মাইকেল মধুসূদন দত্ত
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে একদম সঠিক যায়গায় চলে এসেছেন। আমরা এই আর্টিকেলটিতে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী সম্পর্কে সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
আশাকরি আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে। চলুন তাহলে আর বৃথা সময় নষ্ট না করে মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী অথবা কবি পরিচিতি সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে মধুসূদন দত্ত জন্মগ্রহণ করেন। কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী ছোট্টগ্রাম সাগরদাঁড়িতে প্রাথমিক লেখাপড়া শেষ করলে মধুসূদন দত্তকে পাঠানো হয় কলকাতাতে উচ্চশিক্ষা নেবার জন্য। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী রাজনারায়ণ দত্ত ও মাতা জমিদারকন্যা জাহ্নবী দেবী। কলকাতাতে পড়তে এসে মধুসূদন দত্ত পাশ্চাত্য উদার ধ্যানধারণার সাথে পরিচিত হন এবং তাঁর মনে কবি হবার ইচ্ছে জাগে। ইংরেজিতে কাব্যচর্চা করবেন বলে তিনি বাঙালির সবই বিসর্জন দেন। ভাষা ত্যাগ করেন; পোশাক পাল্টান; ফ্যাশনে ইংরেজ হতে চান এমনকি ধর্মও পরিবর্তন করে খ্রিস্ট ধর্ম নেন। তাঁর নাম হয় মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এতো কিছু বিসর্জন দিলেও ইংরেজ পরিমণ্ডলে তাঁর ঠাঁই হয়নি। তিনি ফিরে আসেন বাংলার রাজ্যে, বাংলার সংস্কৃতির আদরে। বাংলা যে সহনশীলা। মায়ের মতো - অবোধ সন্তান মধুসূদনকে বাংলা বুকে তুলে নেয়। এরপর মধুসূদন লিখতে থাকেন তাঁর নাটক; ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে লেখেন 'একেই কি বলে সভ্যতা' ও 'বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ' নামে দুটো প্রহসন; ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে লেখেন 'পদ্মবর্তী', নাটক; ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে বের হয় নাটক 'কৃষ্ণকুমারী'। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দেই লেখেন 'তিলোওমাসম্ভব কাব্য'; ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে রচনা করেন তাঁরই শুরু অমর কাব্য নয়, বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে চিরভাস্বর কাব্য 'মেঘনাদবধ কাব্য' নামের মহাকাব্য। এরপর বের হয় 'ব্রজঙ্গানা কাব্য' (১৮৬১), 'বীরাঙ্গনা কাব্য' (১৮৬২)। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে মধুসুদন দত্ত ফ্রান্সের ভার্সাই থাকাকালে লেখেন সনেট, যেগুলো, 'চতুর্দশপদী কবিতা' নামে প্রকাশ পায়। শেষজীবনে তিনি কলকাতায় ছিলেন এবং সেখানে ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে জুন মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যের সবক্ষেত্রে মধুসূদন বিদ্রোহ করেছেন। বিষয়ে এনেছেন নতুনত্ব, আঙ্গিকে এনেছেন অভিনবত্ব। তাই তাঁকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী লেখক হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url