ভাবসম্প্রসারণঃ গতিই জীবন স্থিতিতে মৃত্যু
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমাদেরকে নানান
ভাবসম্প্রসারণ পড়ার প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি গতিই জীবন স্থিতিতে মৃত্যু
ভাবসম্প্রসারণটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন, কেননা আমরা
আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য এই ভাবসম্প্রসারণটি তুলে ধরেছি।
অন্যান্য যে সকল গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ রয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। প্রিয়
পাঠক আপনি যদি ভাব সম্প্রসারণটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে আর বৃথা সময়
নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।
গতিই জীবন, স্থিতিতে মৃত্যু।
ভাবসম্প্রসারণঃ জীবনের ধর্মই
গতিশীলতা, লক্ষ্যপথে এগিয়ে যাওয়া। মানুষকে তার কর্মের মধ্য দিয়ে গতিচঞ্চল জীবনের
অধিকারী হয়ে জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে হয়। বস্তুত প্রবহমানতাই জীবনকে প্রাণবন্ত করে
তোলে আর স্থবিরতা আত্মার মৃত্যু ঘটায়।
এ বিশ্বজগৎ নিরন্তর গতিশীল। মহাকালের গতি যেদিন থেমে যাবে, সেদিন মহাপ্রলয় ঘটবে।
জগতের জীব হিসেবে অনন্ত যাত্রাপথে আমাদের জীবনও তাই অতীব গতিময়। আর গতিশীলতার
মধ্যেই ফুটে ওঠে জীবনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। জন্মোত্তর-মৃত্যু অবধি প্রতিটি মানুষকে
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যপথে এগিয়ে যেতে হয়। এক নিরবচ্ছিন্ন গতিশীলতার মধ্য দিয়েই
মানবজীবনের বিকাশ সাধিত হয় এবং জীবনের সাফল্যগাথা রচিত হয়। সেজন্য
প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর জীবনসংসারে টিকে থাকতে হলে ও আত্মপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে জয়ী হতে
হলে গতিই মানুষের একমাত্র অবলম্বন। বিশেষ করে আধুনিককালের মানুষ যন্ত্রের গতিকে
সঙ্গী করে চলে। তাই আজকের দিনে গতিই জীবন, গতিই বেঁচে থাকা। যে গতিহীন,
স্থবিরতাগ্রস্ত, সে জীবন-যুদ্ধে সকলের পশ্চাতে পড়ে থাকে। সবার অলক্ষে, সবার
অগোচরে সে অপাঙ্ক্তেয় জীবনের গ্লানি বহন করে। তখন তার জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে কোনো
পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না। বিশেষত, কুঁড়ে ও গোঁড়া ব্যক্তিরা সমাজে জীবনৃত
অবস্থায় পড়ে থাকে। কেননা তাদের আত্মার মৃত্যু অনেক আগেই ঘটে গেছে। অন্যদিকে,
স্রোতম্বিনী নদীর জল বরাবরই নির্মল থাকে। কারণ সেখানে শেওলা জমতে পারে না। তেমনই
কর্মময় জীবনই প্রকৃত জীবন; কর্মহীন জীবন মৃত্যুরই নামান্তর। পৃথিবীটা বিরাট এক
রণক্ষেত্র। এখানে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয়।
বিজ্ঞানী ডারউইন বলেছেন, 'প্রকৃতির রাজ্যে যে অধিকতর যোগ্য সেই টিকে থাকবে।' অতএব
গতিশীল প্রকৃতির নিত্য পরিবর্তনশীল জগতে টিকে থাকতে হলে দৃষ্টি সম্মুখে রেখে
অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। বস্তুত চিন্তাচেতনায় যারা প্রাগ্রসর তারাই
প্রগতির পথে এগিয়ে যায়। তারাই সমাজে বিবর্তন আনে, সৃষ্টি করে নতুন সভ্যতা। তাই
গতিহীন জীবন কারও কাম্য হতে পারে না।
মানব কল্যাণে কর্মের মহোৎসবে যোগদান করা মানুষের অনবদ্য কর্তব্য। আর তার মাঝেই
গতিময় জীবনের লক্ষণ বিরাজিত। মূলত কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনে যে গতি আসে, সে
গতিই জীবনের ধর্ম। অলস কিংবা অকর্মণ্য জীবনযাপন মৃত্যুরই নামান্তর। তাই জীবনকে
কর্মচঞ্চল ও প্রবহমান রাখতে আমাদের সর্বদা সচেষ্ট থাকা উচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url