চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনাটি তুলে ধরেছি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা গুলোর মধ্যে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনাটি অন্যতম।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন
তাহলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে
আর সময় নষ্ট না করে রচনাটি পড়ে নেওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান রচনা
ভূমিকা
সভ্যতার চরম উৎকর্ষে বিজ্ঞান একমাত্র নিয়ামক। ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে মানুষকে
পৌঁছে দিয়েছে আধুনিক সভ্যতার মণিকোঠায়। মানুষ ও তার জীবনদানকারী সভ্যতাকে
অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে এসেছে বিজ্ঞান। এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞানের বিস্ময়কর
আবিষ্কার চিকিৎসা ব্যবস্থায় এনে দিয়েছে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
আরও পড়ুনঃ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা
ফলে যেসব দুরারোগ্য ব্যাধি একদিন নিশ্চিত মৃত্যুর কারণ ছিল সেগুলো এখন অনায়াসে
নিরাময়যোগ্য। বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ণয়, রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নিরাময়, শিশুমৃত্যু
হ্রাস এবং মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি করতে চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান আশীর্বাদরূপে
আবির্ভূত হয়েছে। আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার পূর্বে মানুষের বাঁচা-মরা নির্ভর করত
সেকেলে অপচিকিৎসা কিংবা সনাতন চিকিৎসার ওপর।
আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সূচনা
প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যর্থতা দূর করতে বিজ্ঞাননির্ভর আধুনিক
চিকিৎসাব্যবস্থার উদ্ভব হয়। এক্ষেত্রে লোকজ চিকিৎসার পরিবর্তে হোমিওপ্যাথিক ও
অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার প্রবর্তন হওয়ার ফলে মানুষ সনাতন প্রচলিত পদ্ধতি, ধর্মীয়
বিশ্বাস ও সামাজিক সংস্কারের ওপর নির্ভর না করে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সুফল
ভোগ করতে থাকে।
বৈজ্ঞানিক গবেষণার দ্বারা পেনিসিলিন, অ্যাসিপিরিন, ক্লোরোমাইসিন, ট্রেপটোমাইসিন
প্রভৃতি ওষুধ আবিষ্কৃত হয়। তাই আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার সূচনায় বিজ্ঞানের অবদান
অনস্বীকার্য।
রোগ নির্ণয়ে বিজ্ঞান
রোগ নিরাময়ের পূর্বশর্তই হলো রোগ নির্ণয়। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে না পারলে
সুচিকিৎসা করা একেবারেই সমবে না। রোগ নির্ণয়ে বিজ্ঞান অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন
করেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার- রঞ্জন রশ্মি, এক্সরে, ইসিজি, সিটি
ফ্যান, মাইক্রোস্কোপ, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, এনজিওগ্রাফি, এমআরআই ইত্যাদির মাধ্যমে
মানবশরীরে পরীক্ষা চালিয়ে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে।
কম্পিউটার প্রযুক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিয়ে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মানবদেহের
প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও দেহাভ্যন্তরস্থ সূক্ষ্ম ত্রুটি- বিচ্যুতিও কম্পিউটার
ব্যবহৃত ডায়াগনস্টিক সিস্টেমের কল্যাণে দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
রোগ প্রতিরোধে বিজ্ঞান
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান রোগ প্রতিরোধের বিভিন্ন উপায় আবিষ্কার করে মানুষকে
ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিয়েছে। নির্দ্বিধায় বলা যায় এটা বিজ্ঞানের এক অসাধারণ
অবদান। নানা ধরনের টিকা আবিষ্কারের ফলে মানবদেহের ভেতরেই রোগ- জীবাণুকে ধ্বংস
করার প্রতিরোধ শক্তি হিসেবে কাজ করছে। বিসিজি টিকার আবিষ্কার যক্ষ্মা রোগ
প্রতিরোধে অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার
এছাড়াও, হাম, পোলিও, ডিপথেরিয়া, বসন্ত, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস
ইত্যাদি জটিল রোগগুলো প্রতিরোধের জন্য প্রতিষেধক টিকার ব্যবস্থা হয়েছে। বর্তমানে
বিজ্ঞানীরা ক্যানসার ও এইডস এর জীবাণু প্রতিরোধকারী টিকা আবিষ্কারের জন্য নিরন্তর
গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রোগ নিরাময়ে বিজ্ঞান
বিজ্ঞানের কল্যাণেই মানুষের দুরারোগ্য ব্যাধি আজ নিরাময়যোগ্য হয়ে উঠেছে। রোগ
নিরাময়ে আশ্চর্য ও জাদুকরী ক্ষমতাসম্পন্ন বিভিন্ন ওষুধ আবিষ্কার বিজ্ঞানের এক
অপরিসীম সাফল্য। বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতির ফলেই পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন,
ক্লোরোমাইসিন প্রভৃতি মহৌষধ উদ্ভাবিত হয়েছে। এছাড়াও জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা,
কাশি, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক ইত্যাদি ছোটোখাটো অসুখের অনেক প্রকার ওষুধের আবিষ্কার
বিজ্ঞানের কল্যাণেই সাধিত হয়েছে।
রোগের আগাম প্রতিরোধ ব্যবস্থা
আজ বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন যে, রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রথম ধাপে
প্রতিরোধ করতে পারাই শ্রেয়। এজন্য তারা মানুষের জেনেটিক গঠনের ওপর অধিক গুরুত্ব
দিচ্ছেন। সাধারণত মানবশিশু জন্মের সময় যদি জিনগত রোগগুলো শনাক্ত করা যায় এবং
পরবর্তী সময়ে সেগুলো সোমাটিক থেরাপির মধ্য দিয়ে নির্মূল করা সম্ভব।
তাই বলা যায় সেদিন আর খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন শিশুর জন্মের পর হাসপাতাল বা
মাতৃসদন থেকেই চিকিৎসকরা ওই শিশুর ক্রোমোজোম অ্যানালিসিসের বিস্তারিত রিপোর্ট
দিতে পারবেন।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গুরুত্ব
বিজ্ঞান বিশ্বসভ্যতার জন্য একাধারে আশীর্বাদ ও অভিশাপ হলেও চিকিৎসাক্ষেত্রে
বিজ্ঞান শুধু আশীর্বাদই নিয়ে এসেছে। মানবসভ্যতার বিগত সাত-আট হাজার বছরের
ইতিহাসে চিকিৎসাশাস্ত্রের যে উন্নতি হয়েছে তা সত্যিই কল্পনাতীত। বিশ শতকের
শুরুতে চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান আমূল পরিবর্তন সাধন করেছে এবং উত্তরোত্তর আরও
উন্নতি সাধন করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাই চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গুরুত্ব
অপরিসীম।
উপসংহার
চিকিৎসাব্যবস্থায় বিজ্ঞান এক অবিস্মরণীয় নাম। মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবন এখন
চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে অনেক বেশি। নিরাপদ ও সুরক্ষিত। সর্বোপরি,
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষ অকালমৃত্যুকে রোধ করতে সক্ষম হয়েছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞান এখন মানবজাতিকে স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
লেখকের মন্তব্যঃ আমাদের
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি
আর্টিকেলে উল্লেখিত রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অন্যদের
সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের ফুটবল রচনা
এমন বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন টপিক সম্পর্কে আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি
ভিজিট করতে পারেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত নতুন নতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে
থাকি। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত আমি বিদায় নিচ্ছি। আমাদের সাথেই
থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url