খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনুচ্ছেদ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা
অনুচ্ছেদটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে
এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা
অনুচ্ছেদটি তুলে ধরেছি।
আশা করি অনুচ্ছেদটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি
যদি খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনুচ্ছেদটি পড়তে চান তাহলে আমাদের এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা না
বাড়িয়ে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।
খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনুচ্ছেদ
খেলাধুলা নিছক আনন্দের বিষয় নয়, এর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে দৈহিক সুস্থতা ও মানসিক
পরিতৃপ্তি। সুন্দর ও সুস্থ জীবনের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
জ্ঞানার্জনের জন্য যেমন জ্ঞানচর্চা আবশ্যক তেমনই সুস্থ দেহ-মনের জন্য খেলাধুলা বা
শরীরচর্চা প্রয়োজন। সুস্থ-সবল দেহ গঠনের জন্য এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য
খেলাধুলার বিকল্প নেই। শরীরকে সবল ও কর্মক্ষম রাখতে নিয়মিত এবং পরিমিত খেলাধুলা
করা চাই।
দেহের কোষগুলোর পুষ্টিসাধনের জন্যও খেলাধুলা করা আবশ্যক। এতে শরীরচর্চার কাজটি
সহজেই হয়ে যায়। খেলাধুলা শরীরের রোগ-ব্যাধি দূরীকরণের সহায়ক। হৃৎপিণ্ডের ও
ফুসফুসের বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজন রয়েছে। সাঁতারের
মাধ্যমে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। খেলাধুলা মানবদেহের অতিরিক্ত মেদ ও
চর্বি দূর করে। সুন্দর ও সুঠাম শরীর গঠনে খেলাধুলার কার্যকর প্রভাব রয়েছে।
মানুষের দেহ ও মনের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।
আরও পড়ুনঃ সততা অনুচ্ছেদ
দেহ সুস্থ-সবল থাকলে মানসিক প্রসন্নতা বিরাজ করে। মনের সতেজতা ও প্রাণময়তা রক্ষায়
খেলাধুলার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। কোনো কোনো খেলাধুলায় মানুষের বুদ্ধিমত্তার বিকাশ
ঘটে। মানসিক শক্তি অর্জন, ধৈর্য ও সহনশীলতা বৃদ্ধি, আত্মবিশ্বাসী হওয়া,
দুশ্চিন্তা দূরীকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে খেলাধুলা সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সুস্থ
প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মানসিক প্রসন্নতা অর্জন করা যায়। মানসিক শক্তি অর্জনে
খেলাধুলার অসামান্য ভূমিকা রয়েছে।
শিক্ষার সঙ্গে আনন্দের সম্পর্ক রয়েছে। একঘেয়ে নিরানন্দ শিক্ষায় শিশুর মানসিক
বিকাশ বিঘ্নিত হয়। তাই আজকাল শিশুশিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে আনন্দ উপাদানের আশ্রয়
নেওয়া হয়। উন্নত বিশ্বে শিক্ষাকে আনন্দায়ক ও আকর্ষণীয় করার জন্য খেলাধুলাকে
যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সাথে খেলাধুলাতে যুক্ত রাখার
অভিপ্রায় থেকেই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশের
গ্রামে-
গঞ্জে গড়ে ওঠা প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর অধিকাংশেরই ছোটো-বড়ো খেলার মাঠ
রয়েছে। মূলত শিক্ষাকে আনন্দপূর্ণ ও আকর্ষণীয় করার জন্যই এ ব্যবস্থা। আজকাল অনেক
স্কুল-কলেজে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ছাত্রছাত্রীদের দাবা, টেবিল টেনিস, ক্যারাম
ইত্যাদি খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। শিক্ষাকে একঘেয়েমি মুক্ত রাখতে প্রতিবছর ক্রীড়া ও
সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
খেলাধুলা মানুষের চরিত্র গঠনের সহায়ক। এর মাধ্যমে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার অভ্যাস
গড়ে ওঠে। দলপতির অধীনে দলবদ্ধ হয়ে খেলতে গিয়ে খেলোয়াড়রা পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে
কাজ করার শিক্ষা অর্জন করে। দলীয় খেলায় খেলোয়াড়দের মধ্যে ঐক্য চেতনা জাগ্রত হয়।
কোচ, আম্পায়ার ও রেফারিকে মান্য করতে গিয়ে মান্যতাবোধ জন্মে। দলকে নেতৃত্ব দিতে
গিয়ে নেতৃত্বগুণ সৃষ্টি ও বিকশিত হয়। খেলার মাধ্যমে ধৈর্য, সংযম ও নিয়মানুবর্তিতা
শেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ নিয়মানুবর্তিতা অনুচ্ছেদ
খেলাধুলার মধ্য দিয়ে মানুষে মানুষে, দেশে দেশে প্রীতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মানব-মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্ব সৃষ্টিতে খেলাধুলার রয়েছে ইতিবাচক ভূমিকা।
জাতি-ধর্ম-বর্ণের পার্থক্য ঘুচিয়ে খেলাধুলা মানবজাতিকে মহামিলনের জয়গান শোনায়।
২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকের অনুপম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববাসী অনুভব করেছে
দেশভেদ জাতিভেদ সত্ত্বেও মানুষ এক ও অভিন্ন সত্তা। অলিম্পিক, ক্রিকেট ও ফুটবল
বিশ্বকাপ, ইউরোপিয়ান গেমস,
এশিয়ান গেমস ইত্যাদি আন্তর্জাতিক খেলাধুলার আয়োজন মানুষে মানুষে সাম্য, মৈত্রী ও
সৌভ্রাতৃত্ব জাগিয়ে তোলে শরীর গঠন ও মনের আনন্দ বিধানের জন্য খেলাধুলা আবশ্যক।
ব্যক্তিত্বের বিকাশ, সম্প্রীতিবোধ অর্জন ও জাতি-ধর্ম- বর্ণের বিভেদ দূরীকরণে
খেলাধুলার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। খেলাধুলার মাধ্যমে মানুষ দায়িত্বশীল হয়ে ওঠে।
ঐক্যচেতনা জাগরণেও খেলাধুলার কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। তাই জাতীয় জীবনে খেলাধুলার
প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url