ইন্টারনেট রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি ইন্টারনেট রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম
সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন, কেননা আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য ইন্টারনেট
রচনাটি তুলে ধরেছি। বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে ইন্টারনেটের ভূমিকা অপরিসীম।
আশা করি রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ইন্টারনেট রচনাটি
পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ
পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।
সূচিপত্রঃ ইন্টারনেট রচনা
ভূমিকা
মানবসভ্যতা আজ চরম সার্থকতার ছোঁয়া পেয়েছে। এ সার্থকতার শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ
ইন্টারনেট। তথ্যপ্রযুক্তির এ ক্ষেত্র সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি
মানুষের জীবনে চলার পথকে অভাবনীয় রূপে সহজতর করে তুলেছে। অধুনা যোগাযোগ ব্যবস্থায়
ইন্টারনেট এক যুগান্তকারী বিপ্লব সাধন করেছে।
ইন্টারনেট
ইন্টারনেট একটি জটিল সমন্বিত বিষয়। অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্বব্যাপী
বৃহৎ কম্পিউটার নেটওয়ার্কই ইন্টারনেট। অর্থাৎ ইন্টারনেট হলো নেটওয়ার্কের
নেটওয়ার্ক। নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারগুলো অন্যান্য নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারের
সাথে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই ইন্টারনেটের কাজ।
ইন্টারনেটের আদিকথা
পারমাণবিক আক্রমণ প্রতিহত, বৈজ্ঞানিক তথ্য ও অন্যান্য তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট উদ্ভাবন করে। প্রথম দিকে
এটি পরিচিত ছিল 'মিলনেট' নামে। সামরিক উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট উদ্ভাবিত হলেও সময়ের
চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমান্বয়ে এটি সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ে।
ইন্টারনেটের বিকাশ
সত্তর ও আশির দশকে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ
নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। আশির দশকের শেষার্ধে স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা হ্রাস
পেলে নেটওয়ার্কগুলো বেসামরিক বা সাধারণের ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়।
কম্পিউটারের ও সেই সঙ্গে নেটওয়ার্কিং সফ্টওয়্যারের দ্রুত উন্নতির ফলে ইন্টারনেটের
জনপ্রিয়তা ও প্রসার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় আট কোটির মতো
কম্পিউটার ব্যবহারকারী ইন্টারনেটের আওতাভুক্ত। এ সংখ্যা দিন দিন দ্রুত বৃদ্ধি
পাচ্ছে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার
গোটা বিশ্ব যেখানে ইন্টারনেটের বদৌলতে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- সেখানে
সংগত কারণেই বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকতে পারে না। ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝিতে প্রথম
ইন্টারনেটের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা ঘটে। প্রাথমিকভাবে টিএন্ডটি বোর্ড,
আইএসএন, রয়টারসহ মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ভিস্যাট স্থাপনের অনুমতি প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুনঃ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (BTRC)-এর হিসেব মতে বর্তমানে বাংলাদেশে
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ১২ লাখ ৮৮ হাজার। তবে এটাও আশাপ্রদ কোনো
বিষয় নয় বরং দেশ-জাতি সামগ্রিক উন্নয়নে ইন্টারনেট সেবা প্রতিটি মানুষের কাছে
পৌঁছে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে আমাদের জোর তৎপরতা চালাতে হবে।
ইন্টারনেটের উপকারিতা
একবিংশ শতাব্দীর আজকের বিশ্বে ইন্টারনেটের বহুমুখী উপকারিতা বিদ্যমান। যোগাযোগের
ক্ষেত্রে ইন্টারনেট এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে দিয়েছে। ইন্টারনেট চোখের পলকে
বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্যাদি আদান-প্রদান করে থাকে। রাজনীতিক,
আর্থনীতিক, শিক্ষা, চিকিৎসা, বিনোদন ইত্যাদিতে এর অবদান অপরিসীম।
ইন্টারনেটের অপকারিতা
ইন্টারনেটের সাহায্যে অনেক ধ্বংসাত্মক কাজ করা সম্ভব। ইদানীং ইন্টারনেটের মাধ্যমে
মিথ্যা তথ্য সরবরাহ, পর্নো ছবি দেখা, জুয়া খেলা ইত্যাদির কালচার বাড়ছে। ১৯৮৮ সালে
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে
ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ ইন্টারনেট ওয়ার্ম নামক ভাইরাস ঢোকায়। ফলে বহু কম্পিউটার নষ্ট
হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০টি ব্যবহার
অন্য একটি ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন তেরো বছর বয়সী স্কুল ছাত্র তাদের স্কুলে
বোমা রেখে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। দু'একটা
নয়, এমন বহু উদাহরণ রয়েছে। প্রকৃত বিচারে ইন্টারনেটের কোনো অপকারিতা নেই।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অসৎ উদ্দেশ্যের মধ্যেই এর অপকারিতা নিহিত। ইন্টারনেটের
তথাকথিত অপকারিতার জন্য ইন্টারনেট দায়ী নয়, দায়ী এর ব্যবহারকারী।
উপসংহার
বিজ্ঞানের বিস্ময়কর উপহার ইন্টারনেট। ইন্টারনেট বিশ্বের এক প্রান্তের মানুষের
সঙ্গে অন্য প্রান্তের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা অভাবনীয়রূপে সহজ করে দিয়েছে, বলতে
গেলে গোটা বিশ্বকে একটি পরিবারে পরিণত করেছে। বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বে এর ছোঁয়া
লাগলেও মাত্রা খুবই কম। আগামী দিনে ইন্টারনেটের ব্যবহারে উন্নত বিশ্বের সাথে
আমরাও যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারি- এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url