়, অন্যদিকে তেমনি একই কাজ বারবার করার ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

dbms বলতে কি বুঝায়

dbms এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এর মাধ্যমে একটি প্রোগ্রামে ডাটাবেজ তৈরি করা, প্রসেস করা, ব্যবস্থাপনা এবং তত্ত্বাবধান জাতীয় কাজ করা হয়ে থাকে। একটি সিস্টেম একক ভাবে গড়ে উঠে না। সিস্টেম হলো কতগুলো বিষয়ের সমন্বিত রূপ। তেমনি কতগুলো কম্পিউটার প্রোগ্রামের সমন্বয়ে ডেটাবেজ সিস্টেম গঠিত হয়।
মূলত ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS) ব্যবহারকারী এবং ডেটাবেজের মধ্যে একটি ইন্টারফেস (উভয়দিক সংযোগ রক্ষাকারী) হিসেবে কাজ করে। ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন (যেমন: ডেটা মুছে ফেলা, প্রবেশ, উত্তোলন করা) সম্পন্ন করতে অনুরোধ করে। ব্যবহারকারী কর্তৃক প্রদত্ত অনুরোধগুলো DBMS এর মাধ্যমে ডেটাবেজের উপর কার্যকরী করে ব্যবহারকারীকে প্রয়োজনীয় ডেটা প্রদান করে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমরা এতক্ষন আলোচনা করলাম ডাটাবেজ এবং dbms অর্থাৎ ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর বিষয়ে। আমাদের আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আশা করি খুব তো আর্টিকার এর মাধ্যমে আপনি ডেটাবেজ এবং dbms সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।
আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এমন বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন। আমরা নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে নতুন নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত আমি বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সাথেই থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url