পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। বাংলা পাঠ্য বইয়ের অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে রচনা অন্যতম। আপনি যদি পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা আর্টিকেলে পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনাটি তুলে ধরেছি।
পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। প্রিয় পাঠক পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক হন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে

সূচিপত্রঃ পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা

ভূমিকা

মাতাপিতা সন্তানের জন্মের উৎস ও জীবনের পথপ্রদর্শক। তাঁদের জন্য সন্তানেরা পৃথিবীতে আলো দেখতে পেয়েছে। মা তাঁর দেহের বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে গর্ভস্থ শিশুকে বড়ো করে তোলেন। ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে মা আপন স্তন পান করিয়ে সন্তানদের বড়ো করে তোলেন।

তাঁরা আমাদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য সবরকম চেষ্টা করে থাকেন। অর্থাৎ সন্তান যাতে পৃথিবীতে একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারে সেজন্য পিতামাতা সর্বপ্রকার চেষ্টা করে থাকেন। তাই পিতামাতার প্রতি সন্তানের কর্তবা অসীম। মাতাপিতার সন্তুষ্টি বিধান করা সন্তানদের অপরিহার্য কর্তব্য।

মাতাপিতার ভালোবাসা

সন্তানের প্রতি পিতামাতার ভালোবাসা ও স্নেহ অসীম। তাঁরা সবসময় সন্তানদের মঙ্গল কামনা করেন। সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে মাতাপিতাও চিন্তায় খাওয়াদাওয়া ভুলে যান। সারা রাতদিন জেগে সন্তানের শিয়রে বসে থাকেন। সন্তানকে অভি তাড়াতাড়ি সুস্থ করার জন্য সর্বপ্রকার চেষ্টা করে থাকেন।
সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পর তারা যাতে কোনো প্রকার কষ্ট না পায় সেদিকে সর্বদা সচেতন থাকেন। তাঁরা না খেয়ে সন্তানদের মুখে অন্ন জোগান দেন। মাতাপিতার মতো অভাকাঙ্ক্ষী পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর কেউ নেই । তাই মাতাপিতার আদেশ পালন করা এবং তাদের সন্তুষ্টি বিধান করা আমাদের প্রধান কর্তব্য।

মাতাপিতার প্রতি কর্তব্য

মাতাপিতার প্রতি সন্তানদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হলো তাঁদের আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। তাঁরা সন্তানদের যেসমস্ত কাজ করতে বলবেন সেগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে এবং তাঁরা যেসমস্ত কাজ করতে নিষেধ করবেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে। সন্তানদের কথাটি অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, মাতাপিতা সবসময় তার শুভকামনা করেন।

সন্তানদের জীবন হোক দুঃখ-দুর্দশাময় তা তাদের কখনো কাম্য নয়। তাই মাতাপিতা সন্তানদের যেসমস্ত আদেশ-উপদেশ দেন সেসমস্ত সন্তানদের সঠিকভাবে পালন করতে হবে এবং এর মধ্যে নিহিত রয়েছে সন্তানদের ভবিষ্যৎ সাফল্য।

মাতাপিতার সেবা করা সন্তানদের অবশ্য কর্তব্য। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে হবে। তাদের অতি তাড়াতাড়ি আরোগ্য লাভের জন্য সব রকম চেষ্টা করতে হবে। এতে মাতাপিতা সন্তানের প্রতি অধিক সন্তুষ্ট হন। সন্তানদের আচার-আচরণে মাতাপিতার মনে কষ্ট হলে তারা কোনোদিন জীবনে উন্নতি করতে সক্ষম হবে না।
একমাত্র মাতাপিতার সন্তুষ্টি বিধান এবং তাদের মন জয় করার মধ্যে সন্তানদের সাফল্য নির্ভর করে। আর এর জ্বলন্ত প্রমাণ বায়েজিদ বোস্তামি (র)। মাতাপিতার প্রতি অত্যধিক শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকায় তিনি পৃথিবীতে অমরত্ব লাভ করতে পেরেছেন।

পিতামাতা যখন বৃদ্ধ ও অকর্মণ্য হয়ে পড়েন তখন সযত্নে সেবা করা সন্তানদের কর্তব্য। এসময় পিতামাতা সন্তানদের প্রতি অধিক নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। পিতামাতা বাল্যকালে সন্তানদের যেভাবে লালন-পালন করেন, শীত সহ্য করেও সন্তানদের গরম কাপড় প্রদান করেন, নিজে না খেয়ে সন্তানদের অন্ন জোগান দেন তেমনই মাতাপিতার বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের সেভাবে লালন-পালন করতে হবে।

এতে মাতাপিতা সন্তানদের প্রতি অধিক সন্তুষ্ট থাকেন। আর মাতাপিতার সন্তুষ্টিতেই আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত'। আর সেই পরম পাওয়াকে পেতে হলে অবশ্যই সন্তানদের মাতাপিতার মন জয় করে চলতে হবে।

মাতাপিতার প্রতি অবহেলার পরিণতি

অধুনা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্তানেরা পিতামাতার প্রতি চরম অবহেলা করে। অনেক শিক্ষিত সন্তানও মাতাপিতার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করে। অনেকে আবার শিক্ষা-সংস্কৃতি কিংবা তথাকথিত আধুনিক স্রোতে গা ভাসিয়ে মাতাপিতার প্রতি সামান্য দায়িত্বটুকুও পালন করে না। এ ধরনের সন্তানের মাতাপিতার শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধাশ্রমে ঠাঁই নিতে বাধ্য হয়।
যা সত্যি দুর্ভাগ্যজনক। হাদিসে বলা হয়েছে, 'যে ব্যক্তি মাতাপিতাকে সন্তুষ্ট করেনি সে জগতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা হতভাগ্য।' মাতাপিতার অবাধ্য সন্তানের পতন অবশ্যম্ভাবী। এরূপ দৃষ্টান্ত জগতে অনেক আছে। পক্ষান্তরে যে সন্তান পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল সে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

উপসংহার

মানবসন্তানের কাছে সৃষ্টিকর্তার পরেই মাতাপিতার স্থান। আল্লাহ তালার আনুগত্য স্বীকারের পরেই মাতাপিতার প্রতি যাবতীয় কর্তব্য পালন করা সকল ধর্মেই গুরুত্ব সহকারে বলা আছে। কাজেই সন্তানদের উচিত মাতাপিতার আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকারসহ তাঁদের প্রতি যাবতীয় কর্তব্য পালনে ব্রতী হওয়া। তাহলে তাঁদের ইহলৌকিক ও পরলৌকিক শান্তি অর্জনের পথ সুগম হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url