আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনাটি খুজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনাটি খুব সংক্ষিপ্ত আকারে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো সহ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি যাতে আপনার সঙ্গে মুখস্ত করতে পারেন।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা
প্রিয় পাঠক আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনাটি পড়তে যদি আপনি ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে রচনাটি পড়ে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা

ভূমিকা

প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে আধুনিক জীবন কল্পনা করা যায় না। প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জীবন দিনদিন গতিশীল ও উন্নয়নমুখী হচ্ছে। এ কারণে সমগ্র বিশ্ব টেকনোলজি নির্ভর একটি বিশ্বে পরিণত হচ্ছে। এ যেন আধুনিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। এদিক থেকে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রযুক্তির উদ্ভব

আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যার উৎকর্ষ সাধন হয়েছে আজ থেকে দু'শ বছর আগে। ইংল্যান্ড সর্বপ্রথম এই বিদ্যাকে আত্মস্থ ও কাজে লাগাতে থাকে। প্রযুক্তির প্রসারের ফলে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব ঘটে। নানা প্রকারের আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার মানুষের জীবনকে বদলে দেয়। ইংল্যান্ডের দেখাদেখি পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এর প্রসার দেখা দেয় ও মানুষের জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন সাধিত হয়। নতুন নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ও আবিষ্কারে আধুনিক মানুষের জীবন আরও গতিময় হয়ে উঠছে।

প্রযুক্তির বিকাশসাধন

প্রযুক্তির প্রথম যুগ ছিল বাষ্পীয় ইঞ্জিন ব্যবহারের। এর মাধ্যমে ধীরগতির প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষের জীবনে পরিবর্তন ঘটে। ফসল উৎপাদনের কাজে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হতো। বিদ্যুতের আবিষ্কারের পর শুরু হলো নতুন আরেকটি যুগ । বিদ্যুতের ব্যাপক প্রসারে শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়।

নব নব শিল্পকারখানা স্থাপন ও উৎপাদিত জিনিস মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত করে। বিদ্যুতের সংস্পর্শে মানুষের জীবনের যাত্রা পরিবর্তিত হতে লাগল। পাখা ঘুরলো, বিমান উড়লো, স্টিমার, গাড়ি চললো। মানুষের জীবনে এলো নতুন গতি। তৃতীয় যুগ হলো ইলেকট্রন, প্রোটন ও সৌরশক্তির যুগ। 
আরও পড়ুনঃ সংবাদপত্র রচনা
প্রযুক্তি এসে এ জীবনকে বলীয়ান করে তুলেছে। শুধু বলীয়ান নয়, আধুনিক বিশ্বের আধুনিক মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করেছে প্রযুক্তি। কৃষি, শিল্প ও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নির্মাণ, স্থাপত্য, ব্যাংকিং, যোগাযোগ, পরিবহন, তথ্য- সবক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের জয়জয়কার। প্রযুক্তি এখন পরিণত হয়েছে মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী হিসেবে।

আধুনিক জীবন ও প্রযুক্তি

একুশ শতকের জীবনধারা সম্পূর্ণ বিজ্ঞাননির্ভর। প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের জীবনে সুখ-শান্তি এসেছে। এমনকি মানুষ মানবসভ্যতা ধ্বংসকারী পারমাণবিক বোমা আবিষ্কার করেছে সেও প্রযুক্তির অবদান। শিক্ষা, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা সব কিছুতে মানুষ হয়ে উঠেছে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল।

সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যপ্রযুক্তির যে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে তা প্রযুক্তির অবদান। নগরে আকাশচুম্বী ভবন ওঠে, নাগরিক জীবন যে যানবাহনে চলাচল করে তা পুরোটাই প্রযুক্তির কল্যাণে বয়ে এনেছে মানুষের জীবনে সফলতা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রযুক্তির ছোঁয়া আসার কারণে মানুষের জীবন হয়েছে দীর্ঘায়ুময়।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকোষ রচনা
সহজে জটিল রোগ নিরাময় করা সম্ভব হচ্ছে। প্রযুক্তির কারণে মাথার ওপর ফ্যানের পাখা ঘোরে, ইলেকট্রিক বাতি জ্বলে; হিটার, বৈদ্যুতিক চুল্লি জ্বলে; রেডিয়ো, টিভি, ফ্রিজ চলে৷ অফিস আদালতে যে কম্পিউটার ইন্টারনেট, হিসাব সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাও প্রযুক্তির অবদান। শিল্পাঞ্চলে উৎপাদনের প্রধান চালিকাশক্তি হলো প্রযুক্তি।

গ্রামাঞ্চলে কুটিরশিল্পে রয়েছে প্রযুক্তির ছোয়া। প্রযুক্তি প্রতিদিন কৃষিতেও রাখছে অসামান্য অবদান। সেচকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে গভীর নলকূপ, মোটর, জমি চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর, জমিতে ফসল বপন করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অটোমেটিক মেশিন। এছাড়া জমি থেকে ফসল তোলার কাজে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে কৃষকেরা।

প্রযুক্তির ব্যবহার ও বাংলাদেশ

সরকার প্রযুক্তিনির্ভর একটি আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকারের দিক দিয়ে নানাভাবে বিবেচনা করছে। অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি আবেদন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে। শুরু হয়েছে ডিজিটাল কৃষি শিক্ষাব্যবস্থা। সরকার সারাদেশের জেলা শহরগুলোর তথ্য জানার জন্যে চালু করেছে জেলা তথ্য বাতায়ন নামে একটি ওয়েবসাইট। ইতোমধ্যে সরকার ডিজিটাল জমি জরিপের কাজ হাতে নিয়েছে।
ইতোমধ্যে ই-ভোটিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এভাবে ই-কমার্স, ই-লার্নিং, ই-বুকিং-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ জগতে প্রবেশ করতে পেরেছে। দেশের প্রথম আইসিটি ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কারওয়ান বাজারে। দেশের প্রায় ৬০টি সেবাদাতা ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এখানে কাজ করে চলেছে। প্রায় এক হাজারের বেশি দক্ষ কর্মী ইনকিউবেটরে কাজ করে চলেছে।

উপসংহার

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আধুনিক নাগরিক জীবন গঠন, মানুষের জীবনে সার্বিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ ফিরিয়ে আনতে অবদান রাখছে। ফলে মানুষের জীবন পরিণত হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর এক আধুনিক জীবনে। যেখানে আধুনিক সভ্যতা, যেখানে আধুনিক নাগরিক জীবন সেখানেই ধরে নিতে হবে প্রযুক্তির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কথা। এই প্রযুক্তির আশীর্বাদ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে তা মানবকল্যাণে অপরিহার্য ভূমিকা রাখবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url