ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে একদম সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন কেননা আমরা এই আর্টিকেলটিতে ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
ধূমপানের-কুফল-ও-প্রতিকার
প্রিয় পাঠক ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে উপকৃত হবেন। চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ ধূমপানের কুফল ও প্রতিকার

ভূমিকা

মাদকাসক্তি সমস্ত যুব-সমাজকে গ্রাস করছে। এই মাদকাসক্তির প্রথম স্তর ধূমপান। সামান্য এ নেশাকে সামাজিক অপরাধ হিসেবে না দেখলেও তা আসলে বিষপানের চেয়েও মারাত্মক। বিষপানে তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়, কিন্তু ধূমপানে ধুকে ধুকে মরে। তাই ধূমপান একটি জীবন্ত অভিশাপ। এ থেকে মুক্তি প্রয়োজন।

ধূমপানের উপকরণ

ধূমপানের মূল উপকরণ হলো তামাক ও গাঁজা পাতা। এ তামাক ও গাঁজা পাতা অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি উপাদান। তামাক ও গাঁজাপাতা অনেকগুলো একসঙ্গে জাগ দিয়ে রাখতে হয়। তারপর রোদে শুকিয়ে কুচি কুচি করে কেটে এর সঙ্গে তরল গুড় মিশিয়ে এক প্রকার মণ্ড তৈরি করতে হয়।

মণ্ড কঙ্কেতে পুরে তাতে আগুন দিয়ে সেই ধোঁয়া পান করা হয়। আবার কেউ কেউ তামাক পাতার গুঁড়ার সঙ্গে কয়েকটি উপাদান মিশিয়ে কাগজে মুড়িয়ে সিগারেট বা বিড়ি তৈরি করে। এ সিগারেট বা বিড়িতে আগুন লাগিয়ে তার ধোঁয়া পান করা হয়।

ধূমপান একটি মারাত্মক বদভ্যাস

ধূমপান ব্যক্তি, সমাজ ও জাতির জন্য এক জীবন্ত অভিশাপ। এ অভিশাপ একবার যাকে স্পর্শ করে তাকে বিনাশ করে ছাড়ে। এ অভিশাপ বিশেষ করে যুবসমাজকে গ্রাস করছে। সমাজের সকল স্তরের অসংখ্য মানুষ এ নেশায় আসক্ত।

একজন অসুস্থ মানুষ শরীর সুস্থ করে তুলতে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খায়। সুস্থ মানুষ শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার খায়, বিশুদ্ধ পানীয় পান করে, বিশ্রাম নেয়। কিন্তু ধূমপায়ী ব্যক্তিরা এ ব্যাধি পান করে, যা ধীরে ধীরে জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।

ধূমপানে শারীরিক ক্ষতি

ধূমপান অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ধূমপানে ব্যবহৃত তামাকে রয়েছে 'নিকোটিন' নামক একটি বিষাক্ত পদার্থ। এই নিকোটিন অত্যন্ত মারাত্মক বিষ, যা মানবদেহে অসংখ্য রোগের সৃষ্টি করে। ধূমপানের ফলে শরীর ক্ষয় হয়ে ধুঁকে ধুঁকে জীবনটা মৃত্যুর পথে ধাবিত হয়।

তাই বলা হয়, ধূমপানে বিষপান। বিষপানে যেমন মৃত্যু হয়, ধূমপানেও তেমনই মৃত্যু হয়। ধূমপান ধীরে ধীরে মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। ধূমপান আমাদের শরীরে হাঁপানি, যক্ষ্মা, কাশি, ফুসফুসের রোগ, ক্যানসারসহ আরও বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে।

ধূমপানে সামাজিক ক্ষতি

ধূমপান এতটাই ক্ষতিকর যে, ধূমপানে ধূমপায়ী ব্যক্তি ছাড়াও আশেপাশের ও সমাজের মানুষের মধ্যে বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। একজন ধূমপায়ী যখন ধূমপান করে তখন তার আশেপাশে যারা থাকে তাদের নাকে-মুখে ধোঁয়া প্রবেশ করে।

তখন ধূমপায়ী এবং ধোঁয়া ভোগকারী উভয়েই সমান ক্ষতির শিকার হয়। তাই ধূমপান একটি সামাজিক অপরাধও বটে। আর এ কারণেই ধূমপায়ীরা সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সামনে ধূমপান করতে লজ্জা পায়। তাছাড়া ধূমপানের ধোঁয়া পরিবেশ বিষাক্ত করে।

ধূমপান প্রতিরোধে করণীয়

ধূমপান নামক নেশায় একবার অভ্যস্ত হয়ে পড়লে তা বর্জন করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও এ বদঅভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আমাদের নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ধূমপান বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

বিশেষভাবে, ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। ধূমপান বিষয়ক যেকোনো প্রকার বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করতে হবে। ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তামাক উৎপাদন ও আমদানি বন্ধের ওপর জেল, জরিমানাসহ নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সামাজিকভাবে নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে 'Anti somking movement' অর্থাৎ ধূমপান বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ছোটোদের প্রতি বড়োদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে ছোটোরা ধূমপানে অভ্যস্ত না হতে পারে। সমাজের শিক্ষিত ও সচেতন ব্যক্তিবর্গকে ধূমপান বন্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

উপসংহার

ধূমপান এক সমাজ বিধ্বংসী নেশা। যা মানবদেহে নানা ধরনের ক্ষতি করে; পরিবেশ দূষিত করে। তাছাড়া এতে দৈনিক কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়, যা আমাদের দেশের মতো দরিদ্র দেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই ধূমপান প্রতিরোধ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url