কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারণ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারণ টি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য কীর্তিমানের মৃত্যু নেই ভাবসম্প্রসারণটি তুলে ধরেছি। বাংলা পাঠ্য বইয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যেসব সম্প্রসারণ রয়েছে এর মধ্যে এটি অন্যতম।
আশা করি ভাবসম্প্রসারণ টি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ভাব সম্প্রসারণটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর বৃথা সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

মূলভাবঃ মানবজীবনে কর্মই মূল্যায়নের মানদণ্ড। কর্মের মহিমাই মানুষকে যুগ-যুগান্তর ধরে বাঁচিয়ে রাখে। সীমাবদ্ধ জীবনে মানুষ তার মহৎকর্মের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে অনন্তকাল স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাবঃ মৃত্যুর মধ্য দিয়েই মানুষ পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয়, কিন্তু পেছনে পড়ে থাকে তার মহৎকর্মের ফসল- যে কর্মের জন্য পরলোকগত হওয়ার পরও মানুষ পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকে। এমন শ্রদ্ধাভাজন অমর ব্যক্তিত্বই মানবসমাজে ধন্য বলে বিবেচিত। বস্তুত মানুষের জীবনকে দীর্ঘ সময়ের সীমারেখা দিয়ে পরিমাপ করা যায় না। কেউ যদি তার পূর্ণাঙ্গ যাপিত জীবনে কোনো ভালো কাজ না করে থাকে, তবে সে জীবন অর্থহীন, নিষ্ফল। এমন নিষ্ফল জীবনের অধিকারী মানুষকে কেউ মনে রাখে না। এমন নিরর্থক জীবন নীরবেই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যে মানুষ জীবনকে কর্মমুখর করে রাখে এবং যার কাজের মাধ্যমে জগৎ ও জীবনের উপকার সাধিত হয় তাকে বিশ্বের মানুষ অন্তর থেকে ভালোবাসে এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। আসলে কীর্তিমানের মৃত্যু তার দেহের ধ্বংসসাধন করে মাত্র, কিন্তু তার অম্লান কীর্তি পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখে। এমন মহামানবের মৃত্যুর শত শত বছর পরেও মানুষ তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, মানবজীবনের প্রকৃত সার্থকতা একমাত্র কর্ম সাফল্যের ওপরই নির্ভরশীল। মূলত একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং সে সময়সীমা পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয় তাকে। এই সীমাবদ্ধ সংক্ষিপ্ত জীবনে কেউ যদি গৌরবজনক কর্মে জীবনকে মহিমান্বিত করে তুলতে সক্ষম হয়, তবে তার নশ্বর দেহের বিনাশ হলেও তার স্বকীয় সত্তা থাকে মৃত্যুহীন। পৃথিবীতে এরকম বহু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিগণ তাদের গৌরবজনক কীর্তির জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও কর্মের মাধ্যমে চির অমর হয়ে আছেন। জর্জ ওয়াশিংটন একজন সামান্য কৃষকের ঘরে জন্মগ্রহণ করেও স্বীয় কর্মবলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য, কিটস, ডিরোজিও- ত্রিশ বছর বয়সও পাননি; অথচ কর্মগুণে তারা আজও অমর হয়ে আছেন। ইতিহাসের পাতায় এরূপ শতসহস্র মহামানবের দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা মহৎ কীর্তিগাথার জন্য পৃথিবীতে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাই তো কবি মধুসূদন বলেছেন, 'সেই ধন্য নরকুলে, লোকে যারে নাহি ভুলে, মনের মন্দিরে নিত্য সেবে সর্বজন।'
মন্তব্যঃ তাই মহৎ কর্মের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করে মৃত্যুর পরেও মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়াই মনুষ্যজীবনের পরম উদ্দেশ্য ও প্রকৃত সার্থকতা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url