সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত ভাবসম্প্রসারণ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আমাদের সকল শিক্ষার্থীদের কে পরীক্ষার জন্য কোন না
কোন ভাব সম্প্রসারণ পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি সুশিক্ষিত লোক মাত্রই
স্বশিক্ষিত ভাব সম্প্রসারণটি খুজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন
কেননা আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের জন্য এই ভাব সম্প্রসারণটি তুলে ধরেছি।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাব সম্প্রসারণ গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। আশা করি এটি
আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ভাব সম্প্রসারণটি করতে ইচ্ছুক হয়ে
থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত
শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে সুশিক্ষিত হওয়া যায় না। জীবনের বাস্তবতায়
মনের তাগিদে অর্জিত জ্ঞানের বিকাশ দ্বারা প্রকৃত শিক্ষিত হওয়া সম্ভব।
শিক্ষা জীবনের জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। জগৎ ও জীবনকে বাস্তব স্বরূপে চেনা-জানার
জন্য এবং সর্বোপরি সামাজিক মানুষ হিসেবে মূল্যবোধ অর্জনের জন্য শিক্ষার একান্ত
প্রয়োজন। অন্তরকে বিকশিত করাই এর উদ্দেশ্য। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ মানবিক আচরণে
অভ্যন্ত হয় এবং নিজেকে জগৎ ও জীবনের উপযোগী করে তোলে। কিন্তু শুধু প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষার দ্বারা তা সম্ভব নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে বটে; কিন্তু এর
পরিসর সীমিত। মানুষ প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে প্রয়োজনের তাগিদে নয়; অন্তরের
প্রেরণায়। 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা' থেকে নিজের চেষ্টা, সাধনা ও অভিজ্ঞতা দ্বারা এ
শিক্ষা অর্জিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষের মনকে ধনের প্রতি আকৃষ্ট করে
উপার্জনমুখী করে। ফলে মানুষ খেয়ে-পরে বাঁচার জন্য এ শিক্ষা অর্জনে বাধ্য হয়। এতে
উপার্জনের পথ সুগম হলেও মানুষের আচরণের পরিবর্তন খুব একটা হয় না। তাই প্রায়শ দেখা
যায়, বড়ো বড়ো ডিগ্রিধারী ব্যক্তি জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মূর্খের মতো আচরণ করে।
আমাদের সমাজে এমন অনেকেই রয়েছে যাঁদের উচ্চতর ডিগ্রি আছে, কিন্তু দেশ ও জাতির
কল্যাণে তারা কোনো অবদান রাখতে পারেনি। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাদের
সুশিক্ষিত করতে পারেনি। ফলে জীর্ণ লোকাচার ও অন্ধ কুসংস্কারের দেয়াল ডিঙানো তাদের
পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তারা এই আধুনিক যুগের মানুষ হয়েও প্রাগ্রসর চিন্তার ধারক
হতে পারেনি। এটি তাদের সুশিক্ষার অভাবের ফল। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছেন, যারা
প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ ডিগ্রি অর্জন না করেও সংস্কারমুক্ত জীবনের অধিকারী হয়েছেন।
তারা নিজের চেষ্টায় শিক্ষালাভ করে জগৎ ও জীবনকে আলোকিত করে জগদ্বিখ্যাত হয়েছেন।
অ্যারিস্টটল, সক্রেটিস, প্লেটো, নিউটন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল প্রমুখ ছিলেন
স্বশিক্ষিত। তারা জগৎ ও জীবন থেকে নিজের চেষ্টায় জ্ঞানার্জন করে স্বশিক্ষিত
হয়েছিলেন। তাই তারা মরেও অমর। তাদের কীর্তিগাথা আজও মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।
নিজের চেষ্টায় অর্জিত শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা। স্বশিক্ষিত লোকের জ্ঞানের আলোই
মানবজাতিকে আলোকিত জীবন ও ভুবনের সন্ধান দিতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url