লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ। আপনি কি লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। কারণ এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য আমরা লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণটি তুলে ধরেছি।
লোভে পাপ পাপে মৃত্যু ভাবসম্প্রসারণ
আমরা ছোটবেলা থেকে কমবেশি এই প্রবাদটি শুনে এসেছি এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ গুলোর মধ্যে এটি একটি। আপনি যদি ভাব সম্প্রসারণটি করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু

মূলভাবঃ লোভ জাগতিক সকল পাপের উৎস। লোভ মানুষের মনুষ্যত্বকে ধ্বংস করে যাবতীয় অপকর্মে লিপ্ত করে। আর এর পরিলতি হা অত্যন্ত ভয়াবহ।
সম্প্রসারিত ভাবঃ মানব চরিত্রের প্রবৃত্তিগুলোর মধ্যে লোভ অত্যন্ত মারাত্মক। লোভের বশবর্তী হয়ে মানুষ নানাবিধ কুকর্মে লিপ্ত হয়। ফলে মানুষ সহজেই তার মনুষ্যত্বকে হারিয়ে ফেলে। মনুষ্যত্বহীন ব্যক্তি পশুর সমান। সুতরাং লোভী মানুষেরা যেকোনো সময় যেকোনো ধরনের কাজে তাদের বিবেক-বুদ্ধি, বিচার-বিবেচনার কোনো প্রয়োজন বোধ করে না। তাদের এরূপ পশুসুলভ আচরণে সহজেই পাওয়া যায় স্বার্থপরতা আর সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতা। আর সীমাহীন ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি ক্ষণেই এদের লোভ-লালসাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সমাজের কল্যাণে এ ধরনের মানুষের তীব্র অনাসক্তি, অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। এরা দিবারাত্রি শুধু অপেক্ষায় থাকে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রচণ্ড বাসনাকে সম্বল করে। ফলে কোনো সমাজে এদের প্রাধান্য বেড়ে গেলে অশান্তি, অবিচারসহ নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সুদূর অতীত থেকেই লোভের পরিণাম সম্বন্ধে নানা কথা জানা যায়। এ নিয়ে রচিত হয় নানা লোকশ্রুতি, লোককাহিনি। ইতিহাসে এরূপ ঘটনার নানা নজির আজও মানুষকে শিউরে তোলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কিংবদন্তি নায়ক হিটলার; যিনি ইহুদিদের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে একক আধিপত্য বিস্তারের প্রচণ্ড লোভে পৃথিবী কাঁপিয়ে দেন; কিন্তু তার শেষ পরিণতি করুণ মৃত্যু। ১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধে সেনাপতি মীরজাফর আলী খানের সীমাহীন মসনদের লোভ যেমন এদেশের দুই 'শ' বছরের গোলামির শিকল পরিয়ে দেয় তেমনই বিশ্ব ইতিহাসে তার পরিচয় হয় বিশ্বাসঘাতক বলে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও কতিপয় লোভী যাদের পরিচয় 'রাজাকার' বলে, তাদেরও লোভের শেষ পরিণতি ফাঁসির মঞ্চ। এছাড়াও পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে লোভের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। সম্পত্তির লোভে পিতা পুত্রকে, পুত্র পিতাকে, ভাই ভাইকে, বোন ভাইকে, ভাই বোনকে খুন করে। লোভের এই ভয়াবহ পরিণতিতে একজন তারই প্রিয়জনকে খুন করছে। আর অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড অনিবার্য। এ ধরনের অসংখ্য দৃষ্টান্ত আজকের সমাজে দুর্লভ নয়। সুতরাং লোভই আজ বিশ্বশান্তির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সীমাহীন লোভই জন্ম দিচ্ছে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্রের মারাত্মক ব্যবধান। এজন্যই প্রতিটি ধর্মেই লোভকে পরিহার করার জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। একজন নির্লোভ ব্যক্তিই পারে মনুষ্যত্বের সমস্ত গুণাবলি অর্জন করতে।
মন্তব্যঃ লোভ-লালসাই সমস্ত পাপকাজের জননী এবং পাপের পরিণতি সকল ক্ষেত্রেই ভয়াবহ। সুতরাং লোভ পরিহার করে পাপ থেকে বিরত থাকাই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url