দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন বাংলা ২য়
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন
সম্পর্কে প্রতিবেদন খুঁজে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা
আর্টিকেলটিতে আপনাদের জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন তুলে ধরেছি।
আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি
প্রতিবেদনটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এ আর্টিকালিটি মনোযোগ সহকারে
সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণ এবং এর প্রতিকার সম্বন্ধে
একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন রচনা কর।
অথবা,
মনে কর, তোমার নাম বকুল। তুমি 'দৈনিক সমকাল' পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
অথবা,
'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন বিপন্ন' এই শিরোনামে পত্রিকায় প্রকাশের
জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
অথবা,
মনে কর, তুমি হীরক। দৈনিক সমকাল পত্রিকার একজন প্রতিনিধি। নিত্যপ্রয়োজনীয়
দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার সম্বন্ধে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি
প্রতিবেদন লেখ।
অথবা,
মনে কর, তুমি সাজিদ। দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার জেলা সংবাদদাতা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণ ও প্রতিকার সম্বন্ধে একটি
প্রতিবেদন তৈরি কর।
প্রতিবেদকের নাম : 'ক'
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি : ক্রেতারা অসহায়,
মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস
সরেজমিনে তদন্তের স্থান : 'ক', 'খ', 'গ' ও 'ঘ' বাজার
প্রতিবেদন তৈরির সময় : বিকাল ৪:৩০ মিনিট
তারিখ : ১৮ আগষ্ট ২০২৪
সংযুক্তিশ : ৪ কপি ছবি ('ক', 'খ', 'গ' ও 'ঘ' বাজারে মজুদ মালের চিত্র)
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি : ক্রেতারা অসহায়, মধ্যবিত্তের
নাভিশ্বাস
হঠাৎ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্তসহ স্বল্প
আয়ের মানুষ। একই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ-এর পরামর্শে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ও
পরিবহনের মতো সেবা সার্ভিসের মূল্য দফায় দফায় বেড়ে যাওয়ায় দেশের সাধারণ
ক্রেতা-ভোক্তা আরও বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে।
দারিদ্র্য সীমার নিচে অবস্থানরত মানুষের জন্য তা এক অভিশাপ হিসেবে বিবেচ্য। কারণ
দ্রব্যমূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের উপার্জন সে অনুপাতে বৃদ্ধি পায়নি। একদিকে
দারিদ্র্যের অভিশাপ অন্যদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তাদের জীবনকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনকালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সত্যতা যেমন
মিলেছে তেমনই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নানা কারণ জানা গেছে।
(ক) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির নানা চিত্র
- অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। স্থানীয় পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে চালের দাম বাড়ার পেছনে এক শ্রেণির চালের মিল মালিকদের অতি মুনাফা লাভের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন।
- শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়কেন্দ্র ঘুরে তথ্যানুসন্ধান করে দেখা গেছে, কোনো ব্যবসায়ী বাজারে পণ্যের অভাব আছে বলে জানায়নি। খুচরা বিক্রেতারা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সাফাই গেয়ে জানায় তারা পাইকারি থেকে উচ্চমূল্যে পণ্য ক্রয় করেছে। কম দাম দিয়ে বিক্রি করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। পাইকারি বাজারে ব্যবসায়ীদেরও ওই একই সুর। আসলে বাজারের পরিস্থিতি এরূপ দাঁড়িয়েছে যে, মজুতদারেরাই নিজেদের লাভের জন্য জিনিসপত্রের দাম চড়িয়ে দিয়েছে এবং তাদের দেখাদেখি সকল ব্যবসায়ী বেশি মুনাফার পথ বেছে নিয়েছে।
- মূল ঘটনা এই বাজারের ওপর কারও সঠিক নিয়ন্ত্রণ নেই বরং ব্যবসায়ীরা বাজেট, খরা, বন্যা, হরতাল, ধর্মঘট, পূজা- পার্বণ, ইদ-উৎসব, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্যের বৃদ্ধি প্রভৃতির অজুহাতে নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। দাম বাড়ানো এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
- আমাদের দেশের বহু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম অভাব সৃষ্টিতে তৎপর। তারা অনেক সময় বিপুল পণ্যদ্রব্য গুদামজাত করে রাখে। তারপর দেশে পণ্যের জন্য যখন হাহাকার শুরু হয়, তখন অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট গঠন করে মজুত পণ্য বাড়তি দামে বাজারে ছাড়ে। এতে ফটকাবাজদের মুনাফার অঙ্ক রাতারাতি ফুলে-ফেঁপে ওঠে আর তাতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠে।
- আন্তর্জাতিক বাজারে নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে একথা সত্য, কিন্তু এ অজুহাতে আমাদের দেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি করেছে, এটা দুঃখজনক। সরকার বর্তমানে পণ্যের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং করার জন্য টিসিবিকে দায়িত্ব দিয়েছে।
(খ) দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক
রাখা
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আমাদের সামাজিক, জাতীয় ও আর্থনীতিক জীবনে এক দুষ্ট রাহু। তাই
যথাশীঘ্র এই রাহুর গ্রাস থেকে মুক্তির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ
উদ্দেশ্যে-
- বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে পণ্যের যোগান নিশ্চিত করতে হবে।
- কৃষি উন্নয়ন ও কৃষি ফলন নিশ্চিত করতে হবে। আধুনিক চাষাবাদ ও অধিক উৎপাদনশীল ফসল ফলাতে হবে।
- কলকারখানার উৎপাদন নিয়মিত করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়ায় যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পণ্যের ঘাটতি দেখা দিলে সরকারি ভান্ডার থেকে পণ্যের যোগান দিয়ে বাজার দাম স্থিতিশীল রাখতে হবে।
- দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য মজুতদারি, সিন্ডিকেট ও কালোবাজারি দূর করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে হবে।
- দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর সব সময় সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে এবং কেউ যেন জোর পূর্বক নিজস্ব সিদ্ধান্ত দিয়ে দ্রব্যের মূল্যকে প্রভাবিত করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এ কার্যক্রম গ্রহণ করতে সরকারের একার পক্ষে এর সমাধান সম্ভব নয়। সরকারের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের নৈতিকতাবিরোধী কার্যক্রম পরিহারই এই সমস্যার আশু সমাধান দিতে পারে।
আশা করি সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এসব দিক বিবেচনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয়
পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url