ভাবসম্প্রসারণ ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সকল শিক্ষার্থীদের কেই ভাব সম্প্রসারণ পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবসম্প্রসারণ তুলে ধরেছি। ভাব সম্প্রসারণ টি হচ্ছে ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ।
ভাবসম্প্রসারণ ভোগে নয় ত্যাগেই প্রকৃত সুখ
আশা করি ভাব সম্প্রসারণ কি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি এই ভাব সম্প্রসারণটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ

ভোগ-বিলাসিতার মধ্যে নয়, বরং ত্যাগের মধ্যে নিহিত থাকে মনুষ্যত্ব। তাই ত্যাগই হোক জীবন সাধনার মূলমন্ত্র।
ভোগ ও ত্যাগ বিপরীতমুখী দুটি সত্তা। মানুষের মধ্যে দুটি সত্তাই বিদ্যমান। ভোগ ও ত্যাগের দুয়ার সবার জন্য খোলা। মানুষ ভোগের মধ্য দিয়ে ক্ষণিকের আনন্দ পায় বটে; কিন্তু সে আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী নয়। আর ভোগে তৃপ্তির অভাব থাকে। অন্যদিকে, ত্যাগে থাকে স্থায়ী আনন্দু আর অপরিসীম তৃপ্তি। ভোগ মানুষকে দৈহিকভাবে সবল করলেও ত্যাগ মানুষের নৈতিক শক্তি সঞ্চার করে তাকে প্রাণবন্ত এবং সতেজ রাখে। সুতরাং মনুষ্যত্বের প্রয়োজনে ত্যাগের সাধনা হওয়া উচিত। পৃথিবীতে মানুষ শুধু জন্ম নিলেই মানুষ হয় না; বরং ত্যাগই মানুষকে তার যথার্থ পরিচয় দিতে পারে। অন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের পার্থক্য এই যে, মানুষ ত্যাগ করতে পারে। আর ত্যাগেই গড়ে ওঠে মনুষ্যত্ব- এখানেই মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। অন্যদিকে, ভোগের মধ্য দিয়ে মানুষ নানাবিধ পাপ- পঙ্কিলতা, গ্লানি আর কালিমায় জড়িয়ে পড়ে। ভোগবাদী মানুষ স্বার্থবাদী হতে বাধ্য; কেননা, ত্যাগ ছাড়া পরোপকার সম্ভব নয়, অন্যের মঙ্গল কামনাও সম্ভব নয়। সুতরাং ভোগের চর্চা একটি সমাজে ক্রমশ জন্ম দেয় দুর্নীতি, চৌর্যবৃত্তিসহ নানাবিধ অরাজকতা। আধুনিক বিশ্ব যতই সভ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষের ভোগের মাত্রা ততই বেড়ে যাচ্ছে। এ দৃষ্টান্ত মোটেই সুখকর নয়। বরং বৃহত্তর কল্যাণে ত্যাগের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু পৃথিবী প্রতিনিয়ত নানা প্রচার-প্রচারণায় ভোগের বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। বাহ্যিক দিক থেকে যেমন মাত্রাতিরিক্ত ভোগ মানবদেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করতে পারে তেমনই শুধু ভোগ মানুষের মনুষ্যত্বকে পঙ্গু করে দেয়। মানুষ তখন নিজের সুখ আর আরাম-আয়েশকে মুখ্য করে দেখে। মানুষের সমস্ত গুণ বিকশিত হতে ভোগাসক্ত জীবন মারাত্মক বিঘ্ন ঘটায়। কিন্তু মানুষের জন্ম তো শুধু নিজের আরাম-আয়েশকে লক্ষ করেই নয়; তাকে ভাবতে হবে গরিব- দুঃখী মানুষের কথা, পরোপকারের কথা, সমাজের হিত সাধনের কথা- তবেই তো সার্থক মানব জনম।
বস্তুত ত্যাগই দিতে পারে মনুষ্যত্ব বিকাশের সমস্ত উপকরণ। আর মনুষ্যত্বেই আছে মানুষের প্রকৃত সুখ। সুতরাং ভোগ নয় ত্যাগই প্রতিটি মানুষের সাধনা হোক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url