বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর ভাবসম্প্রসারণ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। বাংলা পরীক্ষার ক্ষেত্রে কমবেশি সকল শিক্ষার্থীদের
কেই বিভিন্ন প্রকারের ভাব সম্প্রসারণ পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি বিশ্বে যা
কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর ভাব সম্প্রসারণটি খুঁজে থাকে তাহলে একদম সঠিক
জায়গায় চলে এসেছেন। কেননা আমরা আপনাদের জন্য এই ভাব সম্প্রসারণ তুলে ধরেছি।
আশা করি ভাব সম্প্রসারণ টি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ভাব
সম্প্রসারণ টি করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে
সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে নিচে উল্লেখিত ভাব
সম্প্রসারণটি পড়ে নেওয়া যাক।
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী
অর্ধেক তার নর।
মূলভাবঃ মানবসভ্যতার ইতিহাস বলে,
আদিকাল থেকে আজকের যে সভ্যতা তাতে নারী-পুরুষের সমান অবদান রয়েছে। নারী-পুরুষের
সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টায় সভ্যতা সূচিত হয়েছে। সভ্যতা বিনির্মাণে কারো অবদানই কম
নয়।
সম্প্রসারিত ভাবঃ নারী এবং
পুরুষের সম্মিলিত প্রচেস্টায় সৃষ্টি হয়েছে সমাজব্যবস্থা। সুতরাং সমাজে নারী এবং
পুরুষের অবদান সমভাবে বিদ্যমান। এ পৃথিবীতে নর এবং নারী একে অপরের পরিপূরক সভা।
আদম এবং হাওয়ার অবদানেই এ জগতে মানুষের আবাদ হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে নারীরাও
পুরুষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। নারীরা পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজের
বিভিন্ন অঙ্গনে তাদের উপর আরোপিত দায়িত্ব পালন করছেন। তাই নারীদের কর্মস্থল শুধু
রান্নাঘরে সীমাবদ্ধ নয় বরং পরিব্যাপ্ত সমাজের সকল অঙ্গনে। কথায় আছে "যে শকটের এক
চক্র বড় এবং এক চক্র ছোট হয় সে শকট অধিক দূর অগ্রসর হতে পারে না; সে কেবল একই
স্থানে ঘুরতে থাকবে।" অর্থাৎ, যেখানে পুরুষ জাতিকে প্রাধান্য এবং নারীজাতিকে
অবহেলা করা হবে সেখানে জাতির কোনো উন্নতি বা পরিবর্তন হবে না। তাইতো কবি বলেছেন,
"কোন কালে একা হয়নি কো জয়ী
পুরুষের তরবারি
শক্তি দিয়েছে প্রেরণা দিয়েছে
বিজয় লক্ষ্মী নারী।"
ইসলাম ধর্ম সমাজে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এবং শিক্ষার অধিকারসহ সকল অধিকার
দান করেছে- "প্রত্যেক নর-নারীর বিদ্যা অর্জন করা ফরজ।" অন্ধকার যুগে নারীদের কোনো
মর্যাদা দেওয়া হতো না। সে যুগে নারীরা দাসী ছিল এবং ন্যায্য অধিকার হতে তাদের
বঞ্চিত করে রাখত, যা সময়ের বিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয়। এখন সারাবিশ্বে
পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও কঠিন কর্তব্য পালন করতে হয়। সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষতার
ছাপ রাখছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মায়ের কাছে সন্তান যে শিক্ষা লাভ করে তাই
পরবর্তী জীবনে তার চরিত্র গঠনে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। সেজন্য মায়ের নিকট
হতে শেখা উপযুক্ত শিক্ষার গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। এছাড়া সংসারে সুখ-সমৃদ্ধি ও
উন্নতির ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকার কোনো বিকল্প নেই। কথায় আছে, "সংসার সুখের হয়
রমণীর গুণে।"
মন্তব্যঃ নারী ও পুরুষের
সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টায় সৃষ্ট এ সমাজের উন্নতি এবং প্রগতির জন্য নারীরা সমান
অংশীদার। তাই যাবতীয় উন্নয়নমূলক কার্যে নারীদের সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
একই ভাবসম্প্রসারণের ভিন্ন প্রতিলিপন
মূলভাবঃ নারী-পুরুষের সম্মিলিত
প্রয়াসে মানবসভ্যতার উদ্ভব ও উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে। নারী ও পুরুষ মিলেই গড়ে তুলেছে
আধুনিক পৃথিবী। তাই কাউকে অবহেলা করে কার্যকর কল্যাণ সম্ভব নয়।
সম্প্রসারিত ভাবঃ মানবসভ্যতার
উন্নতির মূলে রয়েছে নারী ও পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। পৃথিবীতে নর ও নারী একে
অপরের পরিপূরক। সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই কন্যা-জায়া-জননীরূপে নারী সর্বদা নরের পাশে
থেকে প্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে। নারী তার স্বভাবসুলভ স্নেহ-মায়া, সেবা ও যত্ন দিয়ে
পুরুষের হৃদয়কে সর্বদা পরম প্রশান্তিতে ভরিয়ে দিয়েছে। নারী যদি নরের পাশে না থাকত
তাহলে নর কোনোদিনই ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখত না, সমাজ গড়ে উঠত না এবং সভ্যতাও বিকাশ
লাভ করত না। নর যদি মানবসভ্যতার দেহ হয়, তবে নারী তার প্রাণ। উভয়ের সম্মিলিত
প্রচেষ্টায় পর্যায়ক্রমে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে সভ্যতা। প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ
হোক, বিশ্বের যেখানে যত মহৎকর্ম সম্পাদিত হয়েছে তার পেছনে পুরুষের ন্যায় নারীরও
অবদান রয়েছে। মানবসভ্যতা গড়ার পেছনে নারীর অবদান পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
তাই নারীর মর্যাদাও পুরুষের সমপর্যায়ের। কাউকে বাদ দিয়ে কেউ এককভাবে কৃতিত্বের
দাবিদার হতে পারে না। উভয়ের দানে পরিপুষ্ট আমাদের সভ্যতা, জ্ঞান, বিজ্ঞান, দর্শন-
গোটা পৃথিবী।
মন্তব্যঃ পৃথিবীর পথ-যাত্রায়
নারী ও পুরুষ পরস্পরের সঙ্গী হয়ে একসঙ্গে এগিয়ে চলেছে। উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়
উৎকর্ষ প্রাপ্ত হয়েছে মানুষের জীবন ও সভ্যতা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url