দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনা

আস-সালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনাটি খুঁজে থাকে তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা আর্টিকেলে দেশ গঠনের ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনাটি খুব সহজভাবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো দ্বারা তুলে ধরেছি।
দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনা
প্রিয় পাঠক দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনাটি আপনি যদি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে রচনা পড়ে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ দেশ গঠনে ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনা

ভূমিকা

একজন ছাত্র একই সঙ্গে একজন নাগরিক ও দেশপ্রেমিক । আজকের ছাত্ররাই দেশ ও জাতির সম্ভাবনাময় উত্তর প্রজন্ম। তারাই একদিন দেশের কাণ্ডারি হবে; দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দেবে। তাই ছাত্রজীবনে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে জ্ঞানার্জনের সঙ্গে সঙ্গে সততা, নিষ্ঠা, সাহস এবং ত্যাগের মানসিকতা অর্জন করতে হবে।
জ্ঞানশক্তি ও তারুণ্যশক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে ছাত্ররা দেশ ও জাতিকে সাফল্যের স্বর্ণচূড়ায় নিয়ে যেতে সক্ষম। এজন্য প্রয়োজন দেশপ্রেমের মনোভাব নিয়ে আত্মশক্তি অর্জন করা। আর আত্মশক্তি অর্জনের জন্য চাই নিরলস জ্ঞান সাধনা এবং যাবতীয় সদগুণ বিকাশে অব্যাহত প্রচেষ্টা।

ছাত্রসমাজের লক্ষ্য

আজকের দিনে অধ্যয়নই ছাত্রদের একমাত্র তপস্যা হতে পারে না। যদিও অধ্যয়ন ছাত্রের জন্য একান্ত আবশ্যক । দেশকে ফুলে, ফলে সুশোভিত করে তোলার মধ্য দিয়ে নিজের জীবনকেও বিকশিত করে তুলতে হবে। ছাত্রসমাজের মূল লক্ষ্য হবে দেশকে মনের মতো করে গঠন করা।
প্রতিটি ছাত্রেরই জীবনের লক্ষ্য- অনেক বড়ো কবি, সাহিত্যিক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, দার্শনিক যা হোক কিছু একটা হওয়া। তারা লক্ষ্যে পৌঁছে নিজেদের কাজের মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে দেশকেই গঠন করে। তাই গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে, 'Students are the architect of the country.

দেশগঠনে ছাত্রসমাজের করণীয়

আমাদের দেশ যখন পরাধীন ছিল তখন স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ছাত্ররা এগিয়ে এসে গুলি, কামান, বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। আজ আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই দেশের অগ্রগতি, দেশকে সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে গড়ে তোলা এবং দেশ পরিচালনার জন্য ছাত্রসমাজকে তৈরি হতে হবে। কেননা ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার দায়-দায়িত্ব ছাত্রসমাজকেই নিতে হবে। দেশের কৃষ্টি, দেশের শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রভৃতি রক্ষা এবং সংরক্ষণের দায়িত্ব ছাত্রদেরই।

পল্লি উন্নয়নে ছাত্রসমাজ

বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ। কথায় আছে— ৮৫ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। গ্রামের মানুষকে শিক্ষাদীক্ষার মাধ্যমে জাগিয়ে তুলে তাদের জীবনমান উন্নত করতে হবে। তাদের দুঃখ-দুর্দশা ও ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়ে স্বনির্ভর করে তুলতে হবে। তাই এদেশের ছাত্রসমাজকে শহরের চাকচিক্যের মোহ ভুলে গিয়ে গ্রামে ফিরে যাও' নীতি অবলম্বন করে পল্লি উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

স্বাস্থ্য-সচেতনতা বৃদ্ধি

একজন সুস্থ মানুষ মানে একজন দেশ গড়ার যোগ্য সৈনিক। সুতরাং জনসাধারণের বিশেষত পল্লিগ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি বিধানে সচেষ্ট হতে হবে। কেননা দেশের সিংহভাগ মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। ছাত্ররাই গ্রামে গ্রামে সেবাকেন্দ্র খুলে সরকার থেকে টিকা, ইনজেকশন, বিভিন্ন প্রকার ঔষধ সংগ্রহ করে তা রোগীদের মাঝে বিতরণ করতে পারে। দেশের আর্তপীড়িতের সেবায় আত্মনিয়োগ করে জনগণের অশেষ কল্যাণ সাধনে এগিয়ে আসতে পারে ছাত্রসমাজ।

দুস্থ ও দুর্গত মানুষের সেবা

আমাদের সমাজে অসহায়, দুস্থ ও অভাবী মানুষের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত। এ সকল মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে ছাত্রসমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে।

শিক্ষাবিস্তার

শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। অতএব, শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার মহান দায়িত্ব ছাত্রদের। নিরক্ষর বয়স্ক লোকদের এবং বালকদের জন্য গ্রামে ও শহরের মহল্লার জনগণের সহযোগিতায় নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন করে বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষাদানে ছাত্রসমাজকে উদ্যোগ নিতে হবে।

শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়ন

ছাত্ররা দেশের শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়ন সাধনে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করা যায়। গ্রামে বা মহল্লায় বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্ররা জনগণের সাংস্কৃতিক চেতনা জাগ্রত করতে পারে। এছাড়া তাদের দ্বারা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে। জড়িত থেকে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।

দেশ রক্ষায় ছাত্রসমাজ

জন্মভূমি মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এদেশের ছাত্রসমাজই প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। ছাত্রসমাজের এ গৌরবময় ভূমিকার কথা জাতি কোনোদিনও ভুলবে না। দেশের স্বাধীনতা পেতে যে ত্যাগ করতে হয়েছে এখন দেশকে গড়ে তোলার জন্য অধিক তারও অধিক ত্যাগ প্রয়োজন। এজন্য আমাদের ছাত্রসমাজকে অবশ্যই তৈরি থাকতে হবে।

উপসংহার

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও আমরা এদেশকে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। আমাদের দেশের ছাত্রসমাজ সচেতন হলে, দেশের প্রতি তাদের সঠিক দায়িত্ব পালন করলে, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব। এ দৃঢ় সংকল্পে ছাত্রদের এগিয়ে আসতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url