সময়ের মূল্য রচনা - সময়ের মূল্য রচনা ক্লাস 4
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি সময়ের মূল্য রচনাটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে
থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলে সময়ের মূল্য
রচনাটি তুলে ধরেছি। রচনাটি খুব সংক্ষিপ্ত আকারে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণী থেকে শুরু করে নবম শ্রেণী পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের জন্যই রচনাটি
প্রযোজ্য। প্রিয় পাঠক আপনি যদি রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
সূচিপত্রঃ সময়ের মূল্য রচনা - সময়ের মূল্য রচনা ক্লাস 4
ভূমিকা
Time and tide wait for none.' অর্থাৎ সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে
না। এটি চিরন্তন সত্য কথা। মানুষের আয়ু বা জীবনকাল সীমিত। কিন্তু মানুষের এই
সীমাবদ্ধ জীবনে অনেক কাজ, অনেক দায়িত্ব। তাই প্রতিটি মুহূর্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ ও
মূল্যবান। এই মূল্যবান সময় বা মুহূর্তকে যথাযথভাবে কাজে না লাগিয়ে হেলায় অতিবাহিত
করলে জীবনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ পিতা মাতার প্রতি কর্তব্য রচনা
পরবর্তী সময়ে এই ক্ষতির জন্য আফসোস করা যায় ঠিকই কিন্তু সেই সময়কে আর ফিরিয়ে আনা
যায় না। তাই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বা সময়ের মূল্য অপরিসীম। কোনো পার্থিব
সম্পদের মানদণ্ডে সময়ের মূল্য নিরূপণ করা সম্ভব নয়। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে
সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত। এ প্রসঙ্গে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন-
কারো পানে ফিরে চাহিবার
নাই যে সময়
নাই নাই।
মানব জীবন ও সময়
জীবনকে সার্থক ও পরিপূর্ণ করতে হলে সময়ের মূল্য সম্বন্ধে সচেতন থাকতে হবে।
মানুষের আয়ুষ্কাল সীমিত। অথচ তার সম্মুখে বিশাল কর্মক্ষেত্র। কাজেই এই সীমিত
সময়ের মধ্যে তাকে সমুদয় কর্ম সুচারুভাবে সম্পাদন করতে হবে।
কর্মহীন বা কর্মবিমুখ জীবন অসার ও নিরর্থক। মানুষের খাওয়া, পরা, শোয়া, ঘুম
প্রভৃতির যেমন নির্দিষ্ট সময় আছে তেমনই অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্যও সময়কে ভাগ
করে নেওয়া দরকার। জীবনের লক্ষ্য স্থির করে কর্তব্য অনুযায়ী সময়কে ভাগ করে জীবনে
সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। এলোমেলোভাবে কাজ করলে কিংবা লক্ষ্যহীনভাবে কাজ করলে কোনো
কাজেই সফলতা আসে না।
আরও পড়ুনঃ স্বদেশপ্রেম রচনা
এতে সময়ের অপচয় হয়। কাজেই সময়ের সদ্ব্যবহার করতে হলে জীবনের লক্ষ্য বা কাজের
লক্ষ্য আগে নির্ধারণ করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত কাজ সম্পাদন করার
জন্য বিশেষভাবে যত্নবান হতে হবে। আমরা সময়ের মূল্য বুঝি না বলেই সময়ের সদ্ব্যবহার
করতে পারি না। ফলে বহু অমূল্য সময় অযথা নষ্ট হয়ে যায়।
সময়ের মূল্য সম্বন্ধে সচেতনতা মানুষের জীবনে সাফল্যের মাপকাঠি। মহাপুরুষ ও
বিখ্যাত মনীষী কিংবা পৃথিবীর খ্যাতিমান ব্যক্তিদের জীবনী পড়লে দেখা যায় যে তাঁরা
যে সময়ে যে কাজটি করা প্রয়োজন মনে করতেন ঠিক সেই সময়েই করতেন। আজকের কাজ আগামী
দিনের জন্য ফেলে রাখতেন না। নির্দিষ্ট সময়ে কর্তব্য সম্পাদন করা ছিল তাঁদের
জীবনের বৈশিষ্ট্য।
জাতীয় জীবনে সময়ের গুরুত্ব
জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য সময়ের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যে জাতির সময়-জ্ঞান নেই
সে জাতি কখনোই তার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারে না। কাজেই জাতীয় জীবনে সময়কে
কাজে লাগাতে হবে। সময় যেন এক শস্যক্ষেত্র। মানুষ ইচ্ছা করলে এই ক্ষেত্রে
মহামূল্যবান সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে।
আবার অবহেলা করলে এই মূল্যবান ক্ষেত্র আগাছায় ভরে যায়, তখন সময় যেমন বিফলে যায়
তেমনই জীবনও হয় ব্যর্থ। অথচ আমাদের এ সম্বন্ধে কোনো সচেতনতা নেই। সময়ের কাজ সময়ে
না করাই বাঙালির স্বভাব। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপানি প্রভৃতি দেশ আজ
উন্নতির উচ্চশিখরে আরোহণ করছে। এর মূলে রয়েছে সময়ানুবর্তিতা বা সময় জ্ঞান।
আরও পড়ুনঃ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা
জাপানি জাতি সময়ের মূল্য বুঝেই আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতির গৌরব অর্জন করেছে।
ইংরেজরা সময়ানুবর্তিতার বলে পৃথিবী শাসন করেছে। অথচ বাঙালি আজও আলস্যে কত
মূল্যবান সময় নষ্ট করে। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পরেও আমরা কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছতে
পারিনি। সময়ানুবর্তিতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এ থেকে মুক্তি সম্ভব।
উপসংহার
বিশ্বের উন্নত জাতি কিংবা দেশসমূহের উন্নতির মূলে রয়েছে সময় সম্বন্ধে সচেতনতা।
তাদের কাছে পার্থিব সম্পদের মধ্যে সময় অধিক মূল্যবান বলেই তারা আজ পৃথিবীর
শ্রেষ্ঠ জাতি এবং উন্নত দেশ হিসেবে সমগ্র পৃথিবীর ওপর কর্তৃত্ব করছে।
পক্ষান্তরে, আমরা বাঙালিরা সময়ের মূল্য বুঝি না বলেই দুঃখ-দুর্দশা আমাদের
নিত্যসঙ্গী। কাজেই ব্যক্তিগত এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে সাফল্য আনতে হলে সময়ের মূল্য
সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আমাদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার ছাত্রদের সময়ের
সুষ্ঠ ব্যবহার করা একান্ত আবশ্যক।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url