জাদুঘর অনুচ্ছেদ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি জাদুঘর অনুচ্ছেদটি খুঁজছেন? যদি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কারণ আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য জাদুঘর অনুচ্ছেদটি তুলে ধরেছি।
জাদুঘর অনুচ্ছেদ
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ গুলোর মধ্যে এটিও একটি। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। যদি আপনি অনুচ্ছেদটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন শুরু করা যাক।

জাদুঘর

যে স্থানে ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, প্রাকৃতিক ইতিহাস, ভাষা-সাহিত্য, শিল্পকলা ইত্যাদির নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার জন্য সুবিন্যস্তভাবে রাখা হয়, সেটিকেই জাদুঘর বলে। বিশ্বের প্রতি জাতি- রাষ্ট্রেরই জাদুঘর রয়েছে। বিশ্বের প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয় খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে আলেকজান্দ্রিয়ায়। সেখানকার গ্রেকো-রোমান মিউজিয়ামে ও কায়রো মিউজিয়ামে মিশরের পুরনো ইতিহাস ধরে রাখা হয়েছে। ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এবং টাওয়ার অব লন্ডনে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অনেকখানি ধরা আছে। আমাদের দেশেরও বিভিন্ন জাদুঘরে এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন নামে জাদুঘর স্থাপিত হয়েছে। এ দেশের জাদুঘরগুলোর মধ্যে জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, বিজ্ঞান জাদুঘর, সামরিক জাদুঘর, বরেন্দ্র জাদুঘর, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯১০ সালে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত হয় 'বরেন্দ্র জাদুঘর।' বাংলার প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস, শিল্পকলা ও প্রত্নতত্ত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে গবেষণায় এগুলো আকর-উপাদান হিসেবে গণ্য। এখানে ভাস্কর্য, খোদিত লিপি, পান্ডুলিপি ও প্রাচীন মুদ্রার মূল্যবান সংগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। প্রাচীন যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক যুগনিদর্শন সযত্নে ধারণ করে আছে জাদুঘর। ১৯১৩ সালের ২০ মার্চ 'ঢাকা জাদুঘর' নামে এটির যাত্রা শুরু। ১৯৮৩ সালে এটি জাতীয় জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটির ডান দিকে রয়েছে জাদুঘরের অফিস এবং বাম দিকে অডিটোরিয়াম। বাংলাদেশের বিশাল আকৃতির একটি মানচিত্র রাখা আছে দোতলায়। এ ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র। এসব মানচিত্র থেকে এক নজরে বাংলাদেশের কোথায় কী আছে তা বুঝে নেওয়া যায়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর। এই জাদুঘরে নানা রকমের অস্ত্রশস্ত্র, অলংকার, বাদ্যযন্ত্র, নকশিকাঁথা, পোশাক-পরিচ্ছদ, পুতুল, চীনামাটির নানা শিল্পকর্ম, ভাষা আন্দোলন-মুক্তিযুদ্ধের নানা নিদর্শনসহ বিশ্বখ্যাত মনীষীদের প্রতিকৃতি এখানে রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম জাদুঘর হলো 'মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।' মুক্তিযুদ্ধের নিদর্শন ও স্মারক সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য এই জাদুঘর বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্লভ ছবি, তাঁর জীবনের শেষ সময়ের কিছু স্মৃতিচিহ্ন এবং তাঁর ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শনমূলক জাদুঘরটি হলো 'বঙ্গবন্ধু জাদুঘর'। এটি ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বর রোডের আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। বিজ্ঞান নির্ভর 'বিজ্ঞান জাদুঘর' ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাদুঘর হচ্ছে সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান, যেখানে মানবসভ্যতা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ সংগ্রহ করে রাখা হয়। জাদুঘর কেবল বর্তমান প্রজন্মের কাছে নিদর্শনগুলো প্রদর্শন করে না, ভবিষাৎ প্রজন্মের জন্যও সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখা হয়। জ্ঞান ও তথ্যের সঙ্গে জনগণকে আকৃষ্ট ও সম্পৃক্ত করতে জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url