অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনাটি খুঁজে
থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের
জন্য অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনাটি তুলে ধরেছি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন রচনা
গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
আশাকরি রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক
হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।চলুন
তাহলে সময় নষ্ট না করে অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনাটি পড়ে নেওয়া যাক।
অদম্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ রচনার পয়েন্ট সমূহঃ
ভূমিকা
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে
আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশ।
নানা রকম চড়াই-উতরাই ও বিভিন্ন সরকারের পালাবদলে দেশ খুব বেশি না এগোলেও বর্তমানে
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে চলেছে।
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
বাংলাদেশের অবস্থার পরিবর্তন আনতে আলো প্রথমেই জোর দিতে হবে সর্বক্ষেত্রে আধুনিক
প্রযুক্তিকে ব্যবহার ক্ষেত্রে। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি,
করারায় খাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবসউটার
নেটওয়ার্ক ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। আর এসব প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত
করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। অর্থাৎ সারা দেশকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও সিসি
ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হলেই দিন বদলের পালায় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি
ত্বরান্বিত হবে।
বৈজ্ঞানিক শিক্ষাব্যবস্থা
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার উন্নতি ছাড়া জাতির উন্নতি আশা করা যায় না। যুগে
যুগে বহু মনীষী ও রাষ্ট্রনায়ক শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কিন্তু
দীর্ঘদিন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা মান্ধাতা-আমলের পদ্ধতিতে চলছিল বলে
শিক্ষাক্ষেত্রে উৎকর্ষ সাধিত হয়নি। সাম্প্রতিককালে এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পথ
খুলে দিয়েছে সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি।
এ পদ্ধতির সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষকের বক্তব্য বা লেকচার ভিডিও
করে ল্যাপটপের মাধমে দেয়ালের সাদা পর্দায় প্রদর্শন করা হচ্ছে, এতে সহজে
শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করা যাচ্ছে। পাঠ্যবইকে ওয়েবসাইটে ঢুকিয়ে দেওয়া
হয়েছে, এতে নিজস্ব বই না থাকলেও ল্যাপটপের মাধ্যমে তা পড়ে নেওয়া যাচ্ছে। এভাবে
বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা
হয়েছে।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল জনবহুল দেশ। 'এখানে কর্মসংস্থানের চেয়ে জনসংখ্যা অনেক
বেশি। জনসংখ্যার তুলনায় কর্মক্ষেত্র না থাকায় দিন দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।
কাজের সন্ধানে ঘুরছে অনেক শিক্ষিত বেকার। তাই দিন বদলের পালায় বাংলাদেশের অগ্রগতি
ও স্বনির্ভরতার জন্য জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনটি
বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে-
- কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।
- আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহ ও সহায়তা দান।
- উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে বেকারদের বিভিন্ন দেশে পাঠানো।
ডিজিটালাইজেশন
বর্তমান বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, নিরাপত্তা, যোগাযোগ,
ব্যাংকিং সব ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনরুজ্জীবন
প্রাচীনকাল থেকে বাংলাদেশের কুটির শিল্পে তৈরি পণ্যদ্রব্যের খ্যাতি ছিল
বিশ্বজোড়া। বর্তমানেও আন্তর্জাতিক বাজারে এর বিপুল চাহিদা রয়েছে। কিন্তু নানা
কারণে এ দেশের কুটির শিল্পের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। প্রবাসী দেংেলাদেশিরা
অনেকেই এ খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কাজেই দিনবদলের পালায় কুটির শিল্পের
পুনরুজ্জীবন ও মানোন্নয়নের জন্য সরকারি উদ্যোগ জোরদার করা হয়েছে। কুটির শিল্পের
উন্নয়ন ঘটলে এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যেতে পারে।
কারিগরি শিক্ষার প্রসার
দিনবদলের পালায় কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ দেশের
যুবসমাজ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত হলে নিজেরাই কর্মসংস্থান তৈরি করে
নিতে পারবে।
কৃষির উন্নতি
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। এ দেশের সিংহভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এ
দেশের কৃষকরা প্রায় সবাই নিরক্ষর। ফলে তারা কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক বৈজ্ঞানিক
পদ্ধতিকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারছে না, আর তাই বাড়ছে না উৎপাদন। মানুষ কাজ করে
খাদ্য সংস্থানের জন্য। তাই দিনবদলের প্রধান লক্ষ্য হতে হবে খাদ্যে স্বনির্ভরতা
অর্জন। এ ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিতে দিনবদলের পালায় সফলতার স্বার্থে সরকার প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি
যোগাযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা গতিশীল ও নিরাপদ না হলে দেশের
সার্বিক উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান মার্কাদ সড়ক
ও নৌপথ। উভয় ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনাজনিত সমস্যা অনেক মাদাম সড়ক পথে চলাচল যেমন নিরাপদ
নয়, নৌপথেও তাই।
বাংলাদেশের দিনবদলের পালায় এটি একটি প্রধান প্রতিবন্ধকতা। দেশের মানুষের চলাচল
নিরাপদ করে দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে হলে এ সমস্যার প্রতিকার প্রয়োজন।
এজন্য মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতুসহ যোগাযোগ বৃদ্ধিতে বিপুল
পরিমাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশে নবদিগন্তের সূচনা করেছে।
সাম্য-মৈত্রী ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশে নানা জাতি-ধর্মের লোকের বসবাস। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে
তারা পাশাপাশি অবস্থান করে। সকলেই বাঙালি এবং পরস্পর মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ।
সাম্যবোধ ও মৈত্রীর বন্ধন থাকলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ফাটল ধরার সম্ভাবনা
থাকে না। ফলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তিময় পরিবেশ। এই বোধ দিনবদলের পালায় বাংলাদেশকে
অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
গণতন্ত্রের সফল চর্চা
আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রপরিচালনার সবচেয়ে উন্নত। মাধ্যম গণতান্ত্রিক পদ্ধতি।
ইংল্যান্ড, জাপান প্রভৃতি দেশে রাজতন্ত্র থাকার পরও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই
রাষ্ট্র চলে। আমাদের দেশে গণতন্ত্র থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের সফল
চর্চা ছিল না যা বর্তমানে শুরু হয়েছে। দিনবদলের পালায় মানুষের মধ্যে যথার্থ বোধ
জাগিয়ে তুলতে পারলে বাংলাদেশের অগ্রগতি সাধিত হবে।
উপসংহার
স্বাধীনতার বহু বছর পরও বাংলাদেশ অর্থনীতি ও প্রযুক্তিগত উন্নতি না করতে পারায়
তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নতিতে যেভাবে বৃহৎ
কর্মযজ্ঞ পরিচালিত হচ্ছে তাতে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা লাভ
করেছে। বাংলাদেশের এই অদম্য অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে নিকট ভবিষ্যতে বাঙালি একটি
উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url