বিজ্ঞাপনের মাধ্যম গুলি কি কি জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি কি জানেন বিজ্ঞাপনের বিচিত্র মাধ্যমগুলি সম্পর্কে। যদি না জেনে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটি তা আপনাদের জন্য বিজ্ঞাপনের মাধ্যমগুলি সম্বন্ধে আলোচনা করেছি।
বিজ্ঞাপনের-মাধ্যম-গুলি-কি-কি
আর্টিকেলটি তো আপনারা বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব এছাড়াও বিজ্ঞাপনের মাধ্যম গুলি কি কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যম সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

সূচিপত্রঃ বিজ্ঞাপনের মাধ্যম গুলি কি কি

ভূমিকা

আধুনিক যুগ প্রচারের যুগ, বিজ্ঞাপনের যুগ। এ যুগে ব্যাবসায়িক স্বার্থে প্রচারের মাধ্যমে পণ্যসামগ্রীকে ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের নজরে আনার জন্যে বিজ্ঞাপন এক অপরিহার্য মাধ্যম। বিশ্বায়নের এ যুগে প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় বিজ্ঞাপন এক নতুন শিল্প- তাতে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি এক সূত্রে গাঁথা। পরিভোগপ্রবণ দুনিয়ায় আধুনিক জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞাপন এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব আলোচনা কর

ব্যবসা-বাণিজ্যে বিজ্ঞাপন পণ্যসামগ্রীর গুণাগুণ, তুলনামূলক উঁচু মান, স্থায়িত্ব, ব্যবহার-পদ্ধতি প্রভৃতির প্রচারের উপায়। পণ্যের প্রচার বাড়লে চাহিদাও বাড়ে। এতে উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়। তাতে ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারীর যেমন লাভ হয় তেমনই ক্রেতারও সুবিধা হয়।

উৎপাদন বেশি হলে উৎপাদন খরচ কম পড়ে বলে উৎপানকারী ক্রেতাকে বিশেষ ছাড় দিতে পারে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অপ্রচলিত পণ্য ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি হয়, ভোক্তাদের রুচি গড়ে ওঠে। রুচির পরিবর্তন সাধনেও বিজ্ঞাপন ভূমিকা রাখে। একই ধরনের নানা পণ্যের মধ্যে রুচি, গুণ ইত্যাদি বিচার করে ইচ্ছেমতো পণ্য নির্বাচন করায় বিজ্ঞাপন কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

বাজারে নতুন কোনো পণ্যের প্রচলন হলে সে সম্পর্কেও ক্রেতা জানতে পারে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আর্থিক দিক ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের দিকটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সংবাদপত্র, রেডিয়ো, টেলিভিশন ইত্যাদি গণমাধ্যমের বিপুল আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোর আয়ের উৎসও বিজ্ঞাপন।

বিজ্ঞাপন অগণিত লোকের জীবিকারও উপায়। বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও বিভাগে চাকরি করেন অনেকে। এছাড়াও ব্যানার, ফেস্টুন, সাইনবোর্ড, হোল্ডিং তৈরি করা ও লেখা, পোস্টার লাগানো, বেতার ও টেলিভিশনের জন্যে বিজ্ঞাপন তৈরির মাধ্যমে বহু লোক জীবিকানির্বাহ করেন।

বিজ্ঞাপনের মাধ্যম গুলি কি কি

সেকালে হাটে-বাজারে বা জনসমাবেশের জায়গায় গলা ফুঁকে কিংবা ঢোঙা ফুঁকে কিংবা গান গেয়ে ঢোল বাজিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো। এখন তার জায়গা দখল করেছে মাইক্রোফোন ও ক্যাসেট। সরস কিংবা সুরেলা বাকভঙ্গি, নাটকীয় উপস্থাপন এ ধরনের বিজ্ঞাপনের আকর্ষণীয় দিক।

মূলত অক্ষরজ্ঞানহীন লোকের কাছে শ্রুতিগ্রাহ্য বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্যে জনসমাবেশে কিংবা বেতারে-টেলিভিশনে এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। বিজ্ঞাপন প্রচারের আরও অজস্র উপায় এখন সর্বত্র চোখে পড়ে।

