চরিত্র রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি চরিত্র রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম
সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য চরিত্র রচনাটি
তুলে ধরেছি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন রচনা গুলোর মধ্যে এটিও একটি।
আশাকরি রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক
হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।চলুন
তাহলে সময় নষ্ট না করে রচনাটি পড়ে নেওয়া যাক।
চরিত্র রচনাটির সংকেত সমূহঃ
সূচনা
চরিত্র মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। মানুষের চলাফেরায়, কথাবার্তায়, কাজে-কর্মে,
আচার-আচরণে ও চিন্তা-ভাবনায় যে মহন্ত ভাব পরিলক্ষিত হয় তাকে বলা হয় চরিত্র। অন্য
কথায় মানবজীবনের উন্নত আচরণের সমষ্টিকে চরিত্র বলা হয়। আর যিনি সত্য ও ন্যায়ের
পথে অটল থাকেন, অপরের কল্যাণ কম কথায় মানবজীবনের উন্নতে কলা হয় চরিত্রবান।
চরিত্রই মানুষের পরিচায়ক। সৌন্দর্য এবং সুরভির মধ্যে যেমন ফুলের সার্থকতা
লুক্কায়িত থাকে তেমনই উত্তম চরিত্রের মধ্যে মানবের প্রকৃত সার্থকতা। এ প্রসঙ্গে
বিখ্যাত ইংরেজ লেখক স্যামুয়েল স্মাইলস তার 'Character' নামক প্রবন্ধে যথার্থই
উল্লেখ করেছেন- 'The crown and glory of life is character.'
গুরুত্ব
চরিত্র, বিদ্যা, বুদ্ধি, ধনসম্পদ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। ক্ষমতা, ধনদৌলত ইত্যাদি দ্বারা
যেসমস্ত কাজ করা সম্ভব হয় না, চরিত্র গুণে সেগুলো অতি সহজেই সম্ভর। চরিত্রবলে
মানুষ দেবতুল্য হয়। চারিত্রিক সৌন্দর্য দিয়ে সকলের মন জয় করা যায়। চরিত্রবান
ব্যক্তি সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হয় না। চরিত্রবান লোকদের জন্য
সমাজে শান্তি বজায় থাকে।
যেসব মহাপুরুষ পৃথিবীর বুকে অক্ষয়কীর্তি রেখে গেছেন তারা সকলেই ছিলেন চরিত্রবান।
ইসলামের সর্বশেষ নবি হজরত মুহম্মদ (স.) চরিত্রগুণে আজও পৃথিবীতে অমর হয়ে আছেন।
চরিত্রবান ব্যক্তি ন্যায়, সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথ থেকে কোনোদিন বিচ্যুত হয়
না। তাই তারা মানব সমাজের জন্য প্রেরণার উৎস।
চরিত্র গঠনের উপায়
চরিত্র গঠনের প্রধান সহায়ক হলো উপযুক্ত পরিবেশ। শৈশবই হলো চরিত্র গঠনের উপযুক্ত
সময়। শিশু যদি তার জন্মের পর থেকেই পিতামাতা, ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজনদের চরিত্রবান
দেখে তাহলে শিশুরাও চরিত্রবান হয়ে গড়ে ওঠে। এছাড়া শিশুর পারিপার্শ্বিক পরিবেশও
তার চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখে। এ প্রসঙ্গে শেখ সাদি যথার্থ উল্লেখ করেছেন- 'সৎ
সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ'।
ছোটোবেলা থেকেই শিশুদের মহৎ লোকদের জীবনী পাঠ করতে হবে। তাহলে তারা বুঝতে পারবে
কীভাবে চরিত্রবান হওয়া যায়। তাদের মনেও সৎপথে চলার অনুপ্রেরণা জাগবে এবং ভালো
চরিত্রের অধিকারী হতে উৎসাহিত হবে। চরিত্রবান হতে হলে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধতার সঙ্গে
সাধনার প্রয়োজন। আমাদের পার্থিব চলার পথ মোহ ও প্রলোভনে আচ্ছন্ন। এসব প্রলোভনকে
এড়িয়ে সত্যকে আঁকড়ে ধরতে হবে।
চরিত্রহীনতার পরিণতি
চরিত্রহীন মানুষ পশুতুল্য। সে ঘৃণার পাত্র। চরিত্রহীন লোক আদর্শের পথ থেকে
বিচ্যুত হয়ে অন্যায়, মারামারি, কাটাকাটি ইত্যাদিতে লিপ্ত হয়। তারা দেশ ও জাতির
কলঙ্ক। তারা যতই সম্পদশালী ও ক্ষমতাবান হোক না কেন, তাদের কেউ শ্রদ্ধা করে না।
তারা আজীবন অভিশাপ এবং অপমান কুড়িয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। তাদের মৃত্যুতে জনগণ
স্বস্তি পায়। এমনকি তাদের মৃতদেহের ওপর ঘৃণার থু থু ফেলতেও জনগণ দ্বিধাবোধ করে
না।
উপসংহার
'তরুলতা সহজেই তরুলতা, পশুপাখি সহজেই পশুপাখি, কিন্তু প্রাণপণ চেষ্টায় তবে
মানুষ'। কাজেই প্রকৃত মানুষ হতে হলে চরিত্রবান হওয়ার একান্ত প্রয়োজন। চরিত্রবলে
মানুষ দুর্গমকে সুগম, অসাধ্যকে সাধন করতে পারে। চরিত্রবল মানুষকে সত্য, সুন্দর ও
ন্যায়ের পথে বিচরণ করতে সাহায্য করে। তাই হাদিসে বলা হয়েছে, 'সবচেয়ে পূর্ণ
ইমানদার সেই ব্যক্তি যার চরিত্র সবচেয়ে ভালো।'
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url