নিয়মানুবর্তিতা অনুচ্ছেদ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি নিয়মানুবর্তিতা
অনুচ্ছেদটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে
এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলের নিয়মানুবর্তিতা অনুচ্ছেদটি তুলে
ধরেছি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ গুলোর মধ্যে এটি
অন্যতম।
আশা করি অনুচ্ছেদটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি
যদি নিয়মানুবর্তিতা অনুচ্ছেদটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে
আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে
আর কথা না বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।
নিয়মানুবর্তিতা অনুচ্ছেদ
মানবসভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মানুষ যতদিন স্বেচ্ছায় নিয়ম ও
সংযমের বাঁধন মেনে নেয়নি, ততদিন সে ছিল অসহায়। মানুষ ক্রমে নিয়মানুবর্তী ও
সুশৃঙ্খল হয়ে সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছে। যেকোনো একটি স্থির উদ্দেশ্যে পৌছাতে হলে
শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা অপরিহার্য। নিয়ম ও শৃঙ্খলার ভেতর দিয়েই মানুষ তার
অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা যত প্রয়োজনীয়, সমাজ 'জীবনেও এর
প্রয়োজনীয়তা কোনো অংশে কম নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের উন্নতি নির্ভর করে এর
শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার ওপর। পৃথিবীটাই একটা নিয়মের রাজত্ব। জগতের গ্রহ,
নক্ষত্র সমস্তই নিয়মে চলছে, ঋতুচক্রও নিয়মে আবর্তিত হচ্ছে। তাই তো জগৎ এত সুন্দর,
এত মধুর। মানুষের এই যে সমাজবদ্ধ জীবন এটা তো তাদের শৃঙ্খলাবোধেরই পরিচয়।
পারিবারিক ও সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলা এবং প্রচলিত আইনকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল
থাকার মাধ্যমে শৃঙ্খলাবোধ অর্জন করা যায়। বিশ্বজগতের স্বাভাবিক বিধিবিধানগুলো
লক্ষ করলে বোঝা যায় যে সবকিছুই একটা নিয়মের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। প্রকৃতির জগতে
সবকিছুই সুশৃঙ্খল ও সুনিয়ন্ত্রিত। দিবারাত্রির সংঘটন, ঋতুর আবর্তন প্রভৃতি বিষয়ের
প্রতি লক্ষ করলে শৃঙ্খলা সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা যায়।
আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবস অনুচ্ছেদ
তাই পরিবার, সমাজ ও প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে শৃঙ্খলাবোধ
আত্মস্থ করা উচিত। ছাত্রজীবনে শৃঙ্খলাবোধ থাকা আবশ্যক। পাঠ অনুশীলন,
শ্রেণি-কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, খেলাধুলা প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রীদের কিছু
নিয়মের মধ্য দিয়ে চলতে হয়। মূলত ছাত্রজীবনেই জীবনের সুশৃঙ্খল ভিত রচিত হয়। সময়ের
কাজ যথাসময়ে করা এবং নিয়মের অনুবর্তী হয়ে চলার মাধ্যমে শৃঙ্খলা অর্জিত হয়।
শৃঙ্খলা মেনে না চললে ছাত্রদের মেধা ও শক্তির বিকাশ ঘটে না।
বস্তুত ছাত্রজীবন হলো জীবনগঠনের প্রথম পর্ব। তাই জীবনের এ পর্বে শৃঙ্খলাবোধের বীজ
বপন করে জীবনকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে হবে। নিয়ম-শৃঙ্খলা ছাড়া ব্যক্তিগত ও
সামাজিক জীবন যে পঙ্গু হয়ে পড়ে তা আমাদের দেশের শাস্ত্রকারগণ ভালোভাবেই বুঝতে
পেরেছিলেন। তাই তাঁরা আচার-আচরণে সর্বত্রই নিয়ম ও শৃঙ্খলার চর্চা করে গেছেন।
শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত তাঁদের জীবন থেকে পাওয়া যায়। এজন্য
আপন গৃহ থেকেই এগুলোর চর্চা করা প্রয়োজন।
জাতীয় জীবনে আজ জোয়ার এসেছে। আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক। কিন্তু একথা ভুললে
চলবে না যে, স্বাধীনতার অর্থ উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রত্যেককেই
সংহত, সংযত, নিয়মানুবর্তী ও সুশৃঙ্খল হতে হবে। এজন্য প্রত্যেককে কতকগুলো
নিয়মকানুন ধৈর্যের সঙ্গে মেনে চলতে হবে। তবেই দেখা দেবে সফলতা। আমাদের
অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে পারে বিশৃঙ্খলা। আর তাই স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান
হওয়া ও মাদকমুক্ত জীবনযাপন অবশ্যই শৃঙ্খলাবোধের পর্যায়ভুক্ত।
আরও পড়ুনঃ
শ্রমের মর্যাদা অনুচ্ছেদ
কায়িক পরিশ্রম কখনো মানুষকে ছোটো করে না, বরং স্বাস্থ্যের জন্য তা জরুরি। এভাবে
শারীরিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা সম্ভব। বিশৃঙ্খলা পরিহার করে জীবনকে সুন্দর করার
জন্য শৃঙ্খলাবোধের বিকল্প নেই। সুশৃঙ্খল জীবনে প্রতিটি মুহূর্তের সদ্ব্যবহার হয়।
মহান ব্যক্তিদের জীবনে তা দেখা যায়। চিন্তা ও কর্মে শৃঙ্খলা অনুসরণ করলে মানুষ
মহৎ এবং কর্তব্যপরায়ণ ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। দায়িত্বের প্রতি সৎ
ও একাগ্র থাকাটাও শৃঙ্খলার এক মৌলিক অংশ।
নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্য সুশৃঙ্খল জীবনযাপন অপরিহার্য।
মানবজীবনের সাফল্যের জন্য শৃঙ্খলার কোনো বিকল্প নেই। অমার্জিত আচরণ,
জোর-জবরদস্তি, হিংস্রতা, অবৈধ পেশিশক্তি মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে। এতে জাতীয়
অগ্রগতি ব্যাহত হয়। তাই ব্যক্তিজীবন ও জাতীয় জীবনে শৃঙ্খলাবোধ জাগ্রত করে চিন্তা,
কর্ম ও আচরণে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জাতীয় অগ্রগতি সাধন করা সম্ভব।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url