রাজপথের দুপাশে যেসব সুদৃশ্য ব্যানার, ফেস্টুন, সাইনবোর্ড বা ফলক দেখা যায় তার প্রায় সবই আসলে বিজ্ঞাপন। পথ চলার সময়ে অনেকে হাতে গছিয়ে দেয় হ্যান্ডবিল- তাও আসলে বিজ্ঞাপন প্রচারপত্র। আজকাল রিকশার পেছনে, যানবাহনের গায়ে, গাছের কাণ্ডে, দোকানের শো-কেসে কোনো-না-কোনো বিজ্ঞাপন চোখে পড়বেই।

কোথাও হয়তো চোখে পড়ল রঙিন ঘূর্ণায়মান ছাতা সেও বিজ্ঞাপনের জন্যেই এমনকি টিভির অনুষ্ঠান বা খেলাধুলায় অর্থ জুগিয়ে পণ্যের প্রচার করা হয়। এছাড়া বিজ্ঞাপনের সবচেয়ে বড়ো মাধ্যম সংবাদপত্র-সাময়িকী এবং বেতার-টেলিভিশন তো আছেই। পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপনের ধরন যেমন বিচিত্র তেমনই উপযোগিতাও বেশি।

কর্মখালি, বিয়ে, খেলাধুলা, সিনেমা, পত্র, থিয়েটার, মেলা, উৎসব, লটারি, জন্মদিন, প্রতিযোগিতা কত ধরনের না বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে দৈনিক পত্রিকার পাতায়। টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে তো বটেই, ধারাবাহিক নাটিকা প্রচারিত হচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতাদের সৌজন্যে। বিজ্ঞাপনের মাধ্যম এখন আরও বিস্তৃত।

সিনেমার পর্দা, থিয়েটার হলের স্কিন, খেলার মাঠ, উৎসব-অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল, প্রবেশ পথের তোরণ- সবই একে একে চলে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতাদের দখলে। এমনকি শহর-গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনের আড়ালে। বিজ্ঞাপন প্রচারের নতুন কৌশল হিসেবে বিজ্ঞাপনদাতারা বিভিন্ন স্তরের লোকের মধ্যে বিনামূল্যে নমুনা বা স্যাম্পল বিতরণ শুরু করেছেন।

বিজ্ঞাপনে অসাধুতা

এক শ্রেণির অসাধু লোক হীন স্বার্থে বিজ্ঞাপনকে ব্যবহার করছে। তাদের প্রতারণায় পড়ে অনেক ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। চটকদার বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে তারা সহজ-সরল সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। তাছাড়া স্কুল ও রুচিবিগর্হিত বিজ্ঞাপন দিয়ে অপরিণতবুদ্ধি ক্রেতাদের মন ভোলাবার প্রবণতাও আজকাল বাড়ছে। বর্তমানে উৎকৃষ্ট যৌন-আবেদনপূর্ণ বিজ্ঞাপনের প্রচার এতই বেড়ে চলেছে যে তা পুরোপুরি নোংরামির পর্যায়ে পড়ে। এগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

উপসংহার

পণ্যসামগ্রীর প্রচার ও প্রসারে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বিজ্ঞাপনের ভূমিকা বিরাট ও ব্যাপক। তাই বিজ্ঞাপন হতে হবে তথ্যনিষ্ঠ, নান্দনিক ও রুচিশীল। বিজ্ঞাপনের পাঠক, শ্রোতা ও দর্শক যেখানে পরিবারের সবাই সেক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন কোনোভাবেই স্কুল ও রুচিবিগর্হিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনদাতাদের সামাজিক দায়দায়িত্ব মান্য করা অপরিহার্য।

বিজ্ঞাপনের ভাষা হবে শুদ্ধ, বানান হবে নির্ভুল, বক্তব্য হবে রুচিশীল, ছবি হবে শোভন। দর্শকদের উচিত এ ধরনের বিজ্ঞাপনকে উৎসাহিত করা। পক্ষান্তরে স্কুল-রুচি ও উৎকট যৌন-আবেদনপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভালো পদক্ষেপ হবে ঐ জাতীয় বিজ্ঞাপনের পণ্য বর্জন করা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url