বন্যা রচনা - বাংলাদেশের বন্যা রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি বন্যা রচনাটি খুঁজে থাকেন তাহলে একদম
সঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। কেননা আমরা এই আরটিকাটিতে আপনাদের জন্য বাংলাদেশের
বন্যা রচনাটি খুব সহজভাবে তুলে ধরেছি।
আশা করি রচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। প্রিয় পাঠক আপনি যদি বাংলাদেশের বন্যা
রচনাটি পড়তে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ
পর্যন্ত পড়ুন।চলুন তাহলে আর সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ বন্যা রচনা - বাংলাদেশের বন্যা রচনা
ভূমিকা
বাংলাদেশ একটি নিচু ভূমি। বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টি হয়। তাই আমাদের দেশে বন্যা
খুবই সাধারণ ব্যাপার এছাড়াও বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। এতে অনেক নদী আছে। সেও
বর্ষা এলাকায়। তাই দেশে প্রায় প্রতি বছরই বন্যা হয়। কখনও কখনও, এটি খুব গুরুতর
হয়ে ওঠে এবং আমাদের জন্য অনেক ক্ষতি করে।
বন্যার কারণ
বাংলাদেশে বন্যার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো অতিবৃষ্টি। কখনো কখনো হঠাৎ করে তুষার
গলে বা জোয়ারের ঢেউ বা ঘূর্ণিঝড় নদীগুলোকে উপচে পড়ে বন্যার সৃষ্টি করে।
বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি
বন্যা বাংলাদেশে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এতে আমাদের জীবন ও সম্পত্তির ব্যাপক
ক্ষতি হয়, ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়, গবাদি পশু ভেসে যায়, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং
গাছ উপড়ে পড়ে। মাঠ ও রাস্তা পানির নিচে চলে যায়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ
আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। তারা অনেক দিন না খেয়ে থাকে। বহির্বিশ্ব থেকে সমস্ত
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
প্রধান বন্যা
বাংলাদেশে ১৯৫৪ সাল থেকে বন্যা শুরু হয়। সে বছর রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ফসলি জমি
পানির নিচে চলে যায়। বেশ কয়েকটি স্থানে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ১৯৭৪, ১৯৮৪, ১৯৮৭, ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালেও ভয়াবহ বন্যা
দেশে পরিদর্শন করেছিল। তারা জীবন ও সম্পত্তি ধ্বংস করেছিল। এর মধ্যে ১৯৯৮ সালের
বন্যা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রায় পাঁচ মাস পানির নিচে
ছিল।
এটি শরৎ ঋতু শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এর আগে কখনো পানির স্তর এত বেশি বাড়েনি বা
এত দীর্ঘ ছিল না। পুরো দেশ পানিতে তলিয়ে গেছে। সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্দশার সীমা ছিল
না। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে গবাদি পশুর পাল। হাজার হাজার মানুষ
মারা যায়। এক কথায় ক্ষয়ক্ষতি এতটাই বড় ছিল যে ক্ষতি মেরামত করে স্বাভাবিক
অবস্থা ফিরিয়ে আনতে অনেক সময় লেগেছিল।
বন্যার প্রভাব
বন্যার পরবর্তী প্রভাব আরও মারাত্মক। বন্যার প্রেক্ষিতে দুর্ভিক্ষ আসে। মানুষ না
খেয়ে মরে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব সর্বত্র দেখা যায়। নিত্য প্রয়োজনীয়
জিনিসের দাম বেড়ে যায় এর ফলে খাবারের জন্য অনেক মানুষ মারা যায়। এছাড়াও অনেক
বিপজ্জনক রোগ যেমন কলেরা, টাইফয়েড এবং আমাশয়ের মতো রোগগুলি মহামারী আকারে
ছড়িয়ে পড়ে।
বন্যার গুণাবলী
বন্যা মানুষের একটু উপকার করে। বন্যার সময় আমাদের নদীগুলি প্রচুর পরিমাণে পলি
বহন করে। এটি আমাদের জমিকে সার দেয় যা জমিকে উর্বর করে তোলে ফলস্বরূপ অনেক ধরনের
ফসল জন্মায় বা প্রচুর পরিমাণে। বন্যা বর্জ্য, নোংরা ও নোংরা পদার্থ, আবর্জনা এবং
রোগের জীবাণু দূর করে। কিন্তু এর দোষগুণগুলো গুণকে ওজন করে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
বন্যা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। সমস্ত নদী পুনঃখনন করতে হবে এবং ভাল
নিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বৃষ্টির পানি সহজে যাওয়ার জন্য প্রচুর সংখ্যক
স্লুইক এবং আউটলেট তৈরি করা উচিত। নদীর তলদেশ ড্রেজিং করে, খাল খনন করে এবং বাঁধ
তৈরি করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
উপসংহার
বন্যার সময় এবং পরে ত্রাণ কাজ চলতে হবে। অন্যথায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ
বাড়বে। বন্যার সময় সরকার ও আরও কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বন্যা দুর্গতদের
সাহায্যে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। পরিশেষে বলাযায় বন্যা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক
দুর্যোগ। এটি ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করে। তাই আমাদের সরকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ
প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমরা এটার প্রশংসা করি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url