কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনাটি খুঁজে থাকেন
তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। বাংলা পাঠ্য বইয়ের অন্যান্য যে সকল
গুরুত্বপূর্ণ রচনা রয়েছে এর মধ্যে কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনাটি অন্যতম।
আমরা এই আর্টিকেলে কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনাটি তুলে ধরেছি। আশা করি রচনাটি আপনাদের
উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি রচনাটি করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের
এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা
যাক।
সূচিপত্রঃ কৃষি কাজে বিজ্ঞান রচনা
ভূমিকা
বিজ্ঞান শব্দের অর্থ হলো বিশেষ জ্ঞান। বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর
সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। জীবনের সকল ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর বিকাশ মানুষের
জীবনকে করে তুলেছে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। বিজ্ঞানের ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক দিক থাকলেও
এর কল্যাণকর বৈশিষ্ট্য মানবজীবনকে সমৃদ্ধ করেছে। সর্বত্র এখন বিজ্ঞানের জয়-জয়কার।
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার পরশ মানুষের প্রাচীন পেশা কৃষিক্ষেত্রেও এনেছে আমূল
পরিবর্তন।
কৃষি আধুনিকায়নে বিজ্ঞান
আজ বিজ্ঞানের প্রভাবে কৃষিকার্য আদিম জ্বর কাটিয়ে আধুনিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে কৃষিবিপ্লবের মাধ্যমে কৃষির
আধুনিকায়নের সূচনা ঘটেছে। কাঠের লাঙলের পরিবর্তে মানুষের হাতে চলে আসে কলের লাঙল,
ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ইত্যাদি। সনাতনী সেচ ব্যবস্থায় এখন ব্যবহার করা হয়
বিদ্যুৎ শক্তিচালিত পাম্প,
আরও পড়ুনঃ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা
ডিজেল চালিত সেচ মেশিন। বিজ্ঞানীরা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আকাশ হতে কৃত্রিম
বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে কৃষিক্ষেত্রে কল্পনাতীত অগ্রগতি অর্জন করেছে। উন্নতজাতের
হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে। সাম্প্রতিকালে বিশ্বের মরু অঞ্চলে
চাষাবাদের প্রচেষ্টাসহ কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বহুমাত্রিক জয়যাত্রা
দিন দিন ত্বরান্বিত হচ্ছে।
উন্নত দেশসমূহে কৃষিকাজে বিজ্ঞান
উন্নত দেশসমূহে কৃষিকার্যে যুগন্তকারী বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। জমি কর্ষণ, বীজ বপন,
সেচ কার্য, কনল কর্তন, মাড়াই এবং বাছাইসহ সব কাজ এখন যন্ত্রের সাহায্যে সম্পাদন
করা হয়। জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সার দেওয়া এবং পোকা দমনের জন্য
ঔষধ ছিটানোর কাজও যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়।
আরও পড়ুনঃ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা
আধুনিক কৃষিকার্যে ব্যবহৃত যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে- শল্য ছেদনকারী মোয়ার, ফসল
কর্তনকারী রপার, ফসল বাঁধার যন্ত্র বাইন্ডার, শস্য মাড়াই যন্ত্র থ্রেশিং, সার
ছিটানোর মেশিন ম্যানিউর স্প্রেডার প্রভৃতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা,
অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, জাপান প্রভৃতি দেশ কৃষিকার্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে
উন্নতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাংলাদেশের কৃষিতে বিজ্ঞানের ব্যবহার
বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থা এখনও পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। তা সত্ত্বেও এদেশের
কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ একেবারে অপ্রতুল নয়। কৃষিবিজ্ঞানে
বৈশ্বিক পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করেছে। ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে
প্রথম প্রযুক্তিগত পরিকল্পনা হলো জমি নির্বাচন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে জমির
উপযোগিতা নির্বাচন করে জমিতে বীজ বপন করা হলে উত্তম ফসল প্রত্যাশা করা যায়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বর্তমানে বিভিন্ন অঞ্চলে এ কার্যক্রম পরিচালনা
করছে। ফসল উৎপাদনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো জমি কর্ষণ। বর্তমানে বাংলাদেশে
ভূমি চষে ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার ব্যবহৃত হচ্ছে। আমাদের দেশে ইরি-বোরো ফসল
পুরোপুরি সেচ নির্ভর। সেচ কাজে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বাংলাদেশে
কৃষিকাজে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের সেচ প্রকল্পগুলোর মধ্যে
মেঘনা, ধনাগোদা প্রকল্প,
আরও পড়ুনঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা
মনু ব্যাবেজ, তিস্তা ব্যারেজ একর উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এ
পর্যন্ত কয়েকশ উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে। তার মধ্যে বিধি- ২৬,
বিরি-২৮, বিরি-২৯, গাজী, ইরাটন, আলোক ধান উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে জেনেটিক
টেকনোলজির মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে বীজ ও জাত উন্নয়নের অভাবনীয় সাফল্য অর্জনের জোর
প্রচেষ্টা চলছে। এছাড়াও সার, কীটনাশক, বালাই দমন, নিড়ানি, ফসল চাষ, কর্তন ও মাড়াই
যন্ত্রের ব্যবহারে বাংলাদেশের কৃষি অনেক উন্নতি লাভ করেছে।
উপসংহার
কৃষিকাজে আধুনিক বিজ্ঞানের ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত হলে বাংলাদেশের খাদ্য সমস্যার
সমাধান করা সম্ভব। অন্যদিকে বেকার সমস্যায় জর্জরিত এদেশে অনেক বেকারের
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কৃষকদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ও বৈজ্ঞানিক
পদ্ধতিতে চাষাবাদের কাজে উৎসাহী করে তুলতে হবে। কৃষিপ্রধান এই বাংলাদেশে
কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সফল প্রয়োগ ঘটিয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url