দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ ভাবসম্প্রসারণ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি দশের, লাঠি একের বোঝা অথবা দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ ভাবসম্প্রসারণ টি খুঁজছেন। যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য এই উক্ত ভাবসম্প্রসারণটি তুলে ধরেছি।
দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাব সম্প্রসারণের মধ্যে এটি অন্যতম। আশা করি ভাব সম্প্রসারণটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ভাব সম্প্রসারণটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ

ঐক্যই শক্তি। পৃথিবীতে যে ব্যক্তি একা, নিঃসঙ্গ; তিনি অবশ্যই অসহায়। ঐক্যবদ্ধ জীবনস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন বলে সে শক্তিতে দুর্বল এবং সামাজিকভাবে তুচ্ছ। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে সফলতা না পেলেও ব্যর্থতার গ্লানি মানুষকে স্নান করতে পারে না।
পৃথিবীতে কোনো মানুষই বৃহত্তর শক্তির অধিকারী হতে পারে না। একজন মানুষ যখন একা, তখন তার শক্তি থাকে সীমিত। এই সীমিত শক্তি নিয়ে কখনই তিনি বড়ো কোনো প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারেন না। কিন্তু যখন একতাবদ্ধ হয়ে দশজন একসঙ্গে কোনো কাজে হাত দেন, তখন তারা অনেক শক্তিশালী। এই একতাবদ্ধ শক্তি রূপ নেয় প্রচণ্ড শক্তিতে। গড়ে ওঠে শক্তির এক বিশাল দুর্গ। তখন যেকোনো কঠিন কাজ সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। পৃথিবীর সেই সূচনালগ্নে যখন আদিম মানুষ নিজেকে একা একা বড়ো অসহায় মনে করতো, সমস্ত প্রতিকূলতায় মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়তো, তখনই তারা ঐক্যবদ্ধ শক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল। এভাবেই মানুষ একসময়ে সমাজবদ্ধ এবং সমাজের সম্মিলিত শক্তি দিয়ে সমন্ত প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে আজকের সভ্যতার জন্ম দিয়েছে। মহাকাশের দিকে চোখ রাখলে আমরা দেখি রাতের আঁধারে অসংখ্য তারার আলোয় পৃথিবী আলোকিত। সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছেও মানুষ ঐক্যবদ্ধ শক্তির প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে অনুভব করল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এর প্রয়োজনীয়তা আরও তীব্রভাবে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিল। দ্বন্দ্ব-সংঘাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ নয়, বরং শান্তি- সমৃদ্ধির প্রয়োজন বড়ো হয়ে দেখা দিল। তৈরি হলো পৃথিবীর সকল দেশ মিলে সম্মিলিত শক্তির কেন্দ্র জাতিসংঘ। একই মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে তৈরি হলো ওআইসি, ন্যাটো, সার্কসহ আরও অনেক সংগঠন ও সংস্থা। একতা শুধু রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে নয়, বরং পারিবারিকভাবে প্রয়োজন, সামাজিকভাবে প্রয়োজন। অথচ আজ মানুষ নানা মতে এত বিভক্ত যে, ঐক্যবদ্ধ শক্তি সহসা খুঁজে পাওয়া যায় না। ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ, পিতা-পুত্রের বিবাদ, একে অপরের সঙ্গে, এক দেশ আরেক দেশের সঙ্গে নানা দ্বন্দ্ব- সংঘাতে মানুষের ঐক্যের মূলে আঘাত হেনেছে। ধর্মে-বর্ণে নানা সাম্প্রদায়িকতায় তাই অশান্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ব। কিন্তু প্রতিটি মানুষের মধ্যেই তো লুকিয়ে থাকে অপরিসীম শক্তির আধার। মানুষের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর প্রভৃত উন্নয়ন সম্ভব। একতার অপরিসীম ম শক্তি অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করে। এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে। বাঙালির ঐক্যবদ্ধ শক্তিই পেরেছিল দীর্ঘ নয় মাসে পাকিস্তানি শক্তিধর সশস্ত্র বাহিনীর বিপুল সৈন্যকে পরাজিত করতে। তাই তো জাতির দুর্দিনে আমাদের প্রেরণার জন্য, শান্তির জন্য এবং ঐক্যবদ্ধ শক্তির জন্য বারবার ফিরে যেতে হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কাছে। ঐক্যবদ্ধ শক্তিই দিতে পারে সমাধান।
আজকের পৃথিবীতে একতার বড়ো প্রয়োজন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল মানুষকে একই প্লাটফরমে দাঁড়াতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url