বসন্তকাল অনুচ্ছেদ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি বসন্তকাল অনুচ্ছেদটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন, কেননা আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদের জন্য বসন্তকাল অনুচ্ছেদটি তুলে ধরেছি।
বসন্তকাল অনুচ্ছেদ
আশা করি অনুচ্ছেদটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি বসন্তকাল অনুচ্ছেদটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

বসন্তকাল

ষড়ঋতুর অনির্বচনীয় শোভাযাত্রায় বর্ণ-গন্ধ-গানের বৈচিত্র্য-বিলসিত অপরূপ জয়ধ্বজা উড়িয়ে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ফাল্গুন ও চৈত্র- দুমাস বসন্তকাল। এটি বছরের ষষ্ঠ ও শেষ ঋতু। বসন্তের গলায় যৌবনের জয়ের মালা। মাঘের সূর্যের দক্ষিণায়নের দিন শেষ হয়ে উত্তরায়ণের পালা শুরু হলেই শীতের প্রাবল্য হ্রাস পেতে থাকে। দক্ষিণ দিক থেকে বইতে শুরু করে অত্যন্ত মৃদুমন্দ মলয় বাতাস। সমগ্র জীবজগৎ রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে তার অনুভূতি-প্রগাঢ় স্পর্শে। দিকে-দিগন্তরে, বনে-বনান্তরে, শ্যামল প্রান্তরে, আম্রকুঞ্জে, নদী-লহরিতে, গন্ধ-বিধুর আকাশে-বাতাসে প্রবল জয়ধ্বনির মধ্যে আসে ঋতুরাজ বসন্তের প্রবল প্রাণোচ্ছ্বাস। কুঞ্জবনের কুসুম-অঞ্জলি ছাপিয়ে যায়। ধৈর্যবিহীন পলাশ-কাননে রঙের তুফানে, মাতাল দখিন বাতাসে কচি পাতার নাচে, উড্ডীয়মান আনন্দোচ্ছল প্রজাপতির রঙিন পাখায়, মৌমাছিদের ক্লান্তিবিহীন গুঞ্জরণে, দোয়েল-কোয়েলের বিরামবিহীন গানের মূর্ছনায় ধরিত্রীর মৃন্ময় পাত্র যেন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। অশোক-শিমুল-কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম উচ্ছ্বাসে, মধুমালতি ও মাধবী-মঞ্জরির অজস্র বাচালতায়, বকুল-পারুল-চাঁপা-করবীর উত্থালপাথাল গন্ধের বন্যায় সারা গগনতলে গন্ধ ও বর্ণের তুমুল কোলাহলে শুরু হয়ে যায় এক আশ্চর্য গন্ধর্ব-নৃত্য। দূর বনান্তরাল থেকে ভেসে আসা কোকিলের কুহুগীতি পৃথিবীতে সৃষ্টি করে এক মায়াময় স্বপ্নলোক। তবে বসন্তের ডালিতে শুধু আনন্দের উপহারই নেই, আছে কিছু নিরানন্দেরও আভাস। এই সময় শীতের প্রাবল্য হ্রাস পেয়ে হঠাৎ উত্তাপের প্রতিক্রিয়ায় জীবজগতে পরিলক্ষিত হয় নানা মারাত্মক রোগের প্রাদুর্ভাব। বসন্ত, কলেরা, টাইফয়েড, ইনফ্লুয়েঞ্জার আক্রমণে আক্রান্ত হয় অনেকেই। আনন্দের মধ্যে নিরানন্দের এই আভাসটুকু বসন্তের বিষাদের দিক। তবু তারই মধ্যে জলে-স্থলে-বনতলে, বাংলার ঘরে ঘরে জাগে দোলের উল্লাস- হোলির মাতন। বসন্ত-উৎসব, শিবরাত্রি, বাসন্তীপূজা এবং চড়কের গাজন বসন্তের উৎসবের ডালি ভরে দেয়। আম-জাম-লিচুর বন বিনত হয় অফুরন্ত ফলের ভারে। সরষে, কলাই ইত্যাদি রবিশস্যে এবং বোরো ও উচ্চফলনশীল ধানের মঞ্জরিতে বসন্ত ভরে দিয়ে যায় বঙ্গলক্ষ্মীর অকৃপণ ফসলের ভান্ডার। এইভাবে বিচিত্র রঙে-রসে-ভাবে-গন্ধে-গানে-আনন্দে-উল্লাসে পৃথিবীর মাটির পাত্র কানায় কানায় পূর্ণ করে দেয় বসন্ত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url